চলতি বছরে বন্যায় দেশের ৩৩ জেলায় এই পর্যন্ত দুইশ ৬৩ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৮৪ হাজার চারশ ৯৮ জন মানুষ। চলতি মৌসুমে তিন দফা বন্যায় দেশের উত্তর, উত্তর–পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বন্যায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৫৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য–তথ্য ইউনিটের (এমআইএস) ডেপুটি চিফ (মেডিক্যাল) ডা. এ বি মো. শামছুজ্জামান এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর বাংলানিউজের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের ৩০ জুন থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৩ জেলার বিভিন্ন এলাকায় ডায়রিয়া, আরটিআই, চর্মরোগ, চোখের প্রদাহ, সাপের কামড়ে, পানিতে ডুবে, বন্যাজনিত কারণে যেকোনো আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ও শ্বাসনালীর প্রদাহসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৮৬ হাজার ৪৯৮ জন। এছাড়া পানিতে ডুবে, ডায়রিয়ায়, সাপের কামড়ে, বজ্রপাতসহ অন্যান্য কারণে দুইশ ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি পানিতে ডুবে দুইশ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাপে কামড়ে মারা গেছে ৩২ জন। এছাড়া বজ্রপাতে ১৫ জন মারা গেছে। বাকিরা অন্যান্য কারণে মারা গেছে। জানা যায়, বন্যাকবলিত জেলাগুলোর মধ্যে ডায়রিয়া, আরটিআই, চর্মরোগ, চোখের প্রদাহ, সাপের কামড়, পানিতে ডুবে ও বন্যাজনিত কারণে যেকোনো আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ও শ্বাসনালীর প্রদাহসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এসব রোগে মাদারীপুরে সবচেয়ে বেশি ৩৯ হাজার আটশ নয়জন মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে টাঙ্গাইল জেলায় ৪৩ জন। আর জামালপুর জেলায় ৩২ জন মারা গেছে। অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, বন্যা দুর্গত এলাকায় বিভিন্ন রোগের মধ্যে এই পর্যন্ত ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে ২৯ হাজার সাতশ ২৬ জন। চর্মরোগে ১৯ হাজার ছয়শ ৮২ জন। এছাড়া আরটিআইএ ১০ হাজার নয়শ ৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। বাকিরা অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়েছে। বন্যা দুর্গত ৩৩ জেলায় সাধারণ মানুষের আশ্রয়ের জন্য এখন আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে পাঁচশ ১৫টি। এসব এলাকায় দুর্গত মানুষের চিকিৎসার জন্য দুই হাজার আটশ ৪২টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।
এদিকে সিভিল সার্জন, স্থানীয় প্রশাসন জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সবসময় তদারকি করছেন। সরকারের মন্ত্রণালয়গুলো সমন্বিতভাবে বন্যাপরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও অন্যান্য ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে। আক্রান্তদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে।