বলুয়ার দিঘিকে বিলুপ্ত হতে দেয়া যায় না

আলেক্স আলীম | সোমবার , ১০ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

তিন বছর আগে চট্টগ্রামের পুকুর ও দিঘি নিয়ে একটি প্রতিবেদন দৈনিক আজাদীতে ছাপা হয়। প্রতিবেদনে বলুয়ার দিঘির যে ছবিটি ছাপা হয়েছে তা এই তিন বছরে আরো সংকুচিত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিন পর হয়তো সবই বিলীন হয়ে যাবে হাইরাজ দালানের নীচে। ভূমিদস্যু আর দুর্বৃত্তরা রাতের অন্ধকারে সেই কাজ নিপুণভাবে করে যাচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগায়। পাশেই রয়েছে চাক্তাই খাতুনগঞ্জের মত বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও বৃহৎ বাণিজ্যিক এলাকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই এলাকায় কোনো অগ্নিকাণ্ড হলে সেটাতে আগুন নেভানোর মত জলের অভাবে বঙ্গবাজারের চেয়ে বহুগুণ ক্ষতির মাসুল গুনতে হবে। এই দিঘির পাড়েই রয়েছে চট্টগ্রামের একটি অতিপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মসজিদ। এই দিঘির স্বচ্ছ জলে ওজু করে একসময় মুসল্লীরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। দিঘির অদূরেই অভয়মিত্র শ্মশান। শ্মশানে মৃতদেহ সৎকার করে আত্মীয় স্বজনরা এই দিঘির জলে পাক পবিত্র হয়ে বাসায় ফিরে যেতেন।

দিনে দিনে এসব স্মৃতিতে পরিনত হচ্ছে। শৈশবে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আমি এই দিঘিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গোসল করতেও দেখেছি। কিছু লোভী মানুষের (অমানুষ) লুটপাটের স্বার্থে বলুয়ার দিঘিকে হারিয়ে যেতে দেয়া যায় না। এনাফ ইজ এনাফ। যা হয়েছে মোর দেন এনাফ। আশা করি চট্টগ্রামের প্রশাসন সময় ক্ষেপণ না করে অবিলম্বে বলুয়ার দিঘি বাঁচাতে যথাযথ ভূমিকা নেবে। আশা করি পরিবেশ অধিদপ্তর লুকিয়ে থাকবে না। আশা করি সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি আবারও জাতির সামনে তুলে ধরবেন। আশা করি ১২ এপ্রিল বেলা ১১টায় চট্টগ্রামের সচেতন মানুষেরা বলুয়ার দিঘির পাড়ে এসে চিৎকার করে বলবেন : বলুয়ার দিঘিকে বিলুপ্ত হতে দেবো না। বলুয়ার দিঘির উপর সমস্ত অবৈধ স্থাপনা অবিলম্বে ভেঙে ফেলা হোক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের অসীম সাহসী কন্যা শেখ হাসিনার কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে চাই দেশে কোনো জলাশয় বিলুপ্ত হতে দেবো না।

লেখক : সাবেক সচিব ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান,

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রাম

পূর্ববর্তী নিবন্ধশেখ ফরিদ চশমা জামে মসজিদের রাস্তাটি মেরামত করা হোক
পরবর্তী নিবন্ধতোমার মনে পড়ে কি মা?