জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নগরীর ডবলমুরিং থানার মামলায় টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে আরো দুজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা হলেন, ইসলামী ব্যাংক টেকনাফ শাখার সাবেক ম্যানেজার (বর্তমানে নগরীর আগ্রাবাদ শাখার এরিয়া হেড ও ব্রাঞ্চ ইনচার্জ) আব্দুল নাসের ও একই ব্যাংকের কক্সবাজার শাখার সাবেক অফিসার (বর্তমানে হেড অফিসে এভিপি হিসেবে কর্মরত) মিজানুর রহমান। গতকাল চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মো. কবির উদ্দিন প্রমাণিক এ দুজন সাক্ষীর সাক্ষ্য রেকর্ড করেন। এ সময় আসামি আব্দুর রহমান বদি কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।
কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে দুপুর ১২ টায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। পরে আদালতের কার্যক্রম শেষে দুপুর সাড়ে ১২ টায় তাকে ফের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আওয়ামী সরকার পতন পরবর্তী টেকনাফ থানার একটি হত্যা মামলায় নগরীর জিইসি এলাকায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রথমে কক্সবাজার কারাগারে এবং পরে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।
দুদক পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু আজাদীকে বলেন, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন মামলায় এ নিয়ে বদির বিরুদ্ধে ৪১ সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। আগামী ৭ জানুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। পিপি বলেন, এ মামলার বিচারকাজে নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছে। চার্জগঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে (কোয়াশমেন্ট) হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন বদি। কিন্তু আদালত সেটি খারিজ করে দেয়। এর বিরুদ্ধে তিনি আপিল বিভাগে আপিল করলে সেটিও খারিজ হয়। পরে রিভিউ পিটিশন দাখিল করলে আপিল বিভাগ তাও খারিজ করে দেয়। ২০০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর নগরীর ডবলমুরিং থানায় টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগে মামলাটি করেন দুদকের সাবেক উপ–পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয় বদি, স্ত্রী শাহীন আকতার ও মেয়ে সামিয়া রহমানের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ মোট ১ কোটি ১১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৭ টাকা। কিন্তু দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ও ২০০৬ থেকে ২০০৭ কর বর্ষের রিটার্নে বদি যথাক্রমে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন ৫৬ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকা ও ৩১ লাখ ৯৬ হাজার ৫৮০ টাকা। সে হিসেবে বদি সর্বমোট ৭৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭৯৭ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। যা তিনি অবৈধ উপায়ে অর্জন করেছেন। আইন অনুযায়ী এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আদালতসূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ২৪ জুন এ মামলায় আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল হয়। এর এক যুগ পর ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর চার্জগঠনের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়। আদালতসূত্র আরো জানায়, ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের ৮ জুলাই পর্যন্ত এ মামলা উচ্চ আদালত কর্তৃক স্থগিত ছিল।