২০১৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর বিকেলে বন্ধু মুসা হোসাইন ও হাবিবুর রহমান সাজু আগ্রাবাদ টিএন্ডটি কলোনিতে থাকা অবস্থায় তাদের অপর বন্ধু মনসুর আহম্মদকে ফোন দেন। ফোন পেয়ে মনসুর টিএন্ডটি কলোনিতে সাজুর বাসায় যান। সাজুর রুমে ওয়ারড্রপের ওপর একটি ব্যাগ মনসুরের পছন্দ হয়। ব্যাগ থেকে সাজু ছোট একটি পিস্তল বের করেন। কৌতুহলী হয়ে মুসা ও মনসুর পিস্তলটি নাড়াচাড়া করে দেখতে থাকেন। তারা কেউ জানতেন না যে পিস্তলটি লোড করা অবস্থায় আছে। মনসুর পিস্তলটি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করার সময় অসাবধানতাবশত পিস্তলের ট্রিগারে চাপ পড়ে। গুলি গিয়ে লাগে তার বাম চোখে। মুসা ও সাজু মনসুরকে চিকিৎসার জন্য
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসককে তারা বলেন মনসুর চোখে পাথরের আঘাত পেয়েছেন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মনসুরের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে মুসা ও সাজু পলাতক ছিলেন। তারা রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় নানা সময়ে নিজেদের আত্মগোপন করেন। একপর্যায়ে আসামি মুসা হোসাইন আত্মগোপনের জন্য অবৈধভাবে ভারতের আগরতলায় অনুপ্রবেশ করে অবস্থান করেন, কিন্তু তার নামীয় ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করতে না পারায় পুনরায় বাংলাদেশে ফেরত আসেন এবং পূর্বের বেশভুষা পরিবর্তন করে লম্বা দাড়ি রেখে পায়জামা পাঞ্জাবী পরিধান করে তাবলীগ জামাতের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে নাম পরিবর্তন করে নারায়ণগঞ্জ জেলায় আত্মগোপনে থাকেন। মনসুরের মৃত্যুর ছয় মাস পরে তার স্ত্রী হালিশহর থানায় একটি মামলা করেন।
ঘটনার ৬ বছর পর নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রেমতলা এলাকা থেকে মুসা হোসাইন এবং তার দেওয়া তথ্যে নগরীর আগ্রাবাদ এলাকা থেকে হাবিবুর রহমান সাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের আদালতে উপস্থাপন করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। এর মধ্যে মুসা হোসাইন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং অপরজন হাবিবুর রহমান সাজুর ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। নগর পুলিশের এডিসি (প্রসিকিউশন) কামরুল হাসান আজাদীকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, মামলার ভিকটিম মনসুর আহম্মদ বিএসআরএম এ চাকরি করতেন। দুই আসামির মধ্যে মুসা হোসাইন একজন গাড়ি চালক এবং হাবিবুর রহমান সাজু ঠিকাদারী ব্যবসার পাশাপাশি স্থানীয় রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনজনই চাঁদপুর জেলার বাসিন্দা এবং তারা একে অপরের বন্ধু।












