বাঁশখালীতে রক্ত প্রবাহিত রোগ হিমোফিলিয়া রোগ সম্পর্কে পরিচয়, ধারণা দেয়া ও প্রচারণামূলক সভা গত শনিবার দুপুরে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।
হিমোফিলিয়া সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতি নাজমুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি (রক্ত ও রক্ত রোগ) বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী।
অনুষ্ঠান বক্তব্য রাখেন বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সব্যসাচী নাথ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের রেজিষ্ট্রার ডা. সৌরভ বিশ্বাস, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আসিফুল হক, বাঁশখালী প্রেসক্লাব সভাপতি শফকত হোসাইন চাটগামী, হিমোফিলিয়া সোসাইটি চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, ডা. মনির উল্লাহ, ডা.রিয়াদ মো: মারজুক হিমোফিলিয়া সোসাইটির চট্টগ্রাম জেলার সহ সভাপতি মো. দিদারুল আলম, চট্টগ্রামের ভোলান্টিয়ার মো. ফয়সাল আহাম্মেদ অভি, মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি রাফিকুল করিম নিহাল, রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি মোঃ ইমতিয়াজ হোসেন, হেমাটোলজি বিভাগ চমেক হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রেখা দাশ প্রমুখ। সভায় বাঁশখালী উপজেলার হিমোফিলিয়া রোগী এবং তাদের অভিভাবকরা ও উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. গোলাম রব্বানী বলেন, হিমোফিলিয়া একটি মরণব্যাধী রোগ। সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা না পেলে এই রোগী ঝুঁকিতে পরে এবং রোগী অকালে পঙ্গুত্ব বরণ করে এমন কি মৃত্যু মুখে পতিত হয়।
এই রোগের নির্ণয় ততটা কঠিন না হলেও চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয় বহুল ও দুর্লভ। দেশে এই রোগের চিকিৎসা সামগ্রী প্রয়োজনীয় CFC (ক্লটিং ফ্যাক্টর কনসেনট্রেট) ইনজেকশন পাওয়া যায় না। তাই সবার পক্ষে এই রোগের সঠিক চিকিৎসা সম্ভব হয়না। তাই হিমোফিলিয়া সোসাইটির মাধ্যমে রক্তক্ষরণ জাতীয় এই রোগ সম্পর্কে মানুষের মাঝে সচেতনা সৃষ্টি এবং চিকিৎসাসহ সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি হিমোফিলিয়া রোগীর সন্ধান পেলে আতংকিত এবং হতাশ না হয়ে বাঁশখালী হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড ৩৭ এ হেমাটোলজি বিভাগের হিমোফিলিয়া ট্রিটমেন্ট সেন্টার (এইচটিসি) অথবা প্রয়োজনীয় পরামর্শের ব্যাপারে সোসাইটির সাথে যোগাযোগ করার আহবান জানান।
সভায় জানানো হয়, সারা দেশে ২২ হাজারের উপরে হিমোফিলিয়া রোগী থাকার কথা থাকলেও আমরা অদ্যাবধি মাত্র ৩ হাজার ৬০০ জনকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। বাঁশখালীতে এই ধরণের রোগী আছে ৭৫ থেকে ৮০ জন। আমরা বাঁশখালীর ১৬ জনকে শনাক্ত করেছি।
তাদের নিয়মিত চিকিৎসা এবং সেবা নিশ্চিত করেছি। বাকী অশনাক্ত রোগীদের শনাক্তকরণে এলাকার জনগণ সহযোগিতা কামনা করেন। কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম বিভাগে হাতিয়া, সন্দীপ, মহেশখালী ও বাঁশখালী উপজেলাকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ধরে কাজ শুরু করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৭ নং ওয়ার্ডে ২০১২ সাল থেকে এই রোগের আলাদা চিকিৎসা কেন্দ্র এইচ টিসি চালু করা হয়েছে। বাঁশখালী হাসপাতালেও এই জাতীয় রোগীদের আলাদাভাবে চিকিৎসার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।