দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়ার পর এবার নিবন্ধন কার্যক্রমও বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল বুধবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে এখনও ১৪ লাখ টিকা সংকট রয়েছে। তাছাড়া টিকার চালান চুক্তিমতো আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। যে কারণে আপাতত যাদের নিবন্ধন করা আছে তাদেরই টিকা দেওয়া শেষ করতে চাই আমরা। টিকা নিশ্চিতের পর আবার নিবন্ধনের সুযোগ দেয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, নতুন করে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া যখন শুরু হবে, সে সময় আবার নিবন্ধন চালু করা হবে। এর মধ্যে আমরা বাকি টিকাগুলো দিতে থাকব। করোনা প্রতিরোধে গত ৭ ফেব্রুয়ারি একযোগে দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। গত ২৬ এপ্রিল করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত সর্বমোট টিকা নিয়েছে ৯০ লাখ ৩০ হাজার ৩২০ জন। এর মধ্যে প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৮১১ জন এবং দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছে ৩২ লাখ ১০ হাজার ৫০৯ জন। সে হিসেবে আরো ২৬ লাখ ৯ হাজার ৩০২ জনকে দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। কিন্তু দেশে টিকা মজুদ আছে ১১ লাখ ৬৯ হাজার ৬৮০ ডোজ। ফলে আরো ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৬২২ ডোজ টিকার ঘাটতি রয়েছে।
করোনা মহামারী মোকাবেলায় সরকার দেশের ১৩ কোটির বেশি মানুষকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নেয়। সেই লক্ষ্যে গত নভেম্বরে সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩ কোটি ডোজ টিকা আনতে চুক্তি করে সরকার। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা আসার কথা ছিল। তবে জানুয়ারিতে প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ, ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় চালানে ২০ লাখ ডোজ মিলিয়ে ৭০ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাওয়া গেছে আরও ৩২ লাখ ডোজ টিকা। ভারতে করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় দেশটি টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। ফলে বাংলাদেশের কেনা বাকি ২ কোটি ৩০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার ‘স্পুৎনিক-ভির’ এবং চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় সরকার।