বন্ধু হয়ে থাকার চেয়ে অসময়ে বন্ধু হয়ে ওঠাই বড় বিষয়

হৈমন্তী তালুকদার | সোমবার , ২৬ আগস্ট, ২০২৪ at ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ

বিপদে বন্ধুর পরিচয়। বন্ধুত্ব হলো একটা দাঁড়িপাল্লা, কোনদিকে কম কোনদিকে বেশি হলো এর সঠিক ওজন হয় না। একতরফা কখনোই কোনো গভীর সম্পর্ক তৈরি হয় না, রোজ রোজ কথা বললেও কিন্তু বন্ধু হয় না। আবার কথা নেই যোগাযোগও নেই কিন্তু দায়িত্ববোধ ঠিকই থাকে কিছু বন্ধুত্বে। সুখেদুখে একজন বন্ধুর মনোযোগ তাঁর মনোভাব প্রকাশ পায়। বন্ধু বিষয়টাতে মনোযোগ, ভালোবাসা, আন্তরিকতা থাকতে হয়, দুজনের মধ্যে সমঝোতা থাকতে হয়, বোঝাপড়া আসলেই সেটা আলগা হতে একসময় গিট খুলে যায়। দূরত্ব বাড়ে, তখন শুধু একটা চেনা মুখ হয়েই থাকে। একেক বন্ধু একেক অনুভূতির ধারণ করে, সব বন্ধু হলেও সবাইকে সব কিছু বলা যায় না, বোঝানোও যায় না। কিছু বন্ধু মনের খেয়ালে আসে আবার মনের খেয়ালেই বিদায় নেয়। ভালো মন্দ নিয়েই যে পাশে থাকে সেই প্রকৃত বন্ধু। ঠিক সেইরকম আত্মার সাথে যে আত্মার সম্পর্ক সেটাই আত্মীয়। সুসময়ে নয় অসময়ে যারা পাশে থাকে তারাই আত্মীয়। অসময় একদিন চলে যায় কিন্তু অসময়ের আঘাতগুলো ঠিক মনে থেকে যায়। কেউ কারো সমস্যার সমাধান করতে পারে না, কিন্তু অতীতের কথা মনে রেখে মানুষের সমবেদনা, সাহস আর শুভকামনা একটা মানুষের জন্য অনেক শক্তি। দিন যায় কথা থেকে যায়, অসময়ে এড়িয়ে যাওয়া মানুষগুলো সবসময় একইরকম হয়। এরা সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী বিপদ দেখলেই সরে পড়ে। কিন্তু সুসময় আসলে যোগাযোগ বাড়িয়ে দেয়। অসময়ে এদের চেনা খুব সহজ। একজন সত্যিকারের ধার্মিক মানবতাকে ধর্ম মনে করে এবং সব ধর্মকে শ্রদ্ধা করে।

ঠিক তেমনি আসল ধর্ম হলো মানুষের বিবেক, মানুষের সহানুভূতি ও মহানুভবতা। মানুষের জন্য অর্থ দিয়ে সবাই করতে পারে না কিন্তু সুসময়ে উপকারগুলো মনে রেখে সুন্দর সদয় আচরণ মনে রেখে হলেও মানুষের পাশে মন থেকে ঠিক পাশে থাকাটা তেমন কঠিন নয়। সবার জীবনে অসময় আসা ভালো তাহলে মানুষের সঠিক রূপ আপনার অসময়ের আয়নায় দেখতে পাবেন। বন্ধু শব্দটা এখন এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুব সহজ একটা বিষয়। বন্ধু হয়ে থাকা আর বন্ধু হয়ে ওঠা কিন্তু আসলেই এক নয়। তাই কথায় বলে সব অনুসরণকারী কখনো তোমার বন্ধু নয়। দেশের এই দুঃসময়ে আমরা সবাই খুব খারাপ পরিস্থিতি পার করছি, ইতিমধ্যে আঘাত হেনেছে বন্যা। সকল দুর্যোগ থেকে আমরা কাটিয়ে উঠতে পারি শুধু বন্ধু হয়ে, মানবিকতার হাত বাড়িয়ে। বিপদেই বন্ধুর পরিচয় হয়। এখন দেশের স্বার্থে সকলকেই মনে ও মননে এক ও একতাবদ্ধ হয়ে সুন্দর চিন্তা ও বিবেকবান হয়ে একে অপরের সাথে অযথা দ্বিমত পোষণ না করে ভালো কিছুর উদ্দেশ্যে একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সবকিছু হারিয়ে ও অনেক ভালো কিছু হওয়ার প্রত্যাশায় এ দেশ এগিয়ে যাক বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে বন্ধু হয়ে জনগণের জন্য। সব আঁধার কেটে যাক আলো আসুক আগামীর হাত ধরে। সততার জয় হোক, সত্যের জয় হোক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ান
পরবর্তী নিবন্ধআইয়ুন, বানভাসি মাইনষেরলাই ভালোবাসার হাত বাড়াই