বাংলাদেশকে হারিয়ে সিরিজ জিতে নিল আফগানিস্তান

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ১২ নভেম্বর, ২০২৪ at ৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ

শারজায় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিয়েছে আফগানিস্তান। গতকাল সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে তারা ৫ উইকেটে বাংলাদেশকে পরাজিত করে ২১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ। মাহমুদ উল্লাহর ৯৮ এবং অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজের ৬৬ রানের উপর ভর করে ৮ উইকেটে ২৪৪ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ১০ বল হাতে রেখে আফগানিস্তান ৫ উইকেটে ২৪৬ রানে পৌঁছে যায়।

আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজের সেঞ্চুরিতে টাইগারদের সিরিজ জয়ের আশা মুখ থুবড়ে পড়ে। তাসকিনের জায়গায় ওয়ানডেতে অভিষেক হওয়া নাহিদ রানা আফগান ব্যাটারকে খাবি খাইয়েছেন ঠিকই। বল করেছেন প্রায় ১৫১ কিলোমিটার গতিতে। তবে জয় হয়েছে গুরবাজওমরজাইদের। নাহিদ, মোস্তাফিজ আর নাসুম আহমেদ মিলে বাংলাদেশকে সঠিক কক্ষপথে রেখেছিলেন আফগান ইনিংসের শুরু থেকেই। তবে শরিফুল ও মিরাজের ওপর চড়াও ছিলেন গুরবাজহজরতউল্লাহ ওমরজাইরা। দুজন মিলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১০০ রান যোগ করেন।

এর আগে ৮৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে আফগানরা কিছুটা চাপেই ছিল। গতির ঝড় তোলা নাহিদই প্রথম সাফল্য দেন বাংলাদেশকে। তার গতিতে দিশেহারা সেদিকউল্লাহ অটল ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন ১৪ রানে। পরে নাহিদের দলে যোগ দেন মোস্তাফিজও। দুই দফায় আক্রমণে এসে ফেরান রহমত শাহ ও হাসমতউল্লাহকে। এরপরই শুরু হয় গুরবাজওমরাইয়ের পাল্টা লড়াই। তাদের জুটি ভেঙে মিরাজ ব্রেকথু এনে দিলেও ততক্ষণে কিছুটা দেরিই হয়ে যায়। কারণ গুরবাজ ১২০ বলে ৫ চার ও ৭ ছক্কায় খেলেছেন ১০১ রানের ইনিংস। যা ওয়ানডেতে তার অষ্টম সেঞ্চুরি। পরের ওভারেই নাহিদ এসে ফেরান গুলবাদিন নাইবকে। বাংলাদেশকে হতাশায় পোড়ানোর ম্যাচে দু’বার জীবন পান গুরবাজ। সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশের হাত থেকে ক্রমাগত ম্যাচটি কেড়ে নিয়েছেন তিনি। শেষদিকে আর কোনো নাটকীয়তা হয়নি। ওমরজাইমোহাম্মদ নবি মিলে পৌঁছে যান কাঙ্খিত গন্তব্যে।

এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪৪ রান করে বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৩ রান এনে দেন সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান তামিম। অবশ্য পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই ফিরে যান দুজন। ২৩ বলে ২৪ রান করে বোল্ড হয়ে যান সৌম্য। পরের ওভারে তানজিদ হাসান কাভারে ক্যাচ দেন হাশমাতুল্লাহ শহীদির হাতে। ৫ রান ও ১২ বলের ব্যবধানে বাংলাদেশ হারায় তিন উইকেট। ওমরজাইয়ের ১১তম ওভারের দ্বিতীয় বল পয়েন্টে পাঠান মিরাজ। তিনি সিঙ্গেল নিতে ঝুঁকতেই দৌঁড়ে পিচের অর্ধেক চলে আসেন জাকির। মিরাজ না করার পর তিনি ফেরার আগেই সরাসরি থ্রোয়ে স্টাম্প ভাঙেন খারোতে।

এরপর মিরাজের সঙ্গী হন তাওহীদ হৃদয়। ৭ রান করে ফেরেন হৃদয়। অল্প সময়ে চার উইকেট হারিয়ে বেশ বিপদে পড়ে যায় দল। অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন মিরাজ। যদিও তাদের পথচলা ছিল কিছুটা ধীর। এক পর্যায়ে একটা বাউন্ডারির জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় ৫০ বলের বেশি। তবে শেষদিকে এসে কিছুটা হাত খোলার চেষ্টা করেন তারা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নিজের ক্যারিয়ারের ২৯তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ৬৩ বলে। ১৪ ইনিংস পর এই মাইলফলকে পৌঁছান তিনি। আরেকদিকে মেহেদী হাসান মিরাজও তার নেতৃত্বের প্রথম ম্যাচেই হাফ সেঞ্চুরি পান। ৫০ রান করতে তার লাগে ১০৬ বল। রিয়াদমিরাজের লম্বা জুটি ভাঙে ৪৬তম ওভারে গিয়ে। মিডঅফে ওমরজাইয়ের বলে নাইবের হাতে ক্যাচ দেন মিরাজ। ১১৯ বলের ইনিংসে ৪টি চার হাঁকিয়ে ৬৬ রান করেন তিনি। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে তার জুটি ছিল ১৮৮ বলে ১৪৫ রানের। তার বিদায়ের পর বাকি ভার আসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কাঁধে। শেষ ওভারে চার রান করতে পারলেই সেঞ্চুরি পূর্ণ হতো তার। কিন্তু পারলেন না। শেষ বলে হয়ে যান রান আউট। আফগানিস্তানের পক্ষে চার উইকেট নেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ম্যাচ সেরা হন তিনিই। অপরাজিত ৭০ রান এবং ৪ উইকেট তাকে এ পুরস্কার এনে দেয়। সিরিজ সেরা হন আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্কুলে ভর্তিতে অনলাইনে আবেদন আজ থেকে
পরবর্তী নিবন্ধখাতুনগঞ্জে পাম তেলের রেকর্ড দাম বৃদ্ধি, বাড়ছে সয়াবিনও