বরাদ্দ ৩ লাখ, ডাটা আপলোড ১ লাখ ৫৭ হাজার

নগরে টিসিবির স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড । কার্ড দিয়েছে সাড়ে ১৩ হাজার, বন্ধ হয়ে গেছে ট্রাকসেলও

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৩১ মে, ২০২৫ at ৫:৩২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম মহানগরীর জন্য টিসিবির স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের বরাদ্দ রয়েছে ৩ লাখ ৯৬৩টি। গতকাল রাত পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নগরীর ৪১ ওয়ার্ড থেকে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪৮ ভোক্তার ডাটা আপলোড করেছে। কিন্তু টিসিবি এখনো পর্যন্ত চসিককে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড দিয়েছে মাত্র সাড়ে ১৩ হাজার। ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) গত জানুয়ারি থেকে সারা দেশে পূর্বের ফ্যামিলি কার্ড বাতিল করে ‘স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের’ মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যের পণ্য বিক্রি শুরু করেছে। যাদের নামে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বরাদ্দ হয়েছে শুধুমাত্র তারাই টিসিবির ন্যায্যমূল্যের পণ্য পাচ্ছে। গত জানুয়ারি থেকে প্রতি মাসে নগরীর কয়েক লাখ ভোক্তা সরকারের ন্যায্যমূল্যের পণ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

আগে চট্টগ্রাম মহানগরী ও উপজেলায় মিলে চট্টগ্রামে মোট ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫০ জন টিসিবির কার্ডধারী পরিবার প্রতি মাসে পণ্য পেতেন। এর মধ্যে নগরীতে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫০ জন এবং ১৫ উপজেলায় ২ লাখ ফ্যামিলি কার্ডধারী ছিলেন। কিন্তু গত জানুয়ারি থেকে আগের সকল কার্ড বাতিল করে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড চালু করেছে টিসিবি।

নতুন স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডে চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২ লাখ ৩৫ হাজার। কিন্তু গত জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় মাত্র ১ লাখ ২৫ হাজার পরিবার টিসিবির স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন টিসিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের অফিস প্রধান শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর ৪১ ওয়ার্ডের জন্য টিসিবির স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বরাদ্দ রয়েছে ৩ লাখ ৯৬৩টি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত নগরীতে মাত্র সাড়ে ১৩ হাজার পরিবার স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড পেয়েছেন। সিটি কর্পোরেশন ভোক্তাদের (কারা স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড পাবেন) তথ্য দিতে দেরি করছে।

তিনি বলেন, নগরীতে সিটি কর্পোরেশন স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের তালিকা দিতে দেরি করার কারণে আমরা নগরীর ২০টি পয়েন্টে ২০ ট্রাকের মাধ্যমে ‘ট্রাকসেল’ চালু রেখেছিলাম। যাতে গরিব লোকজন কার্ড ছাড়া লাইনে দাঁড়িয়ে টিসিবির ন্যায্যমূল্যের পণ্য নিতে পারেন। কিন্তু ট্রাকসেল আজকে থেকে (শুক্রবার থেকে) বন্ধ হয়ে গেছে। কখন চালু হবে তার ঠিক নেই। ঈদের আগে চালু হওয়ার সম্ভাবনা কম।

টিসিবির ওয়েবসাইটে ডাটা এন্ট্রি করার প্রক্রিয়া জটিল হওয়ার কারণে ঠিকমতো ডাটা এন্ট্রি করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন। তিনি গতকাল রাতে আজাদীকে বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত নগরীর ৪১ ওয়ার্ড থেকে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪৮ জন ভোক্তার ডাটা আপলোড করেছি। এখন পর্যন্ত টিসিবি ভেরিফাই করেছে ১ লাখ ৭০৯ জনের ডাটা। তবে টিসিবি স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড দিয়েছে মাত্র সাড়ে ১৩ হাজার। এরপরও আমরা প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে গড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ জনের ডাটা আপলোড করছি। ডাটা আপলোড করার পরও ভেরিফিকেশনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

চসিব সচিব বলেন, টিসিবির দেওয়া স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড অ্যাকটিভ করতে চেহারা শনাক্তকরণেও জটিলতা দেখা দিচ্ছে। সম্প্রতি টিসিবির মহাপরিচালক (ডিজি) চট্টগ্রাম সফরে এলে সিটি মেয়রের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় কার্ডের জটিলতার বিষয়গুলো তাকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, নগরীর প্রত্যেক ওয়ার্ডের গরিব ও অসহায় মানুষজন যাতে টিসিবির স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড পেতে হয়রানির শিকার হতে না হয় এজন্য সিটি মেয়র বিষয়টি মনিটরিং করছেন। তিনি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিটি করে দিয়েছেন।

টিসিবির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক অফিস থেকে জানা গেছে, গতকাল থেকে নগরীর ট্রাকসেলও বন্ধ হয়ে গেছে। ঈদের আগে ট্রাকসেল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরো বাড়বে।

এতদিন টিসিবি নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে প্রতিটি ২০টি স্পটে ২০ ট্রাকে করে খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি করত। টিসিবির ট্রাকের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে যে কেউ প্রতি কেজি মসুর ডাল ৮০ টাকায় ২ কেজি, প্রতি লিটার সয়াবিন ১৩০ টাকা করে ২ লিটার এবং প্রতি কেজি চিনি ৮৫ টাকা করে ১ কেজি চিনি কিনতে পারতেন একজন ক্রেতা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগুমাই বিলে ২২ কেজি ওজনের বোয়াল মাছ
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬