‘রিক্ত শীতের বিদায় হবে, বসন্ত যে দ্বারে, পক্ষীরা সব সুর তুলেছে– বন্দনা তার তরে। …’ আজি মনের কোণে গুনগুনিয়ে বাজছে যেন বসন্তেরই এমনসব কবিতা–গান। বসন্তের বন্দনার মধ্যে রয়েছে কবিতা, গান, নৃত্য আর চিত্রকলা। প্রকৃতির দক্ষিণা দুয়ারে আজ বইছে ফাগুনের হাওয়া। নব হাওয়ায় দুলছে মন। মনমাতানো পরিবেশে জুড়াচ্ছে প্রাণ। কোকিলের কণ্ঠে আজ বসন্তের আগমনী গান। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের রক্তিম মেলা। ফুলে ফুলে ভ্রমরও করছে খেলা। সব কিছুই জানান দিচ্ছে আজ পহেলা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। আজ পত্রপল্লবে, ঘাসে ঘাসে, নদীর কিনারে, কুঞ্জ–বীথিকা আর পাহাড়ে অরণ্যে বসন্ত এসেছে নবযৌবনের ডাক দিয়ে। ছড়িয়ে দিয়েছে রঙের খেলা। বসন্তকে স্মরণ করে রবীন্দ্র্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে। তব অবকুন্ঠিত গুন্ঠিত জীবনে, করো না বিড়ম্বিত তারে। আজি খুলিয়ো হৃদয়দল খুলিয়ো, আজি ভুলিও আপনপর ভুলিও।’
বাঙালির জীবনের সঙ্গে একাকার হয়ে আছে বসন্ত। এদিন আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ আজ ভালোবাসার দিন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস আজ। প্রিয়জনকে ভালোবাসি বলার দিন আজ। চট্টগ্রাম নগরে নানা আয়োজনে উৎসবমুখর পরিবেশে এ দিনটি পালন করা হয়ে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বসন্তের সাজে সাজবে। এতে বিভিন্ন বয়সী নর–নারী বাসন্তী রঙের পোশাক পরে বসন্ত উৎসবে যোগ দেন। বাসন্তী ফুলের পরশ আর সৌরভে কেটে যাবে শীতের জরা–জীর্ণতা। ভালোবাসার মানুষেরা আজ সাজবে বাসন্তী সাজে। শীতের সঙ্গে তুলনা করে চলে বসন্তকালের পিঠা উৎসবও। বসন্ত মানেই একরাশ স্নিগ্ধতা, বসন্ত মানেই রঙের ছড়াছড়ি। অনেকেই আজ হলুদ–কমলা শাড়ি আর ফুলে সেজেছেন। আজ দেখা যাবে তরুণীদের পরনে হলুদ শাড়ি। মাথায় এক গোছা ফুল বা ফুলের মুকুট। ছেলেদের পরনে হলুদ পাঞ্জাবি।
বোধনের আয়োজন: বোধনের বসন্ত উৎসব আজ সকাল ৭টা থেকে চসিক মিউনিসিপ্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি। বোধন অপর অংশ আজ আমবাগানে নানা আয়োজনে বসন্ত উৎসব উদযাপন করবে।