বাংলাদেশের ফুটবলে ইতিহাস গড়েছে মেয়েরা। প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে তারা। মায়ানমার থেকে গত রোববার রাত দুইটার দিকে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। রাতেই তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে রাজধানীর হাতিরঝিলের আম্ফি থিয়েটারে। রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সেখান থেকে নারী ফুটবল দলকে সরাসরি হাতিরঝিলে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ৩টা ১৫ মিনিটে আফঈদারা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে তাদের ফুলের তোড়া দিয়ে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফ) নির্বাহী কমিটির সদস্যরা। রাত গভীর হলেও আফঈদা–ঋতুপর্ণাদের বরণ করে নিতে উপস্থিত ছিলেন হাজারখানেক দর্শক। তাদের মুখে ছিল ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ ধ্বনি।
মিয়ানমারের বিপক্ষে জোড়া গোল করে বাংলাদেশের ইতিহাস গড়ার কারিগর ঋতুপর্ণা চাকমা। এত রাতে বরণ করে নেওয়ার জন্য দর্শকদের ধন্যবাদ জানান তিনি। তারপর বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল এবং নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণকেও আলাদা করে ধন্যবাদ জানান এই ফুটবলার। ঋতুপর্ণা জানালেন বড় স্বপ্নের কথা। বাংলাদেশকে শুধু এশিয়াতে সীমাবদ্ধ রাখতে চান না। বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যেতে চান এই ফুটবলার। ঋতুপর্ণা বলেন আমরা আজকের যে পর্যায়ে এসেছি এটা একটা টিমওয়ার্ক। ফুটবল কোনো ব্যক্তিগত খেলা নয়। বাংলাদেশের মেয়েরা জানে কীভাবে কঠিন পরিস্থিতিতে ফাইট করতে হয়। আপনারা আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখবেন। আমরা আপনাদের নিরাশ করব না। আমরা শুধু এশিয়া না, বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল অনেক আনন্দের উপলক্ষ্য এনে দিয়েছে দেশের জন্য। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের মত টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছে। ছাদ খোলা বাসে করে ঘুরেছে। কাজেই বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা জানেন তাদের দায়িত্বটা কতটা বেড়ে যাচ্ছে। তা্ইতো ঋতুপর্না চাকমা বললেন আমরা সবসময় নিজেদের সেরাটা দিয়ে দেশের জন্য চেষ্টা করি। আমরা এখন এশিয়া কাপ খেলব। কিন্তু আমাদের চোখ আরো দুরে।
বাংলাদেশ নারী দলের কোচ পিটার বাটলারকে নিয়ে কম কান্ড কারখানা হয়নি। অনেক সমালোচনা সইতে হয়েছে বাটলারকে। কিন্তু তিনি তার সিদ্ধান্তে ছিলেন অনড়। তবে তিনি যে সঠিক পথেই ছিলেন তার প্রমান মেলে এই এশিয়া কাপের বাছাই পর্বে। ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা। দলের কোচ বাটলার শুরুতেই ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে বক্তব্য শুরু করেন। মেয়েদের এই সাফল্যের পেছনে অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা শোনান তিনি। এই কোচ জানান তাদের এই জয় সম্ভব হতো না যদি মেয়েরা নিজেদের শেষবিন্দুও ঢেলে না দিতো। তারা প্রাণপণ লড়াই করেছে। তারা জানতো তাদের কি করতে হবে। প্রতিটা ম্যাচেই তারা নিজেদের নিংড়ে দিয়েছে। নিজেদের উজাড় করে দিয়েছে। তাইতো তার শীষ্যদের নিয়ে দারুন উচ্ছ্বসিত বাটলার।