জনভোগান্তি নিরসনে চট্টগ্রাম ওয়াসাকে আগামী বর্ষার আগে সড়ক কর্তন বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এসময় বর্ষার আগেই চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থাগুলোকে জলাবদ্ধতা নিরসনে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করারও নির্দেশনা দেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার টাইগারপাস চসিক কার্যালয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিমের সাথে জলাবদ্ধতা নিরসনে করণীয় নিয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সভায় চসিকের প্রকৌশল বিভাগকে বর্ষার আগেই যে সমস্ত রাস্তা নির্মাণ করা হবে এবং যে সমস্ত সড়ক সংস্কার করা হবে সেগুলোতে দ্রুত প্রকৌশলগত কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দেন মেয়র। সভায় বাকলিয়া আব্দুল লতিফ সড়কে জলাবদ্ধতার জন্য ইকবাল খালের ডাউনসিট্রম পরিষ্কার করা, গভীরতা বৃদ্ধির জন্য খনন, এক্সেস রোডে নির্মিত নতুন কালভার্টের নিচে পুরাতন একটি কালভার্ট পানি প্রবাহের বাধা সৃষ্টি করছে বিধায় সেই পুরাতন কালভার্টটি অপসারণ এবং পার্শ্ববর্তী নালাগুলো পরিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সভায় সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বর্ষার আগেই চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থাগুলোকে জলাবদ্ধতা নিরসনে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। বিশেষ করে চলমান প্রকল্পগুলোর কারণে সৃষ্ট জনদুর্ভোগ যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন। নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বন্দরসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে একসাথে কাজ করতে হবে।
মেয়র বলেন, আমি বেশ কিছু খালে গিয়ে দেখলাম খালগুলো যেন ডাম্পিং স্টেশন হয়ে গেছে, যা শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে, কর্ণফুলীকেও হত্যা করছে। এজন্য আমার মনে হয় প্রয়োজনে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেয়া দরকার। যারা নিয়ম মানছে না, আইনের মধ্যে চলছে না অথবা সুন্দর শহর গড়ার আমাদের যে প্রত্যয় সেটার বিরুদ্ধে কাজ করছে, যারা নালা–খাল ময়লা–দখল করছে তাদের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চালু রাখতে হবে, প্রয়োজনে জোরদার করতে হবে।
তিনি বলেন, কেবল হাজার–হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প করে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব নয় বরং প্রকল্পের পাশাপাশি জনসচেতনতা, পরিবেশ রক্ষা ও পরিকল্পিত নগরায়নও জরুরি। বর্ষায় জনভোগান্তি নিরসনে ওয়াসাকে বর্ষার আগে সড়ক কর্তন বন্ধ রাখার আহ্বান জানান মেয়র।
সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম বলেন, সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প দ্রত এগিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনসহ জনস্বার্থে সব বিষয়ে চসিকের সাথে সিডিএ একযোগে কাজ করবে।
সভায় সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো. ফেরদৌস আহমেদ প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনকে অবহিত করেন। প্রকল্পটির কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা তুলনামূলক কম স্থানে হয়েছে এবং জমাটবদ্ধ পানি দ্রুত অপসারিত হয়েছে বলে জানান তিনি।
সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম এবং সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো. ফেরদৌস আহমেদ, মেয়রের জলাবদ্ধতা বিষয়ক উপদেষ্টা শাহরিয়ার খালেদ।