বাংলাদেশি রোগীদের প্রথম দল গেল চীনে

| মঙ্গলবার , ১১ মার্চ, ২০২৫ at ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ

চীনে বাংলাদেশিদের চিকিৎসায় নতুন সূচনার অংশ হিসাবে রোগীদের প্রথম দল গেছে কুনমিংয়ে; চিকিৎসার পরিস্থিতি দেখে আসতে তাদের সঙ্গী হয়েছেন চিকিৎসক, ট্রাভেল এজেন্ট এবং সাংবাদিকরাও। গতকাল সোমবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হয়। ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে ওই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন। পরে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে কুনমিং যাত্রা করে ৩১ জনের ওই প্রতিনিধিদল।

চীনা দূতাবাস জানিয়েছে, প্রতিনিধিদলে ১৪ জন রোগী, ছয়জন রোগীর পরিবারের সদস্য, পাঁচ জন চিকিৎসক, পাঁচ জন ট্রাভেল এজেন্সির প্রতিনিধি ও একজন সাংবাদিক রয়েছেন।

চেকআপ এবং চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি প্রতিনিধিদলটি মেডিকেল ট্যুরিজমের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখবে বলে মনে আশা করছে চীনা দূতাবাস। খবর বিডিনিউজের।

গতবছরের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সীমিত করে রেখেছে ভারত সরকার।

এতে নিয়মিত ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীরা বিপাকে পড়েছেন। গত জানুয়ারিতে চীন সফর করে এসে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, চিকিৎসাসেবা পেতে বাংলাদেশিদের জন্য চীনের কুনমিং প্রদেশ ভারতের বিকল্প হতে পারে। উপদেষ্টার ওই সফরের দেড় মাসের মাথায় বাংলাদেশি রোগীদের প্রথম দলটি কুনমিং গেল।

বিমানবন্দরে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন ও বাংলাদেশ হচ্ছে সমন্বিত কৌশলগত সহযোগিতার অংশীদার, যারা প্রয়োজনের সময় একে অপরের পাশে দাঁড়ায়। বাংলাদেশের জরুরি প্রয়োজন মেটাতে চীনের অঙ্গীকারের এবং দুদেশের মধ্যে চিকিৎসাস্বাস্থ্যে সহযোগিতা বাড়ানো ও মানুষেমানুষে যোগাযোগে উন্নতির প্রকাশ ঘটাচ্ছে এই সফর।

এ সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন বলেন, চীনে বাংলাদেশের রোগীরা চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন, এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। এ উদ্যোগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি রোগীরা খুব সহজেই চিকিৎসাসেবা নিতে পারবেন। চলতি বছর বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে। ফলে দুদেশের জনগণের মধ্যে আমরা সম্পর্ক আরও বাড়াতে আগ্রহী। কুনমিংয়ে চিকিৎসাসেবা নেওয়ার মধ্য দিয়ে দুদেশের সম্পর্ক আরও বাড়বে বলে আমরা আশা করছি। নতুন এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বকে ‘গভীরভাবে অনুভব’ করতে পারবে বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র সচিব।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাবে চীনের কুনমিং শহরের তিনটি হাসপাতালকে বাংলাদেশি রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছে দেশটির সরকার। হাসপাতালগুলো হচ্ছেদ্য ফার্স্ট পিপলস হসপিটাল অব ইউনান প্রভিন্স, দ্য ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হসপিটাল অব কুনমিং মেডিকেল ইউনিভার্সিটি এবং চাইনিজ একাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্সেস এর ‘ফুয়াই ইউনান হসপিটাল’।

বাংলাদেশি রোগীদের জন্য মেডিকেল সার্ভিস ব্যবস্থাপনাকে উন্নীতকরণ, চিকিৎসা প্রক্রিয়া স্পষ্টকরণ এবং দোভাষী দল তৈরিতে কাজ চলার কথা এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন চীনা রাষ্ট্রদূত। তবে কুনমিংয়ে চিকিৎসার ক্ষেত্রে খরচের বিষয়ে ধারণা দিতে পারেননি তিনি। রোগীদের জন্য একদিনেই ভিসার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রদূত বলেন, কোনো একটি হাসপাতাল থেকে যদি ক্লিয়ারেন্স নিয়ে আসে, আমাদের দূতাবাস আবেদন জমা দেওয়ার দিনই ভিসা দিয়ে দেবে।

বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্টদের এর সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে জানিয়ে ওই সময় তিনি বলেন, তারা রোগীদের প্যাকেজ সার্ভিস চালু করবে। তাদের সেই প্যাকেজে ভিসা, বিমান টিকেট, কুনমিংয়ে থাকার জায়গা, খাবার এবং চিকিৎসার খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতুরস্কের কোচ গ্রুপের কর্মকর্তাদের ঢাকা সফর
পরবর্তী নিবন্ধবোয়ালখালীতে ধর্ষণের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল