কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেনেগাল, ভারতের পর বিশ্বের তৃতীয় ‘অমনি প্রসেসর’ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রক্রিয়াটি পরিবেশ বান্ধব, পানি, মাটি ও বায়ু দূষণরোধে কার্যকরী জ্বালানি সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বর্জ্য শোধনে সক্ষম। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প–৪ এক্সটেনশনে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছেন কক্সবাজারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
ইতোমধ্যে গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী যে ১৪টি প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন তারমধ্যে উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থাপিত জ্বালানীবিহীন বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বর্জ্যশোধনে এটিও একটি। জ্বালানি সাশ্রয় ও পরিবেশ রক্ষায় এই প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী প্রকৌশলী মো. আবুল মঞ্জুর জানিয়েছেন, কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ৪ নম্বর এক্সটেনশন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে। প্রকল্পটির ভারতের অংকুর সাইয়েন্টিফিক ও বাংলাদেশের এসআর কর্পোরেশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পায়। শতভাগ ভৌত অগ্রগতি শেষে বর্তমানে পরীক্ষামূলক চালু করা হয়েছে। যার অর্থায়ন করেছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তিনি আরো বলেন, এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের প্রথম এবং বিশ্বের মধ্যে তৃতীয়। পরীক্ষামূলক চালু হওয়া প্রকল্পে প্রতিদিন ৩০ কিউবিট মিটার বা ৬ টন শুকনো পয়. বর্জ্য, ৫ টন জৈব বর্জ্য, ৫ শত কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ে মোট ১১.৫ টন বর্জ্য পরিশোধ করতে সক্ষম। যা থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬০–৭০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়েই মূল প্রকল্পের সকল যন্ত্রপাতি চালু রাখা হয়। ফলে এই প্রকল্পের জন্য কোনো প্রকার জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ বা ভিন্ন কোন বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না।
ডিপিএইচ, কক্সবাজারের নির্বাহী মোস্তফিজুর রহমান বলেন, যেখানে আমরা প্লাস্টিক বর্জ্য, অর্গানিক বর্জ্য থেকে একটি পরিকল্পিত পদ্ধতিতে এই ‘অমনি প্রসেসর’ এর মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের যাবতীয় বর্জ্যকে সুষ্ঠু ও পরিবেশবান্ধব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বার্ন করে পরিবেশকে যেমন সংরক্ষণ করা যাবে, তেমনি বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে এ এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা পূরণেও সক্ষম হবে।
সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সফলতার সাথে এই প্রকল্পটি চালু হলে, এটিকে পাইলট প্রকল্প ধরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ও জ্বালানিবিহীন বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে এই ‘অমনি প্রসেসর’ প্রযুক্তি প্রসার করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।