বাঁশখালীতে বেড়েছে গরু চুরির ঘটনা। প্রতিদিন কোন না কোন গ্রামে হানা দিচ্ছে চোরের দল। অব্যাহত চুরির ঘটনায় কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত এক মাসে উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে ৫০-৬০টি গরু চুরি হয়েছে বলে জানা যায়।
১৪ জানুয়ারি (রবিবার) দিবগত রাতে উপজেলার কালীপুর ইউনিয়নের পূর্ব গুনাগরী ভাষানিয়া দোকানে সংলগ্ন আহমেদ কবিরের নতুন বাড়ি থেকে ব্যবসায়ী মোঃ শহিদুল ইসলামের গোয়ালঘর থেকে চারটি গরু চুরি হয়ে যায়। যার বাজার মূল্য আনুমানিক ৩ লাখ টাকা।
গোয়ালঘরের তালা ভেঙে গরুগুলো চুরি করে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ চোরচক্র। অনেক দিনের কষ্টে লালন-পালন করা গরুগুলো চুরি হওয়ায় ভেঙে পড়েছেন ব্যবসায়ী মোঃ শহিদুল ইসলাম।
জানা গেছে,গত এক মাসে কালীপুর ও সাধনপুর ইউনিয়নে অন্তত ১৫টি গরু চুরি হয়েছে। সাধনপুর ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় দানুর বাড়ির আবদুর রহমানের ৪ টি জহুস পাড়ার বশরের ৪ টি গরু চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা। এ বিষয়ে বাঁশখালী থানায় জিডি করা হলেও এখনো উদ্ধার হয়নি গরুগুলো।
কালীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আ ন ম শাহাদাত আলম বলেন, গেল এক মাসে আমার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অনন্ত বেশ কয়টি গরু চুরি হয়েছে। এরা সংঘবদ্ধ একটি চক্র ও সমাজে নেশাগ্রস্ত ছেলেরাই তাদের নেশার টাকা যোগাড় করতেই প্রতিনিয়ত এই ধরনের গরু চুরির মত কর্মকাণ্ড জড়িয়ে যাচ্ছে।
এ গরু চুরির ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। গৃহস্থরা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গরু চুরির সংবাদ পাওয়া গেছে। কষ্টে লালিত গরু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন অনেক ক্ষুদ্র কৃষক এদিকে গরু চুরি ঠেকাতে অনেক এলাকায় গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে পাহারাদার রাখা হয়েছে। তারপরও ঠেকানো যাচ্ছে না গরু চুরি।
ভুক্তভোগীরা জানান, গরু চুরির সাথে একদল প্রশিক্ষিত সংঘবদ্ধ চক্র জড়িত রয়েছে। চুরি হওয়া গরু দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থানান্তর করে বিক্রি করা হচ্ছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহরের একাধিক কসাইখানায় চুরি হওয়া গরু জবাই করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রশাসনিক নজরদারি বাড়লে চুরি হওয়া গরু উদ্ধার সম্ভব বলে মনে করেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, গেল দুই সপ্তাহ কালীপুর ইউপির ১ নম্বর ও সাধনপুর ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ১২টি গুরু চুরি হয়েছে। রাতের আঁধারে গোয়ালঘর থেকে চুরি হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে গরুগুলো গায়েব হয়ে যায়। গরু চুরি যেভাবে বেড়েছে কৃষকরা খুব ভয়ে রয়েছে। বিড়ম্বনার কারণে গৃহস্থরা থানায় জিডিও করছেন না।
এদিকে গরু চুরি ঠেকাতে মাঠে তৎপরতা চালাচ্ছে বাঁশখালী থানা পুলিশ। উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও এলাকায় নিয়মিত টহল জোরদারসহ নজদারি বাড়ানো হয়েছে। গরু চোরের তালিকা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রামদাস মুন্সী পুলিশ তদন্তের ইনসার্জ তপন কুমার বাকচী বলেন, যেখানেই গরু চুরির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই আমাদের টিম কাজ করছে। অভিযোগ না পেলেও গরু চুরি ঠেকাতে আমাদের টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে। গরুচোর শনাক্তে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে একটি ডাটাবেজ তৈরি করা হচ্ছে।
চুরি হওয়া গরু উদ্ধারেও পুলিশ কাজ করছে বলে জানান তিনি।