বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ, জাহাজ জটের কবলে পড়তে যাচ্ছে বন্দর

হাসান আকবর | শুক্রবার , ১ আগস্ট, ২০২৫ at ৯:৩১ পূর্বাহ্ণ

প্রতিকূল আবহাওয়া এবং ভয়াবহ রকমের উত্তাল সাগরে বহির্নোঙরে পণ্য খালাস কার্যক্রম মূলতঃ মুখ থুবড়ে পড়েছে। এতে করে ভয়াবহ রকমের জাহাজ জটের কবলে পড়তে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ জাহাজের সারি বাড়ছে। বাড়ছে বিদেশি পণ্যবাহী জাহাজের অপেক্ষার সময়ও। গতকাল চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে ২৩টি খোলা পণ্যবাহী মাদার ভ্যাসেল পণ্য খালাসের জন্য অপেক্ষা করছিল। কর্ণফুলী নদীতে ভাসছিল ২৩৮টি অলস লাইটারেজ জাহাজ।

সূত্র জানিয়েছে, দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশের সিংহভাগ পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। বিশ্বের নানা দেশ থেকে আমদানিকৃত গম, ভুট্টা, ডাল, চিনি, লবণ, স্ক্র্যাপ, সার, সিমেন্ট ক্লিংকার, কয়লা, স্টোনসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আসা বড় জাহাজগুলো চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ভিড়তে পারে না। এসব জাহাজ বহির্নোঙরে অবস্থান করে লাইটারেজ জাহাজে পণ্য খালাস করে। লাইটারেজ জাহাজে পণ্য দিয়ে বহির্নোঙর থেকেই জাহাজগুলো ফিরতি পথ ধরে। আবার কিছু কিছু জাহাজ বহির্নোঙরে কিছু পণ্য খালাস করে জাহাজের ড্রাফট কমিয়ে পরবর্তীতে বন্দরের জেটিতে এসে বাকি পণ্য খালাস করে। এভাবে বহির্নোঙরে বছরে অন্তত কয়েক কোটি টন পণ্য হ্যান্ডলিং হয় বলেও সূত্র জানিয়েছে।

কিন্তু বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরের সব ধরণের পণ্য খালাস কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। বহির্নোঙরে অবস্থানকারী কোনো জাহাজ থেকেই পণ্য খালাস হচ্ছে না। উত্তাল সাগরে কোন লাইটারেজ জাহাজই ভিড়তে পারছে না মাদার ভ্যাসেলের পাশে। এসব জাহাজ সাগর পাড়ি দিয়ে বহির্নোঙরেও যেতে পারছে না। ফলে লাইটারেজ জাহাজের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কোঅর্ডিনেশন সেল বা বিডব্লিউটিসিসি থেকে জাহাজ বরাদ্দ দেয়ার কার্যক্রমও তলানিতে ঠেকেছে।

বিডব্লিউটিসিসি’র নির্বাহী পরিচালক মেজর (অব) জিএম খান দৈনিক আজাদীর সাথে আলাপকালে জানান, বহির্নোঙরে পণ্য খালাসের জন্য ২৩টি বড় মাদার ভ্যাসেল অবস্থান করছে। এসব জাহাজে কয়েক লাখ টন পণ্য রয়েছে। এসব পণ্য খালাসের জন্য ২৩৮টি লাইটারেজ জাহাজ প্রস্তুত। কিন্তু কর্ণফুলী নদীর উজান থেকে একটি জাহাজও বহির্নোঙরে যেতে পারছে না। তিনি সাগর উত্তাল হওয়ায় লাইটারেজ জাহাজ বহির্নোঙরে যেতে পারছে না বলে উল্লেখ করে জানান, পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এতো খারাপ আবহাওয়ায় লাইটারেজ জাহাজ চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। তীব্র ঢেউয়ের মাঝে লাইটারেজ জাহাজ মাদার ভ্যাসেলের গায়ের সাথে লেগে থাকতে পারে না। প্রচন্ড লাফালাফি করে। এসময় জাহাজ ফেটে ডুবে যাওয়ার আশংকা থাকে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

সময়মতো পণ্য খালাস করতে না পারায় বহির্নোঙরে অপেক্ষমান জাহাজের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে বলে জানিয়ে বন্দরের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রকৃতির উপর আমাদের কারো কোন হাত নেই। বন্দরে জাহাজ জট সৃষ্টি হচ্ছে বলেও তিনি স্বীকার করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসেই রিয়াদের আরও একটি বাসার খোঁজ, মিলল নগদ টাকা
পরবর্তী নিবন্ধরাউজানে দুই গ্রুপের সহিংসতার ঘটনার তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় বিএনপি