বন্দরে পণ্য হ্যান্ডলিং বন্ধ

বহির্নোঙরেও কাজ বন্ধ, খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৫ অক্টোবর, ২০২৩ at ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য হ্যান্ডলিং পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। জেটিতে থাকা সব জাহাজকে গভীর সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বহির্নোঙরের কাজ। মাদার ভ্যাসেলগুলো অলস ভাসছে। সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সব লাইটারেজ জাহাজ। ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবেলার প্রস্তুতি হিসেবে জরুরি বৈঠকের পর বন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সারা দেশে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে। লাইটারেজ জাহাজ এবং মাছ ধরার ট্রলারসহ সব নৌযান নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছে।

এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় কন্ট্রোল রুম চালুসহ সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। বন্দর সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানান, ঘূর্ণিঝড় হামুন উপকূলের ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসায় চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠানামা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েলের সভাপতিত্বে এক জরুরি সভায় এই নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি বলেন, বন্দরের সব স্টেকহোল্ডারের সাথে সভা করে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দিয়েছি।

সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে, বন্দরের জেটিতে থাকা জাহাজগুলোকে বহির্নোঙরে চলে যেতে বলা হয়েছে। সকালের জোয়ারে চারটি জাহাজ বন্দরের জেটি ছেড়ে গেছে। বাকি জাহাজগুলোও বিকেলে বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। জেটিতে মোট ২২টি জাহাজ ছিল।

পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত জাহাজগুলোকে গভীর সাগরে থাকতে বলা হয়েছে। আজকের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বন্দর সচিব বলেন, যেসব ভারী যন্ত্র সরাতে হবে সেগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর যেগুলো বেঁধে রাখতে হবে সেগুলো বেঁধে রাখা হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতি পুরোপুরি সম্পন্ন। তিনি বলেন, বন্দরের পণ্য হ্যান্ডলিং কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হলেও দাপ্তরিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সংকেত ৫এর উপরে উঠলে বন্দরের ‘এলার্ট৩’ জারি করা হয়। আমরা সে অনুযায়ীই ব্যবস্থা নিয়েছি।

এলার্ট৩ বন্দরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত। আবহাওয়া অফিস ৮, ৯ বা ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বললে তখন বন্দরের সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত এলার্ট৪ জারি করা হয়। এলার্ট৩ জারি হলে বন্দরের জেটি থেকে সব জাহাজ সাগরে সরিয়ে নিতে হয়। পাশাপাশি বন্দরের যন্ত্রপাতি ও স্থাপনার সুরক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার প্রস্তুতি হিসেবে বন্দর কর্তৃপক্ষ উপরোক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে। বন্দরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বন্দরের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিছুটা সংকট তৈরি হবে। তবে এর বিকল্পও নেই।

এদিকে বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থানকারী ৪০টির মতো জাহাজের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এসব জাহাজ থেকে লাইটারেজ জাহাজে পণ্য খালাস করা হচ্ছিল। লাইটারেজ জাহাজের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল (ডব্লিউটিসি) জানায়, বহির্নোঙরে অবস্থানকারী দেড়শর মতো লাইটারেজ জাহাজকে বন্দর চ্যানেলের উজানে শাহ আমানত সেতুর পাশে নোঙর করে রাখা হয়েছে।

ডব্লিউটিসির নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশীদ জানান, জাহাজগুলোকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জাহাজগুলো আবার কাজে যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅনেক কিছু বলার আছে, কিন্তু এটা কথা বলার ঠিক সময় না : রিয়াদ
পরবর্তী নিবন্ধঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাব পড়েনি বিমান উড্ডয়নে