‘বন্ধু রাষ্ট্রে’ সালাহউদ্দিন কীভাবে এতদিন নিরাপদে : ফখরুলকে কাদের

| বৃহস্পতিবার , ২৩ মে, ২০২৪ at ৯:২৮ পূর্বাহ্ণ

ভারতে গিয়ে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার খুন হওয়ার ঘটনায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন ওবায়দুল কাদের। ‘বন্ধু রাষ্ট্রে গিয়ে খুন বলে’ বিএনপি মহাসচিব যে টিপ্পনী কেটেছেন, তার জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, এই ধরনের অপবাদ কেন দিচ্ছে বন্ধু রাষ্ট্রকে?

গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সাংস্কৃতিক উপকমিটির আয়োজনে ‘সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায়’ বিষয়ে এক আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।

কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব বলেছেন, বন্ধু রাষ্ট্রে গিয়ে নিরাপত্তা নাই। আপনাদের যদি ‘শত্রু রাষ্ট্র’ হয়, সেখানে সালাহউদ্দিন (বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ) এতদিন নিরাপদে কেমন করে আছেন। তাকে তো কেউ হত্যা করেননি। তার জীবনে তো নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়নি, জীবনের কোনো হানি ঘটেনি। এই ধরনের অপবাদ কেন দিচ্ছে বন্ধু রাষ্ট্রকে?

২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি যখন আন্দোলন করছিল, তখন দলের যুগ্ম মহাসচিবের পদে ছিলেন সালাহউদ্দিন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময়ে দলের মহাসচিবসহ অনেক সিনিয়র নেতাকে গ্রেপ্তার করা হলে সালাহউদ্দিন দলের মুখপাত্র হিসেব আত্মগোপনে থেকে গণমাধ্যমে কথা বলতেন। রহস্যময়ভাবে নিখোঁজ হওয়ার ৬৩ দিন পর ২০১৫ সালের ১১ মে সিলেটের ওপারে মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতের প্রবেশের অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার দেখায় মেঘালয় থানা পুলিশ। একই বছরের ২২ জুলাই ভারতের বিচারিক আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়। ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি শিলং জজ আদালত তাকে খালাস দেয়। তবে পাসপোর্ট না থাকায় বিএনপি নেতা ফিরতে পারছেন না। এর মধ্যে গত বছরের ৮ জুন বাংলাদেশে ফিরতে ট্রাভেল পাস পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানান বিএনপি নেতা। কিন্তু এক বছরেও তিনি ফেরেননি। আনোয়ারুল আজীমের ঘটনা নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কলকাতার নিউটাউনে আমাদের একজন এমপি হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছেন। গত দুই তিন দিন ধরে তাকে নিয়ে একটা ধোঁয়াশা ছিল। তার পরিবারসহ কেউ জানে না। চিকিৎসা জন্য তিনি ভারতে গেছেন। ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। আমাদের একজন এমপি যখন চিকিৎসার জন্য যান, তিনি কিন্তু ভারত সরকারকে জানিয়ে যান না। সেখানকার যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে গেলে নিরাপত্তার ব্যাপারটি তখনই দেখা হয়। এখানে বন্ধু রাষ্ট্রের। তাকে (আনোয়ারুল আজীম) যে ফ্ল্যাটটিতে হত্যা করেছে, সে ফ্ল্যাটটি বাংলাদেশের কেউ ভিন্ন নামে ক্রয় করেছে। ওখানে যারা হত্যা করেছে পাঁচছয়জনের মত, এর মধ্যে পাঁচ জনই বাংলাদেশের। এই ব্যাপারটা নিয়ে ‘যার দেখতে নাড়ি, চলন বাঁকা’, এই ধরনের উক্তি করা সমীচীন না। একই দিন দুপুরের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই বিষয়টি নিয়ে বলেছিলেন, বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক নয়, তাদের তথাকথিত একজন সংসদ সদস্য বিদেশে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গেলেন। তার কোনো খবর দিতে পারলেন না তারা। না পারল বাংলাদেশ সরকার, না পারল তাদের বন্ধু রাষ্ট্র ভারত। তাহলে আমরা কী মনে করব? দুর্নীতি করা, বিদেশের মাটিতে টাকার পাহাড় তৈরি করা, এটাই ঘটনা কিনা আমরা জানি না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে ইউসেপ কাজ করে যাচ্ছে
পরবর্তী নিবন্ধকেন্দ্রীয় ১৪ দলের সভা আজ