আজ ৫ অক্টোবর ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’। আন্তর্জাতিকভাবে শিক্ষকদের সংহতি দিবস। বহু বছর পর বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক দিবস পালনের তালিকায় ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ পালনের জন্য গত বছর সরকারি পরিপত্র জারী করেছিল। গত বছর থেকেই সরকারি উদ্যোগে দিবসটি পালিত হচ্ছে। দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন পরবর্তী এবছর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালনে বিস্তারিত কর্মসূচি ও নীতিমালা ঘোষণা করেছে। ফলে সরকারি উদ্যোগে দিবসটি পালিত হবে। সরকারি স্বীকৃতির মধ্যদিয়ে শিক্ষকদের মর্যাদা সমুন্নত রাখার প্রয়াস এবং শিক্ষকদের প্রতি সংহতি প্রকাশ নিশ্চিত করায় শিক্ষকদের পক্ষ থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। ১৯৯৪ সাল থেকে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি–বাকশিস ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন আড়ম্বরপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালন করেছে। গত কয়েক বছর বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটির ব্যানারে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে জাতীয় পর্যায়ে। এ বছর সরকারি কর্মসূচিতে জাতীয় পর্যায়ে সরকারিভাবে গুণী শিক্ষকদের সম্মাননা ও স্বর্ণপদক প্রদান করার কর্মসূচি রয়েছ। ইউনেস্কো কর্তৃক ঘোষিত বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৪ এর মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে ‘শিক্ষকের কণ্ঠস্বর : শিক্ষায় নতুন সামাজিক অঙ্গীকার’।
গত বছর শিক্ষা ও শিক্ষকদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ চট্টগ্রামে চার জন বিশিষ্ট খ্যাতিমান ও নন্দিত শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মেসবাহ উল আলম (মরণোত্তর), অধ্যাপক দিদারুল ইসলাম, অধ্যাপক ফাউজুল কবির এবং অধ্যাপক মো. আবু তাহের চৌধুরীকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়াও ১৫ জন অবসরপ্রাপ্ত গুণী শিক্ষককে সংবর্ধিত করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস থেকে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’
বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালনের মতো শিক্ষকদের অনুকূলে এতবড় সিদ্ধান্ত রাতারাতি গৃহীত হয়নি অথবা জাতিসংঘের মতো বিশ্ব সংস্থা একদিনে মেনে নেয়নি। বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন দেশের শিক্ষক সংগঠন ও শিক্ষা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সাথে মতবিনিময় ও সমঝোতার ফলশ্রুতিতে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য এ ধরনের সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশের কিংবদন্তি প্রবীণ শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ এর প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী ড. কুইন্সি লেটসাম নামে এক প্রবীণ শিক্ষক নেতা সম্প্রতি বিশ্ব শিক্ষক দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে লিখেছেন যে, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ড টিচার্স ইউনিয়নের সভাপতি থাকাকালে তিনি ১৯৮২ সালে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ‘ওয়ার্ল্ড কনফেডারেশন অব অর্গানাইজেশনস অব দি টিচিং প্রফেশন’ world Confederation of Organizations of the Teaching Profession. (WCOTP) এর তিন দিনব্যাপী কর্মশালায় ‘আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস’ পালনের প্রস্তাব করেন যা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। তাঁর অভিমত, সম্ভবত বার্লিন প্রাচীরের অবসানের মতো ঘটনার কারণে পরবর্তীতে দিবসটির নামকরণ হয় ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’। ড. কুইন্সির বক্তব্যের যথার্থতা যাচাই করার জন্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ তাঁর দীর্ঘ ৩৫ বছরের পরিচিত ও বন্ধু কানাডিয়ান টিচার্স ফেডারেশনের সাবেক আন্তর্জাতিক কর্মসূচি পরিচালক রবার্ট (বব) এম বার্কারের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছেন ড. কুইন্সির মতো আরও অনেকে প্রস্তাব দিয়ে থাকতে পারেন, তবে সাংগঠনিকভাবে বিশ্বব্যাপী একটি স্বীকৃত ‘শিক্ষক দিবস’ উদযাপনের প্রস্তাবক তৎকালীন ‘ওয়ার্ল্ড কনফেডারেশন অব অরগানাইজেশনস অব দি টিচিং প্রফেশন’ (WCOTP) যা বর্তমান এডুকেশন ইন্টারন্যাশনালের পূর্বসূরী। ডব্লিউসিওটিপি সে সময়ের আরও দু’টি শিক্ষক সংগঠন ইফটু (IFFTU) ও ডব্লিউসিটি (WCT) এর সাথে যৌথভাবে ইউনেস্কো বরাবর প্রস্তাব পেশ করে যা পরবর্তীতে নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে ১৯৬৬ সালে ৫ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি লাভ করে।
বিশ্ব শিক্ষক দিবসে বাংলাদেশের শিক্ষকদের
অধিকার ও প্রত্যাশা
বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মীগণ এ বছরের বিশ্ব শিক্ষক দিবসটি পালন করছেন ছাত্র–গণ আন্দোলনের ফলে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, বিদ্যমান সামাজিক অস্থিরতা এবং দেশব্যাপী শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার প্রেক্ষাপটে। সারাদেশে শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীন। আইন, বিধি, নিয়ম, নীতিমালার তোয়াক্কা না করে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে শিক্ষকদের এবং শারীরিকভাবে নিগৃহীত হতে হয়েছে হাজার হাজার শিক্ষক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূর্বের ন্যায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে পরিবেশের চরম অবনতি ঘটেছে, প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে, ফলে দেশব্যাপী শিক্ষকরা চরম ক্ষুব্ধতা ও হতাশার মধ্যেই বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালন করবে। ২০২৪ এর বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালন প্রাক মুহূর্তে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র গণআন্দোলনের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পরিবর্তন শিক্ষকদের নতুন আশারও সঞ্চারিত হয়েছে। বিশেষ করে গত জুলাই–আগস্ট মাসে বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ বৈষম্যের বিরুদ্ধে এক অভূতপূর্ব ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের ১৬ বছরের শাসনের ইতি ঘটান। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ছাত্র গণআন্দোলনের মূল আকাঙ্ক্ষা রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংস্কার। সর্বক্ষেত্রে বৈষম্যের বিলোপ সাধন করে মানুষের সম–অধিকার প্রতিষ্ঠা, সামাজিক ন্যায় বিচার, সুশাসন নিশ্চিত করে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র তথা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভিত্তি প্রতিষ্ঠায় নানা সংস্কার করার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। স্বাভাবিকভাবেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বিদ্যমান সরকারি বেসরকারি বৈষম্য নিরসনের উদ্যোগ নেবেন শিক্ষকদের প্রত্যাশা। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও অঙ্গীকার অনুযায়ী সর্বজনীন, গণমুখী, বিজ্ঞান ভিত্তিক আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা জাতীয় শিক্ষার উন্নয়ন অগ্রগতির অপরিহার্য শর্ত।
গত বছরই প্রথম সরকারি উদ্যোগে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালনের জন্য দেশব্যাপী কর্মসূচি ও নীতিমালা ঘোষণা করেছে। দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বিদ্যমান নানা সমস্যা ও সরকারি বেসরকারি বিরাট বৈষম্য নিরসনে সরকারি কিছু প্রতিশ্রুতি বা পদক্ষেপ ঘোষণা হতে পারে সংগত কারণে শিক্ষকরা প্রত্যাশা করছে। রাষ্ট্রীয় নানা সংস্কারে শিক্ষার মতো একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ খাতকে উপেক্ষা করলে জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন মারাত্মক ব্যাহত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার, সংবিধান, ২০২৪ এর ছাত্র–গণ আন্দোলনের আকাঙ্ক্ষা এবং ১৯৬৬ সালের ৫ অক্টোবর প্যারিস সম্মেলনে গৃহীত ১৪৫ সুপারিশমালা ‘শিক্ষকদের মর্যাদা সনদ’ এর ১০ গ ও ঘ ধারার আলোকে শিক্ষাকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ঘোষণা তথা শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করার জন্য সুনির্দিষ্ট জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন এখন সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনার দাবি রাখে। বর্তমান পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ অঙ্গীকার আদায় করার জন্য বাকশিস ও ১১ টি শিক্ষক কর্মচারী সংগঠনের মোর্চা ‘বাংলাদেশ শিক্ষক–কর্মচারী সমিতি ফেডারেশন’ জোর প্রয়াস চালাবে বলে ঘোষণা করেছে।
সুনির্দিষ্ট জাতীয় নীতিমালার ভিত্তিতে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি– বাকশিস‘র অন্তর্র্বতীকালীন পেশাগত ১২ দফার সাথে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে মানব সম্পদ উন্নয়নে শিক্ষার আন্তর্জাতিক ও গুণগত মান প্রতিষ্ঠায় রয়েছে বিভিন্ন প্রস্তাবনা। দীর্ঘ পাঁচ দশকের অধিক সময় সাংগঠনিক কার্যক্রম, অব্যাহত আলোচনা ও আন্দোলন–সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীগণ মূল বেতনের শতভাগ অর্জন করতে পেরেছেন। তার সাথে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি, বৈশাখী ভাতা, সামান্য বাড়িভাড়া ভাতা ও চিকিৎসা ভাতা পাচ্ছেন। কিন্তু দেশের বাস্তবতার নিরিখে কোন ধরনের শিক্ষা দরকার, শিক্ষকতায় মেধাবীদের কিভাবে আকর্ষণ করা সম্ভব, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা কিভাবে অধিকতর কার্যকর করা যায়, শিক্ষা ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলের জবাবদিহিতা কীভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব তা বিভিন্ন সময়ে পরীক্ষা –নিরীক্ষা ও খণ্ডিতভাবে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হলেও সার্বিক বিবেচনা প্রসূত কোনো পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত হয়নি। শিক্ষাব্যবস্থায় বৈষম্য না কমে বরং ব্যাপক বেড়েছে। শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ক্রমবর্ধমান সামাজিক উপদ্রব হিসেবে দেখা দিয়েছে। পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থার কারণে একটি মহল শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করার প্রয়াস পেয়েছে। প্রতি বছর শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্ধ নিম্নমুখী। শিক্ষাখাতে বরাদ্ধের অপ্রতুলতার সাথে সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থী, শিক্ষার প্রায় ৯৫ ভাগ দায়িত্বপালনকারী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি অমার্জনীয় নিস্পৃহতা, শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থী, শিক্ষা কর্মীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য, শারীরিক ও মানসিক শাস্তিবিহীন আনন্দদায়ক পাঠগ্রহণে শিক্ষার্থীর বিশ্ব–স্বীকৃত অধিকার নিশ্চিতকরণে সংশ্লিষ্ট সকল মহলে অপারগতা ও উন্নত, যুগোপযোগী পাঠদানের জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার চিত্র অপরিবর্তিত। শিক্ষাকে খণ্ডিতভাবে দেখার ফলে, পশ্চাদপদ মানসিকতার কারণে শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত বিকাশ অব্যাহতভাবে বাধাগ্রস্ত হয়ে চলছে। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানকারী শিক্ষক ও শিক্ষার দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীদের যে মানবিক চাহিদা থাকতে পারে, ক্ষুধা নিবৃত্তি, চিকিৎসা লাভের অধিকার থাকতে পারে, পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ/ পূজা/ বড় দিন/ পার্বণ উদযাপনের, পেশাগত জীবনে সম–যোগ্যতা, সম–অভিজ্ঞতা ও সম–দায়িত্ব পালনকারীদের পদোন্নতির অনুরূপ অধিকার ও মর্যাদা প্রাপ্তির অধিকার থাকতে পারে বর্তমানে দেশের বেসরকারি শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের আর্থ–সামাজিক অবস্থান দেখে মনে হয়, জাতীয় শিক্ষানীতিমালার আলোকে তা কখনো সরকারের যথোপযুক্ত বিবেচনায় আসেনি। তারা যতটা না শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী তার চেয়ে বেশি ভিক্ষুকতুল্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন। ভিক্ষুককে যেমন নাম মাত্র কিছু দিয়ে বিদায় করা হয়, একইভাবে বেসরকারি শিক্ষকদের ১০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা, খণ্ডিতভাবে সিকিভাগ উৎসব ভাতা বহুবছর ধরে চলছে। সরকার আসে সরকার যায় কিন্তু শিক্ষার পঁচানব্বই ভাগ দায়িত্ব পালনকারী বেসরকারি শিক্ষকদের ভাগ্যের আর পরিবর্তন হয় না। নতুন প্রেক্ষাপটে শিক্ষকদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনাও সময়ের দাবি।
এবারে শিক্ষকদের প্রত্যাশার মধ্যে শিক্ষকদের অধিকার সংরক্ষণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় দেশব্যাপী শিক্ষক নিপীড়ন বন্ধ করা, শিক্ষক–শিক্ষার্থীর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন, শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিধিবিধান অনুযায়ী তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করা, শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষকদের যথাযথ মূল্যায়ন নাকি অবমূল্যায়ন হচ্ছে তার পর্যালোচনা, তাদের পেশাগত অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা, শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে শিক্ষকদের কর্মধারাসহ বিশ্ব শিক্ষক সম্প্রদায়ের সাথে বাংলাদেশের শিক্ষকদের অবস্থান এবারের বিশ্ব শিক্ষক দিবসে নতুন মাত্রায় মূল্যায়িত হবে।
লেখক : শিক্ষা ও শিক্ষক আন্দোলনের নেতা এবং
শিক্ষা প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক পরামর্শক