অ্যান্টিগা টেস্টে বড় ব্যবধানে বাংলাদেশকে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আজ থেকে জ্যামাইকাতে শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এ টেস্টেও জিতে সিরিজ নিজেদের করে নিতে চায়। এজন্য তারা তাদের পেস অ্যাটাকের দিকে দৃষ্টি রাখছে। অভিজ্ঞ কেমার রোচের সঙ্গে নির্ভরযোগ্য আলজারি জোসেফ, দুর্দান্ত ফর্মে থাকা তরুণ জেডেন সিলসের পাশে উঠতি শামার জোসেফ, অ্যান্টিগা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চার পেসারই ছিলেন দুর্দান্ত। আজ জ্যামাইকায় অনুষ্ঠেয় টেস্টে এই পেস দিয়েই বাংলাদেশকে ঘায়েল করে সিরিজ জিততে চান ক্যারিবিয়ান সহ–অধিনায়ক জশুয়া দা সিলভা। ওয়েস্ট ইন্ডিজে আগের দুই সফরেও অ্যান্টিগায় ক্যারিবিয়ান পেস আক্রমণের সামনে নাকাল হয়েছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং। এবার যদিও অ্যান্টিগার উইকেটে পেসারদের সহায়তা ততটা ছিল না। তবু বাংলাদেশের ১৮ উইকেটের সবকটিই নিয়েছেন ক্যারিবিয়ান পেসাররা। মূল চার পেসারের সঙ্গে কার্যকর ছিলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার জাস্টিন গ্রেভসও। শুধু এই টেস্টেই নয়, এ বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে উইকেট শিকারে ধারাল ভূমিকা রেখেছেন এই মূল চার পেসারই। তাদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী সিলস সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক। এই বছর ছয় টেস্টে তার শিকার ৩০ উইকেট। বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ায় স্মরণীয় এক জয়ের নায়ক শামার জোসেফের উইকেট সাত টেস্টে ২৪টি। ছয় টেস্টে ২২ উইকেট নিয়েছেন আলজারি জোসেফ, চার টেস্টে ১২টি রোচ। দ্বিতীয় টেস্টের জন্য জ্যামাইকায় পৌঁছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সহ–অধিনায়ক জশুয়া দা সিলভা বললেন, সিরিজ জয়ের অভিযানেও তাদের ভরসা এই পেস আক্রমণ। ‘কেমার রোচ ও আলজারি জোসেফ পেস আক্রমণকে খুব ভালো নেতৃত্ব দিচ্ছে। শামার জোসেফের মতো নতুন মুখ আছে। জেডেন সিলস বেশ কিছুদিন ধরে খেলছে, তবে এখনও নিজের কাজটা শিখছে। সব মিলিয়ে পেস আক্রমণ নিজেদেরকে জানান দিচ্ছে। যে ভীতি জাগাচ্ছে তারা, ব্যাটসম্যানের চোখেই তা ফুটে উঠছে। ১৮ উইকেট নিয়েছে তারা। আমাদের জন্য ব্যাপারটি হলো, এই সুবিধাটা কাজে লাগানো এবং আশা করি, এই পথ ধরে ২–০ ব্যবধানে সিরিজ জেতা।’ এবার স্যাবাইনা পার্কের উইকেটের ওপর নির্ভর করবে দুই দলের একাদশ। যদি উইকেট দেখে স্পিনারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে দল, তাহলে পেসারদের থেকে একজনকে বাইরে রেখে স্পিনার আনা হবে বলে জানালেন জশুয়া। তবে তারপরও তার মূল ভরসা পেস আক্রমণই। ‘সেটা অধিনায়ক ও প্রধান কোচ দেখবেন স্পিনার নেওয়া হবে কি না। প্রথম টেস্টে চার পেসার আমাদের জন্য কাজে দিয়েছে। পরের টেস্টে একাদশ যেমনই হোক, আমি নিশ্চিত যে আবারও কাজটা ঠিকঠাক করতে পারব। মাঠে যারাই নামব আমরা, সবাই নিজেদের সেরাটা দেব। স্পিনার কাউকে নেওয়ার প্রয়োজন হলে, তা হবে। তার পরও আমাদের পেস আক্রমণ প্রতিপক্ষকে বিপাকে ফেলতে পারে।’
জশুয়া দা সিলভা মনে করিয়ে দিলেন, এই ব্যাটিং লাইন আপে আলিক আথানেজ, কাভেম হজ, কেসি কার্টির মতো অনভিজ্ঞরা আছেন। নিজেদের মেলে ধরতে কিছুটা সময় তাদের লাগতে পারে। তবে এই নবীনদের প্রতিভায় তিনি আস্থা রাখছেন। ‘ব্যাটিং গ্রুপ হিসেবে আমাদের মিডল অর্ডারে বেশ কজন তরুণ আছে, যারা দশটির কম টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বা মাত্রই এসেছে। আমাদের জন্য ব্যাপারটি হলো, আরও ধারাবাহিক হতে শেখা ও টানা তিনশ, চারশ রান করা। আমরা জানি যে, আমাদের বোলিং আক্রমণ উইকেট এনে দেবেই। ব্যাটসম্যানদের শুধু রান করতে হবে। তবে এটা নিয়ে দুর্ভাবনা নেই আমার। প্রতিভা আমাদের আছে। ছেলেদের স্রেফ পায়ের নিচে জমিন খুঁজে নিতে হবে এবং কাজটা করতে হবে।’ ২০১ রানের জয়ে সিরিজে এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কাজ শেষ করার আগে কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ দেখেন না জশুয়া দা সিলভা।
‘জ্যামাইকায় আসতে পারা সবসময়ই দারুণ। সবশেষ যখন এখানে এসেছিলাম, জ্যামাইকার বিপক্ষে প্রথম শ্রেণির ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলাম। আশা করি, সেই ফর্ম ধরে রাখতে পারব। ১–০তে এগিয়ে থেকে এখানে আসতে পারা সবসময়ই ভালো অনুভূতি। তবে কাজ শেষ হয়নি। আমরা ২–০তে শেষ করতে চাই, সিরিজ জিততে চাই।’