বাঁশখালী পেকুয়া সড়কে বাড়ছে ইয়াবা পাচার

প্রতিদিন ধরা পড়ছে ছোট বড় চালান জড়িয়ে পড়ছেন নানা বয়সী নারীরা

বাঁশখালী প্রতিনিধি | বুধবার , ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের বিকল্প সড়ক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে পেকুয়া-বাঁশখালী সড়কটি। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছোট বড় চালানে পাচার হচ্ছে ইয়াবা। আর এসব ইয়াবা বহনে জড়িয়ে পড়ছেন ১৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সী মহিলারা। পুলিশের তল্লাশিতে বিভিন্ন সময় এসব চালান ধরা পড়লেও তা বন্ধ হচ্ছে না। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পেকুয়া-বাঁশখালী সড়কে ১৫/১৮টি ইয়াবার চালান আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর এসব ঘটনায় যারা আটক হয়েছেন কিছুদিন না যেতেই তারা জামিনে মুক্ত হয়ে আবারো এই পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন।
জানা যায়, ইয়াবার বাহক নারীরা একেক সময় একেক বেশ ধারণ করেন। কখনও ছোট বাচ্ছা সাথে নিয়ে আবার কখনও আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার নাম করে দল বেঁধে তারা ইয়াবা পাচার করেন। এছাড়া কখনও কচু, কখনও সাউন্ডবক্স, কখনো জুতা আবার কখনো পেটের ভেতর লুকিয়ে পাচার করেন এসব ইয়াবা।
থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকালে দেড় হাজার পিস ইয়াবাসহ উখিয়ার কুতুবপালং এলাকার মৃত নজির আহমদের ছেলে আকতার হোসেনকে (৪২), ১ ফেব্রুয়ারি ৪ হাজার পিস ইয়াবাসহ মহেষখালীর নুরুল আলম (৪০), টেকনাফের নবী হোসেনের স্ত্রী আয়েশা বেগম (৩৫) এবং কবির আহমদের স্ত্রী মন্তান বেগমকে (৪৬), ১৩ জানুয়ারি ৭ হাজার ৬শ পিস ইয়াবাসহ টেকনাফের জাবেদ আলীর ছেলে আফসার (২৯), সাতকানিয়ার মোহাম্মদ কালুর ছেলে জুবায়েরকে ( ৩৫) ও টেকনাফের আবদুল জব্বারের ছেলে আবদুর শুক্কুরকে (২৫) আটক করা হয়েছে। এছাড়া ১২ জানুয়ারি ১ হাজার ৮শ পিস ইয়াবাসহ মহেষখালীর মৃত তালেব আলীর ছেলে বাহাদুর (২৩) ও উখিয়ার বালুখালী এলাকার মৃত আলী আহমদের ছেলে মো. রহিমকে (২৩), ৮ জানুয়ারি র‌্যাব ৭ এর নেতৃত্বে বাঁশখালীর রামদাশ হাট এলাকা থেকে মোটর সাইকেল নিয়ে পাচারকালে ২২ হাজার ৫৯০ পিস ইয়াবাসহ মহেষখালীর জামাল হোসেনের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৩৬), চকরিয়ার আবু তৈয়বের ছেলে নুরুল মান্নান (৫৬) মোজাফ্‌ফর আহমদের ছেলে আবদুল আজিজ (৪২), রুহুল কাদেরের ছেলে মিজানুর রহমান পারভেজকে (৩০) এবং ৫ জানুয়ারি রাতে ১ হাজার ৮শ পিস ইয়াবাসহ টেকনাফের জাহিদ হোসেনের ছেলে আলী আহমদ (৩৩) ও ফরিদ আহমদের ছেলে সরোয়ার কামালকে (২৩) আটক করা হয়।
পুলিশের দাবি, বাঁশখালী থানায় লোকবল সংকটসহ নানা কারণে নিয়মিত তল্লাশি চৌকি বসাতে না পারায় কারবারীরা ইয়াবা পাচার করার সুযোগ পাচ্ছে। জানা যায়, পেকুয়া বাঁশখালী সড়ক ছাড়াও পেকুয়ার কাছাকাছি এসে অনেকে গাড়ি থেকে নেমে পুঁইছড়ি ও ছনুয়ার অভ্যন্তরীণ সড়ক হয়ে বিভিন্ন পথে নিরাপদে ইয়াবা পাচার করছে। তাছাড়া জেলেদের নৌকায় দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা পাচারের অভিযোগ উঠলেও কোস্টগার্ড আনোয়ারায় কয়েকবার বড় ধরনের চালান আটক করলেও বাঁশখালী সীমান্তে আটক করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সফিউল কবীর বলেন, বাঁশখালী এলাকাটি অনেক বড়। এখানে অনেক কর্মকর্তা প্রয়োজন। তার উপর বিভিন্ন দায়িত্ব থাকার কারণে প্রতিদিন তল্লাশি চৌকি বসানোর মত সুযোগ হয়ে উঠে না। যেদিন আমরা সোর্সের মাধ্যমে খবর পাই সেদিন তল্লাশি চালাই। পাশাপাশি এ সড়কে চলাচলকারীদের উপর তাদের প্রতিনিয়ত নজর রয়েছে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পিএসসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
পরবর্তী নিবন্ধফ্রিজে কাঁচা মাংসের সঙ্গে তৈরি খাবার