বাঁশখালীতে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিতদের অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে

বঞ্চিত লেয়াকত আলীর সমর্থনে মহাসমাবেশের ডাক

বাঁশখালী প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২০ নভেম্বর, ২০২৫ at ৮:৩১ পূর্বাহ্ণ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম ১৬ বাঁশখালী আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিতদের অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। তাদের পক্ষের নেতাকর্মীরা প্রতিদিনই বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। দলটির মনোনয়ন বঞ্চিত দক্ষিণ জেলার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও গন্ডামারার আলোচিত চেয়ারম্যান লেয়াকত আলীর কর্মী সমর্থকরা প্রতিরাতে মশাল মিছিল করে চলেছেন। অবশেষে তারা আগামী ২২ নভেম্বর শনিবার বেলা দু’টায় বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন। গত ১৪ নভেম্বর একই মাঠে বাঁশখালী আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা তাঁর বাবা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী মরহুম আলহাজ্ব জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা ও নির্বাচনী শোডাউন করেন। যে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অতিথি ছিলেন বিএনপি চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব ইদ্রিস মিয়াসহ জেলার দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।

বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে চট্টগ্রাম ১৬ বাঁশখালী আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার জন্য মাঠে ময়দানে চষে বেড়িয়েছিলেন সিনিয়র এডভোকেট ইফতেখার হোসেন চৌধুরী মহসিন, বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র কামরুল ইসলাম হোছাইনী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও গন্ডামারার চেয়ারম্যান মো. লেয়াকত আলী, জেলা পিপি এডভোকেট আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক, সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী মরহুম আলহাজ্ব জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর বড় পুত্র জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, কনিষ্ঠ পুত্র মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিকসহ সাতজন। এদের মধ্যে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ড সাবেক প্রতিমন্ত্রী মরহুম আলহাজ্ব জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর কনিষ্ঠ পুত্র মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পার মনোনয়ন নিশ্চিত করে। পাপ্পার মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর অপরাপর মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দলের প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন জানালেও বেকেঁ বসেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও গন্ডামারার চেয়ারম্যান মো. লেয়াকত আলী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিক। চেয়ারম্যান মো. লেয়াকত আলীর পক্ষে প্রতিটি ইউনিয়নে মশাল মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আগামী ২২ নভেম্বর শনিবার দুপুর দুটায় বাঁশখালী আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মহাসমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে।

বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিক বলেন, সারাজীবন দলের জন্য জেল জুলুমের শিকার হয়েছি। কিন্তু মনোনয়নের ক্ষেত্রে পরিবারতন্ত্র মানা হচ্ছে। আমাকে না দিলেও চেয়ারম্যান মো. লেয়াকত আলী অনেকবার জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন দলের জন্য। তাকে মনোনয়ন দিলেও দল লাভবান হতো বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

এদিকে দলের মনোনয়ন এবং শনিবারের মহাসমাবেশের ব্যাপারে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও গন্ডামারার চেয়ারম্যান মো. লেয়াকত আলী বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে অসংখ্যবার জুলুমের শিকার হয়েছি। কারাগারে ছিলাম। রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে আমার কর্মীরা মাঠে ছিল। আজ আমাকে মনোনয়ন বঞ্চিত করাতে কর্মী সমর্থকরা প্রতিরাতে মশাল মিছিল করছে। বেশ কিছু স্থানে সমাবেশও করেছে। এখন মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে ‘আমার আগামী রাজনীতি’ বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়া বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ টায় স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সাথে সমাবেশের ব্যাপারে মতবিনিময় করবেন বলে জানা যায়।

উল্লেখ্য, বিগত ১২বার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাঁশখালীতে পাঁচবার বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী, পাঁচবার আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও দুইবার জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফটিকছড়িতে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মশাল মিছিল
পরবর্তী নিবন্ধ‘গ্যাস নয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি চাই’