বহিষ্কৃত চিন্ময়ের কোনো দায় নেবে না ইসকন

| শুক্রবার , ২৯ নভেম্বর, ২০২৪ at ৮:২৮ পূর্বাহ্ণ

আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কার করা হয়েছিল রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আসামি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। ফলে সংগঠনটির সঙ্গে বর্তমানে তার কোনো সম্পর্ক নেই। যে কারণে চিন্ময়ের কোনো কর্মকাণ্ডের দায় নেবে না এ সংগঠন। এছাড়া সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের আন্দোলনের সঙ্গে ইসকনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানান সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী। আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেছেন, বহিষ্কৃত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের কর্মকাণ্ড ও বক্তব্য একান্তই তার ব্যক্তিগত। এর দায় ইসকন নেবে না। খবর বাংলানিউজের।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর স্বামীবাগ আশ্রমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। চারু বলেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ঘিরে ভারতের মন্তব্য বা অবস্থানের সঙ্গে ইসকনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কোনো দেশের কোনো ব্যক্তি চিন্ময়কে নিয়ে কী উদ্যোগ নিলো বা কী বললসে জন্য ইসকন দায়ী নয়। তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম আইনজীবী হত্যায় ইসকনকে অন্যায়ভাবে জড়িয়ে মিথ্যাচার চলছে। একইসঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ইসকন দায়ী নয়। শিশুর সঙ্গে খারাপ কাজসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য অনেক আগেই চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

গত ২৫ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ এনে গত ৩১ অক্টোবর বিএনপি নেতা ফিরোজ খান (পরে বহিষ্কৃত) বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন। মামলায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান হওয়ার পর নগরের নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্টে স্তম্ভের ওপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা একটি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে, যা এখনো সেখানে রয়েছে। ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে লালদীঘির মাঠে একটি মহাসমাবেশ হয়।

চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো মানুষ ওই সমাবেশে যোগ দেন। ওইদিন চন্দন কুমার ধরসহ ৯ জন আসামির ইন্ধনে বাকি আসামিরা নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্ট স্তম্ভ ও আশপাশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে সেখানে স্থাপন করে দেয়। এ নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

মামলার পর ইসকন প্রবর্তক ধাম অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রসঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি মামলাটি সনাতনীদের আট দফা দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা হিসেবে আখ্যা দেন।

ওই বিবৃতিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, ৫ আগস্টের পর সনাতনীদের ওপর চালানো হামলানির্যাতনের প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন। এই আন্দোলন বর্তমান সরকার কিংবা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়।

চট্টগ্রামে ইসকন পরিচালিত মন্দির পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’ নামের একটি সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আগস্টে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধসহ আট দফা দাবিতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে ওই জোট।

সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা এবং সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের আন্দোলনের সঙ্গে ইসকনের কোনো ‘সম্পৃক্ততা নেই’ বলে দাবি করেছেন হিন্দু ধর্মীয় সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচিন্ময়সহ ইসকনের ১৭ সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ
পরবর্তী নিবন্ধসাইফুল হত্যার ঘটনায় আরও আটজন গ্রেপ্তার