আজাদী প্রতিবেদন : প্রতি বছরের মতো এবারও তিনদিনব্যাপী র্যাডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে–ভিউতে শুরু হয়েছে ‘চট্টগ্রাম রিহ্যাব ফেয়ার–২০২৫’। গতকাল ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বরাবরের মতো এবারও মেলা ঘিরে ক্রেতাদের ঢল নামবে –সেই প্রত্যাশা করা হচ্ছে উদ্বোধনী দিনের লোকসমাগম দেখে। এবারের মেলায় চট্টগ্রামের ৩৯ টির বেশি নিবন্ধন করা আবাসন কোম্পানীর তিন শতাধিক প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়েছে চট্টগ্রাম রিহ্যাব ফেয়ারে। রিহ্যাব ফেয়ারের উদ্দেশ্য ও আবাসন খাতের বর্তমান অবস্থাসহ নানান বিষয় নিয়ে দৈনিক আজাদীর সাথে বিস্তারিত কথা বলেছেন রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান হাজী দেলোয়ার হোসেন।
# রিহ্যাব ফেয়ারের উদ্দেশ্য কী; ফেয়ার নিয়ে কিছু বলুন
হাজী দেলোয়ার হোসেন: আপনার আবাসন হোক সুনিশ্চিত–এই স্লোগান সামনে রেখে আমরা এবারের মেলার আয়োজন করেছি। প্রায় ৩৫ বছর ধরে রিহ্যাব এদেশের মানুষের জন্য একটি সুপরিকল্পিত আবাসন খাত নিশ্চিতকল্পে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতি বছর এই মেলার উদ্দেশ্য হলো– রিহ্যাবের নিবন্ধিত আবাসন কোম্পানী গুলোকে একই ছাদের নিচে নিয়ে আসা। যাতে ক্রেতারা নিজেদের পছন্দমত কোম্পানীগুলো থেকে নিজেদের পছন্দমত ফ্ল্যাট বেছে নিতে পারেন। এবারের মেলায়ও আমাদের নিবন্ধিত কোম্পানীগুলো ক্রেতাদের জন্য ৩০০টির বেশি আকর্ষণীয় প্রকল্প নিয়ে এসেছে। ক্রেতারা এই মেলায় যার যে দিকে ইচ্ছে–সে সেদিক থেকে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে কিনতে পারবেন। এ ছাড়া নির্মাণ সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক এবং বীমা কোম্পানীগুলোও রয়েছে এই মেলায়। মেলায় অনেক সুবিধা আছে উল্লেখ করে হাজী দেলোয়ার হোসেন বলেন, মেলায় সব কোম্পানী নিয়ে ক্রেতাদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা রেখেছে। এছাড়াও আছে নানান উপহার সামগ্রী।
# বর্তমানে চট্টগ্রামে আবাসন খাতের অবস্থা কেমন ?
হাজী দেলোয়ার হোসেন: শুধু চট্টগ্রাম নয়; সারাদেশে এতোদিন আবাসন খাত কঠিন সময়ে পার করেছে। এখন আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বিদেশ থেকে রেমিটেন্স আসছে। আবাসন খাতে গতি ফিরছে। চট্টগ্রামে অনেক বড় বড় কোম্পানী অত্যাধুনিক সুযোগ–সুবিধা সমৃদ্ধ নতুন নতুন সুদৃশ্য প্রকল্প (ভবন) বাস্তবায়ন করছে। যেগুলো খুবই উন্নত মানের–আধুনিক সুযোগ–সুবিধা সমৃদ্ধ। এই ধরনের প্রকল্পে ক্রেতারাও সাড়া দিচ্ছেন। আবাসন খাতে চট্টগ্রাম অনেক দূর এগিয়ে গেছে। ঢাকার সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের অনেক কোম্পানী আধুনিক সুযোগ–সুবিধা সমৃদ্ধ ভবন এবং ফ্ল্যাট নির্মাণ করছে। যা ক্রেতাদের আকর্ষণ করছে।
তবে সাম্প্রতিক কালে নির্মাণ সমগ্রীর দাম অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় আবাসন সেক্টরে এর প্রভাব পড়ছে। সরকারের প্রতি আমাদের দাবি–অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়া নির্মাণ সামগ্রীর দাম নিয়ন্ত্রণ করা।
# যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আবাসন খাতকে আপনারা কোন পর্যায়ে নিয়ে নিয়ে যেতে চান ?
হাজী দেলোয়ার হোসেন: বর্তমানে আমাদের রিহ্যাব সদস্য ভূক্ত কোম্পানী গুলো যে সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে–সবগুলোই ‘গ্রীণ প্রজেক্ট’ পরিবেশ বান্ধব–আন্তর্জাতিক মানের। ক্রেতারা তার কেনা একটি ফ্ল্যাটে গেলে যাতে মনে করতে পারেন তিনি পরিবেশের সান্নিধ্যে আছেন। সে লক্ষ্যে আমরা এখন যে প্রকল্পই গুলো গ্রহণ করি–সবার আগে পরিবেশের বিষয়টি মাথায় রাখি। মানুষ তার পছন্দের ফ্ল্যাটে গিয়ে যাতে মানসিক প্রশান্তি খুঁজে পায়; পরিবেশে ছোঁয়া পায়। আমাদের দেশের আবাসন খাত এখন অনেক দূর এগিয়ে গেছে। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের আবাসন খাতের যে সব কোম্পানী গুলো কাজ করছে তারা সব সময় উন্নত প্রযুক্তি, আধুনিক দৃষ্টি নন্দন ডিজাইন–সুস্থ–সুন্দর–নির্মল–বর্ণিল পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই প্রকল্প গ্রহণ করে এবং বাস্তবায়ন করছে। আমরা আমাদের আবাসন খাতকে সেই পর্যায়ে নিয়ে গেছি।
# মধ্যবিত্তদের জন্য আবাসন প্রতিষ্ঠান গুলোর কী পরিকল্পনা রয়েছে ?
হাজী দেলোয়ার হোসেন: সরকার যদি আমাদেরকে (আমাদের আবাসন কোম্পানী গুলোকে) একটু সহযোগিতা করেন তাহলে আমরা মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মধ্যবিত্তদের জন্য আমরা আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারবো। আমরা সরকারের কাছে বিভিন্ন সময়ে দাবি জানিয়ে আসছি। সরকারের অনেক সংস্থা আবাসন প্রকল্প করে থাকে। সেখানে যদি আমাদেরকে স্বল্পমূল্যে কিছু জায়গা দেন–তাহলে আমরা একেবারে স্বল্পমূল্যে মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মধ্যবিত্তদের কম দামের ফ্ল্যাট বানিয়ে দিতে পারি। তাছাড়াও সরকার যদি ব্যাংক গুলোকে বলে দেন মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মধ্যবিত্তদের দীর্ঘ মেয়াদী ফ্ল্যাটের বিপরীতে ঋণ দেওয়ার জন্য (২০ থেকে ৩০ বছর মেয়াদী) তাহলে মধ্যবিত্তদের জন্য আমরা আবাসন নিশ্চিত করতে পারবো। ফ্ল্যাটের বিপরীতে ব্যাংক গুলো দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ দিলে–একজন মধ্যবিত্ত পরিবার সাপ্তাহিক ও মাসিক কিস্তি পরিশোধ করতে পারবেন।