বরিস জনসন কি এবার টিকে থাকতে পারবেন

দলের ভেতর তীব্র চ্যালেঞ্জ, মন্ত্রিসভা থেকে ২৭ জনের পদত্যাগ

আজাদী ডেস্ক | বৃহস্পতিবার , ৭ জুলাই, ২০২২ at ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যে তীব্র বিদ্রোহ এবং মন্ত্রিসভা থেকে একের পর এক পদত্যাগের পর তার প্রধানমন্ত্রিত্ব রক্ষার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। গতকাল বুধবার পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে তাকে যে তীব্র প্রশ্নবানের মুখোমুখি হতে হয়, সেখানে অবশ্য তিনি বলেছেন, ২০১৯ সালের নির্বাচনে জনগণ তাকে বিপুল ম্যান্ডেট দিয়েছে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যেতে চান।
কিন্তু মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী দুজন মন্ত্রী মাত্র দশ মিনিটের ব্যবধানে পদত্যাগের পর জনসনের নেতৃত্ব এখন বিরাট হুমকির মুখে। বরিস জনসনের মন্ত্রিসভা থেকে এখন পর্যন্ত ২৭ জন পদত্যাগ করেছেন। গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর থেকে পদত্যাগের হিড়িক ওঠে। একে একে মন্ত্রিসভার ২৭ জন সদস্য পদত্যাগ করলেও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এখনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টিকে থাকার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। তার প্রেস সেক্রেটারি বলেন, যারা পদত্যাগ করেছেন তাদের পদে অন্যদের নিয়োগ দেওয়া হবে।
এরইমধ্যে ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদের পদত্যাগের পর একই পথে হেঁটেছেন দেশটির শিশু ও পরিবারমন্ত্রী উইল কুইন্স এবং জুনিয়র পরিবহনমন্ত্রী লরা ট্রট, আর্থিক সেবা বিষয়ক মন্ত্রী জন গ্লেন। পদত্যাগের ঘোষণায় শিশু ও পরিবারবিষয়কমন্ত্রী উইল কুইন্স বলেন, আমার পদত্যাগ ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। সরকারের ওপর আস্থা চলে যাওয়ায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন জুনিয়র পরিবহনমন্ত্রী লরা ট্রট।
করোনার বিধি লঙ্ঘন করে একাধিক পার্টি আয়োজন করে সমালোচিত হয়েছিলেন বরিস জনসন। এজন্য প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছিলেন তিনি। তবে বিষয়টি নিয়ে পদত্যাগের চাপে ছিলেন তিনি। যদিও তিনি পার্লামেন্টে তার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে উতরে যান। সরকার পরিচালনায় বরিস জনসনের সক্ষমতা নিয়ে নিজ দল ও দলের বাইরে তার ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। সম্প্রতি নতুন করে কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছেন তিনি। রক্ষণশীল দলের এমপি ক্রিস পিঞ্চারের বিরুদ্ধে যৌন অসদাচরণের অভিযোগ সম্পর্কে আগে থেকেই জানতেন বরিস জনসন। এরপরও তাকে সরকারের ডেপুটি চিফ হুইপ করেন তিনি। এ ঘটনা প্রকাশ্যে এলে আবারও ক্ষমা চান বরিস জনসন। তবে নিজ দল থেকেই এবার তার পদত্যাগের দাবি উঠেছে।
প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একজন মিত্র বিবিসিকে বলেছেন, এখন প্রশ্ন আসলে তিনি কিভাবে বিদায় নেবেন। তিনি আরও বলেছেন, পরিস্থিতি আর তার টিকে থাকার মত অবস্থায় নেই। বুধবার পার্লামেন্টে বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা কির স্টার্মারও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিকবার পার্লামেন্টে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দেবার অভিযোগ তোলেন। কিন্তু জনসন তার পদত্যাগের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তার সরকার অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভালো কাজ করছে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করে যাবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৩২ দিন পর আরো এক দেহাবশেষ উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধকালুরঘাট সেতু হবে পদ্মা সেতুর আদলে