চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে চ্যাম্পিয়ন দল নির্ধারণ হয়ে গেছে আগেই। বাকি আছে লিগের রানার্স আপ দল নির্ধারনের। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ক্রীড়া সমিতি এবং কোয়ালিটি স্পোর্টসের খেলায় দুটি দলেরই রানার্স আপ হওয়ার সুযোগ ছিল। কারন এ খেলার আগে বন্দরের পয়েন্ট ছিল ৮ খেলা শেষে ১৪ এবং কোয়ালিটির সমান খেলায় ১৫ পয়েন্ট। কোয়ালিটি জিতলেই ৩ পয়েন্ট যোগ করে রানার্স আপ হয়ে যেত। অন্যদিকে বন্দর জিতলে তাদের পয়েন্ট হতো ১৭। সেক্ষেত্রে অবশ্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরের খেলার জন্য অপেক্ষা করতে হতো বন্দরকে। সিটি তাদের পরের খেলায় জিতলে তাদেরও পয়েন্ট হতো ১৭। তখন গোল ব্যবধানে রানার্স আপ নির্ণয় করা হতো। কিন্তু গতকাল চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে লিগের রানার্স আপ নির্ধারিণী এ ম্যাচে কোয়ালিটি এবং বন্দর গোলশূন্য ড্র করে। ফলে ৯ খেলা শেষে কোয়ালিটির পয়েন্ট এখন ১৬ এবং বন্দরের ১৫। তাদের এ ড্রয়ে কপাল খুলে যায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একাদশের। সিটি ৮ খেলা শেষে ১৪ পয়েন্ট পেয়েছে। কাল ৯ নভেম্বর শেষ খেলায় তারা কাস্টমসের মোকাবেলা করবে। এ খেলায় জয় পেলেই ১৭ পয়েন্ট নিয়ে তারাই রানার্স আপ হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করবে। ড্র আর পরাজিত হলে রানার্স আপ দৌড় থেকে ছিটকে যাবে তারা। সেক্ষেত্রে কোয়ালিটির ভাগ্যেই জুটবে লিগ রানার্স আপের সন্মান।
গতকাল দু’দলই আক্রমন প্রতি আক্রমণ করে খেলে। তবে গোলরক্ষককে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো কোন আক্রমণ পরিচালনা করতে পারেনি কোন দলই। ফলে প্রথমার্ধ থাকে গোলশূন্য অমিমাংসিত। দ্বিতীয়ার্ধে গোল খরা কাটাতে পারেনি কোয়ালিটি-বন্দরের কেউই। ২৫ মিনিটের সময় একটা সুযোগ পায় কোয়ালিটি। বঙে ঢুকে গিয়েছিলেন দলের সাব্বির আহমেদ। কিন্তু তিনি শট নিতে দেরি করলে বন্দর ডিফেন্স পরিস্থিতি সামাল দেয়। ফলে গোলের ভালো একটি সুযোগ মিস করে কোয়ালিটি। ৩৮ মিনিটে কোয়ালিটি ১০ জনের দলে পরিণত হয়। দলের কবির আহমেদ ফাউলের অভিযোগে দুবার হলুদ কার্ড প্রাপ্ত হলে তা লাল কার্ডে পরিণত হয়। তিনি মাঠ ছাড়েন। এরপর বন্দর একটি সুযোগ মিস করে। কোয়ালিটি দলের খেলোয়াড়দের এ সময় মারমুখি হয়ে খেলতে দেখা যায়। ফাউল করার প্রবণতা বেড়ে যায় তাদের মধ্যে। বন্দরের খেলোয়াড়রা তাতে মৃদু অংশ নিতে থাকে। ইনজুরি টাইমে দু’দলের খেলোয়াড়দের হাতাহাতি করতে দেখা যায়। রেফারী এ সময় বন্দরের আবদুল্লাহ ওমর সজিবকে সরাসরি লাল কার্ড দেখান। কোয়ালিটির একজনকে দেখান হলুদ কার্ড। একটু পরেই রেফারী শিমুল বড়ুয়া খেরা শেষে বাঁশি বাজিয়ে দেন। খেলা শেষ হওয়ার পর কোয়ালিটি দলের খেলোয়াড়রা উত্তেজিত হয়ে উঠেন। তারা রেফারীর দিকে মারমুখি ভঙ্গীতে এগিয়ে যান। বিশেষ করে কোয়ালিটি কিপার সাইফুল ইসলাম খাঁন রেফারীর গায়ে হাত তুলতে ঘন ঘন এগিয়ে যান। এক পর্যায়ে রেফারীকে মেরেও বসেন তিনি। তারপরও ক্ষান্ত হতে দেখা যায়নি তাকে। রেফারিং নিয়ে অভিযোগকে কেন্দ্র করেই তার এমন অগ্নিমূর্তি বলে জানা যায়। দলের খেলোয়াড়রাও এসময় তাকে ঘিরে ছিলেন। চতুর্থ রেফারীসহ চার রেফারী কোনক্রমে দ্রুত মাঠ ত্যাগ করেন। কিছু পরে ফ্লাড লাইটের আলো নিভিয়ে দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যায়। গতকালের খেলায় ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন কোয়ালিটি স্পোর্টস ক্লাবের সজল আহমেদ। তাকে ম্যান অব দ্যা ম্যাচের ক্রেস্ট প্রদান করেন সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় এডওয়ার্ড জ্যাকভ।
আজ প্রিমিয়ার লিগের কোন খেলা নেই। প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে আজ দুটি খেলা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম খেলায় অংশ নেবে শতদল ক্লাব-ফিরিঙ্গীবাজার লাকী স্টার ক্লাব (বিকাল-৩.৩০টা)। দ্বিতীয় খেলায় অংশ নেবে বাকলিয়া একাদশ-বাংলাদেশ রেলওয়ে রেঞ্জার্স (বিকাল-৫.৩০টা)। দুটি খেলাই এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।