বর্ষার এই তিন মাস ওয়াসা যাতে সড়ক কাটাকুটি না করে

ফরিদারপাড়া এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পরিদর্শনকালে মেয়র মেয়রের সামনেই পাঁচতলা ভবনের জানালা দিয়ে ফেলা হল ময়লা!

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৩১ জুলাই, ২০২৫ at ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ

নগরের ফরিদারপাড়া এলাকায় বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পরিদর্শনে গিয়ে প্রকৌশলীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছিলেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। ঠিক এসময় একটি পাঁচতলা ভবনের জানালা থেকে একজন বাসিন্দা পাশের নালায় ময়লা ফেলেন। বারবার সচেতন করার পরও ময়লা ফেলে খালনালা ভরাট করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেয়র। তাৎক্ষণিক ওই এলাকার হাউজিং সোসাইটির দায়িত্বশীল নেতাকে ফোন দেন তিনি। বলেন, নালায় এভাবে ময়লা ফেললে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে অভিযান পরিচালনা করে শাস্তি দেওয়া হবে। গতকাল বুধবার বেলা ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এদিন মেয়র বহদ্দারহাট, চকবাজার, কাপাসগোলা, ফরিদা পাড়া পর্যন্ত রাস্তা, ড্রেনেজ এবং সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোর বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। এসময় সাংবাদিকদের মেয়র বলেন, বাসার ময়লা নালাখালে ফেললে আমরা ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে জরিমানা করব। এ ময়লার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং পানি জমে সেখানে মশার প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। সেখানে ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়া, এডিস মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে। তাই আমরা যদি স্বাস্থ্য সচেতন হই তাহলে আশা করি এই শহরটা ক্লিন হেলদি এবং সেফ হবে।

ডা. শাহাদাত বলেন, বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন সড়ক চসিকের ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে নিয়ে সরেজমিনে দেখেছি। মনে হয়েছে বেশ কিছু নালা অনেক অপরিকল্পিতভাবে করা হয়েছিল অতীতে। যার কারণে বৃষ্টির পানি ঠিকমত নিষ্কাশন হচ্ছে না। বর্ষাকালে আমাদের প্ল্যাননালাগুলোকে আমরা কন্টিনিউয়াস প্রসেসে ক্লিন রাখবো। এইজন্য এই তিন মাস নালা সংস্কারের কাজ চলবে। আর খাল সংস্কারের কাজ তো চলমান আছেই।

বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের সংস্কারকাজ অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ভারী বর্ষণের কারণে যেসব রাস্তা খানাখন্দ হয়ে গেছে, তা সংস্কার করা হবে। আগামী তিন মাস যাতে সড়ক না কাটে, সে জন্য ওয়াসাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ডা. শাহাদত বলেন, জলাবদ্ধতা বিষয়ে সমস্ত সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে আমরা একসাথে বসেছি। আমরা কাজ করছি সমন্বিতভাবে। আমরা একটা কন্টিনিউয়াস মনিটরিং এর মধ্যে আছি। রাস্তা যেগুলো ভারী বর্ষণের কারণে খানাখন্দ হয়ে গেছে সেগুলো আমরা রিপেয়ার চালিয়ে যাব। এখানে জোয়ারের পানির একটা ফ্যাক্টর আছে। সেজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আমরা বলেছি তারা যাতে সুইস গেটগুলো সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আর পাম্পিং হাউজের ব্যবস্থা করে। আরেকটা হচ্ছে আমাদের ওয়াসাকে বিভিন্ন জায়গায় না কাটার জন্য আমি তাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছি। তিন মাস যাতে বর্ষার সময় তারা এ ধরনের ধরনের সড়ক কাটাকুটি না করে।

তিনি বলেন, বৃষ্টির সময় শহরের কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে, তার অন্যতম কারণ হচ্ছে নালায় ময়লা ফেলা ও ড্রেনেজ লাইনের প্রতিবন্ধকতা। এ সমস্যা সমাধানে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। নাগরিক সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে অভিযান ও প্রচারণা আরও জোরদার করা হবে। নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে শুধু সিটি কর্পোরেশনের নয়, নাগরিকদেরও দায়িত্ব রয়েছে। আমরা উন্নয়ন কাজ করছি, কিন্তু নাগরিকদের যদি সচেতন না করি, তাহলে এই কাজগুলোর ফল ভোগ করা যাবে না। এজন্য সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল হতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসংসদের ৩০০ আসনের ৭ শতাংশে নারী প্রার্থীর প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশনের
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা