পহেলা বৈশাখ কিংবা বসন্ত উৎসবের মতো ইংরেজী নতুন বর্ষবরণে প্রিয়জনকে শুভেচ্ছা জানানোর প্রধান উপাদানই হচ্ছে ফুল। তবে এবার করোনা ভাইরাসের কারণে প্রতিটি উৎসবই ফিকে হয়ে গেছে। এছাড়া নতুন বর্ষকে (২০২১) বরণেও রয়েছে প্রশাসনের বিধি নিষেধ। বর্ষবরণে প্রশাসনের কড়াকড়ি এবং করোনা পরিস্থিতির থাবা পড়েছে ফুল ব্যবসায়।
কয়েকজন ফুল ব্যবসায়ী জানান, ফুলের ব্যবসা হয় মূলত উৎসব কেন্দ্রিক। এবার করোনার কারণে উৎসব আয়োজনেও ছিল সরকারি নিষেধাজ্ঞা। দীর্ঘদিন সামাজিক অনুষ্ঠান হয়নি। স্বাভাবিকভাবে দোকানের খরচ তুলতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমরা আশা করেছিলাম, করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালটাও শেষ হচ্ছে করোনাকে সঙ্গী করে। আগের বছর যে পরিমাণ ফুল বিক্রি হয়েছে, তার পাঁচ ভাগের একভাগ ফুলও বিক্রি হচ্ছে না। তারপরেও আমরা বাহারি ফুলের পসরা নিয়ে বসেছি।
চেরাগি মোড়ের ফুল বিক্রেতারা জানান, প্রতিটি উৎসবেই গোলাপের আলাদা একটি চাহিদা থাকে। এবার গোলাপের মধ্যে রয়েছে লাল, সাদা, অরেঞ্জ, হলুদ রঙের গোলাপ। এসব ফুলের বেশির ভাগই আসে চীন থেকে। বর্তমানে প্রতিটি দেশি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে। তবে চীনা গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৪০ টাকায়। প্রতিটি চীনা লিলি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা স্টিক ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, জারবেরা প্রতিটি ২০ থেকে ২৫ টাকা, প্রতিটি দেশি গ্লাডিওলাস ২০ থেকে ৩০ টাকা, প্রতি বান্ডেল জিপসি ফুল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাঁদা অর্কিড ৬০ থেকে ৭০ টাকা, রজনীগন্ধা স্টিক ৮ থেকে ১০ টাকা, ফুলের লহর ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং মাথার রিং ১৫০-২০০ টাকা, গাঁজরা ফুল ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার কারণে কেনাকাটায় ভাটা পড়েছে। ক্রেতাও আসছেন হাতেগোনা। আগের বছরগুলোতে প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে অনেকে ফুলের দোকানে ভিড় করতেন। এখন পরিস্থিতির কারণে সেটি বদলে গেছে। তারপরেও ব্যবসায়ীরা যে যার মতো করে বিভিন্ন ধরনের ফুলের পসরা সাজিয়েছেন।
চেরাগি মোড়ে আসা ফুল ক্রেতা তাসনুভা তাবাসসুম তিথি বলেন, নতুন বছর উপলক্ষে ফুল কিনতে এসেছি। বাবা-মা, ভাই, বোনকে ফুল দিয়ে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাব। ফুলের সাহচার্যে আসলে মন প্রফুল্ল হয়ে উঠে। প্রতিটি উৎসবে তাই আমি ফুল কিনতে ছুটে আসি। তবে ফুল বেপারিরা একটু বেশি দাম হাঁকাচ্ছেন।
ফুল ব্যবসায়ী আবুল মনছুর বলেন, ২০২০ সালের পুরোটাই একপ্রকার লোকসান দিতে হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্ববাজারে ফুলের দাম বেড়ে গেছে। এরমধ্যে দীর্ঘদিন তো চীন ও থাইল্যান্ড থেকে ফুল আসা বন্ধ ছিল। এখন যা আসছে, তার দামও আবার বেশি। অন্যদিকে ফুলের ব্যবসা আগের তুলনায় কমে গেছে। নতুন ইংরেজী বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে আমরা দোকানে ফুলের সংগ্রহ বাড়িয়েছি। তবে বেচাবিক্রি প্রত্যাশার ধারে কাছেও নেই।