ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য বাঁশখালীতে সাড়ে ৪৮ হাজারের বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। স্থানীয় খামারে প্রস্তুত করা এসব পশু কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৩ হাজার উদ্বৃত্ত থাকবে। খাবারের মূল্য ও লালন–পালন খরচ বেশি হওয়ায় দাম আগের চেয়ে চড়া থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কোনো রকম রাসায়নিক খাবারের পরিবর্তে খামারের পশুগুলোকে প্রাকৃতিক খাবার ভূষি, খৈল ও ঘাস খাইয়েই মোটাতাজা করা হচ্ছে বলে দাবি খামারিদের। তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর, খামারি, বেপারি, গৃহস্থ ও কোরবানিদাতারা আশা করছেন– বাজেটের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত পশু মিলবে। বাঁশখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, এবার কোরবানির জন্য উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ১৫৭টি মোটাতাজাকরণ খামারসহ ছোট–বড় মোট ২০৫টি খামারে প্রস্তুত করা হয়েছে ৪৮ হাজার ৫৩৬টি বিভিন্ন ধরনের পশু। উপজেলায় এ বছর কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৪৫ হাজার ৯১৫ টি। চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকবে ২ হাজার ৬২১টি পশু। মজুদ পশুর মধ্যে গরু ৩১ হাজার ১৮৭টি, ছাগল ১০ হাজার ৭৭০টি, মহিষ ৩ হাজার ৫৮৬টি, ভেড়া ২ হাজার ৯৯৩টি।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হওয়ার পর স্থানীয়ভাবে সরকারি ও বেসরকারিভাবে পশু উৎপাদনে জোর দেওয়া হয়। তবে আগের চেয়ে পশু ও মাংসের দাম অনেক চড়া। খাদ্য ও পশু লালন–পালনের খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় সবার প্রত্যাশিত বাজেটে কাঙ্ক্ষিত পশু মিলছে না।
বাঁশখালীর কয়েকজন খামারির সাথে কথা বলে জানা যায়, কয়েকদিন পরে পুরোদমে শুরু হবে কোরবানির পশু কেনা–বেচা। তাই আগাম প্রস্তুতি হিসেবে পশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। তবে গো–খাদ্যের বাড়তি দামের কারণে তারা এসব পশুর প্রত্যাশিত মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত। তারা বলছেন, প্রতি বছর গো–খাদ্য ভূষি, ধানের কুড়া, খৈল, খড়, ঘাসসহ গো–খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পশু পালনে আগের চেয়ে ব্যয় বাড়ানোর ফলে কোরবইনর হাট–বাজারে পশুর দাম স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে।
বাঁশখালী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে এ উপজেলায় প্রায় ২০টি পয়েন্টে বাজার বসবে। আমরা বাজারে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বাজার ইজারাদারদের নিয়ে মতবিনিময় করেছি। তাদের বলা হয়েছে পর্যাপ্ত নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিম রাখতে। পশুরহাটে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি প্রতিরোধে টহল বৃদ্ধি করার পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে। সার্বিক নিরাপত্তায় হাট কেন্দ্রিক পুলিশের কন্ট্রোল রুম স্থাপন করার কথাও বলেন তিনি।
বাঁশখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দী বলেন, বাঁশখালীতে কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে এবার প্রায় ৩ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। আমাদের ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম প্রতিনিয়ত খামারিদের নানাভাবে পরামর্শ ও সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। কোনো প্রকার রাসায়নিক খাবার ছাড়া সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক দানাদার খাবার, কাঁচা ঘাস এসবই খাওয়ানো হচ্ছে। আমাদের এখানে ৩০০ থেকে ৮০০ কেজি ওজনের পর্যন্ত গরু রয়েছে। আশা করছি এ বছর খামারিরা ভাল দাম পাবে। তাছাড়া, গরু বেচা–কেনার হাটেও আমাদের মনিটরিং থাকবে। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট বিশেষ করে গুনাগরী, টাইমবাজার, চাম্বল বাজারে আমাদের মেডিকেল টিমের বুথ বসানো হবে।