উভয় বাংলার খ্যাতনামা বাম বুদ্ধিজীবী, প্রখ্যাত রাজনৈতিক ইতিহাস গবেষক, বহু প্রশংসিত গ্রন্থের রচয়িতা, চট্টগ্রাম কলেজ ও পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ১৯৬৮ সালে শিক্ষকতার পেশা ছেড়ে সার্বক্ষণিকভাবে তৎকালীন পিকিংপন্থী কমিউনিস্ট রাজনীতিতে যোগ দেয়া, আমৃত্যু চলনে–বলনে, বস্তুবাদী মতাদর্শী, নিজ বিশ্বাসে আমৃত্যু অটল, বদরুদ্দিন উমরের ৯৪ বছরের দীর্ঘ এক বর্ণাঢ্য জীবনের পরিণত পরিসমাপ্তি ঘটল। ১৯৩১ সালে তিনি বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫০ সালে বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হবার পর পরই তাঁর পিতা অবিভক্ত বাংলার মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক উদারবাদী রাজনীতিক আবুল হাশিমের সাথে দেশ ত্যাগ করে ঢাকা এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে ভর্তি হন। পরে সেখানেই কিছুদিন অস্থায়ী প্রভাষকের কাজ করেন। এরপর চট্টগ্রাম কলেজে এক বছরের মত দর্শনে শিক্ষকতা করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগ দেন। পারিবারিকভাবেই তিনি রাজনীতির সংস্পর্শে আসেন। তাঁর পরিবারের মধ্যেই ছিল কংগ্রেস, মুসলিম লীগ ও কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থিত লোকজন। স্কুল জীবন থেকেই তাঁর ঝোঁক ছিল কমিউনিস্ট ভাবাদর্শের প্রতি যদিও ছাত্রাবস্থায় তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। ১৯৬০ এর দশকে তিনি পুরোদমে লেখালেখির কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ‘সংস্কৃতির সংকট’, ‘সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা’ এ সময়ে তাঁর দুটি উৎকৃষ্ট প্রকাশনা। তবে তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠকীর্তি বা ‘ম্যাগনাম ওপাস’ হল ভাষা আন্দোলনের উপর গবেষণাধর্মী তিনখণ্ডে রচিত ইতিহাস ‘ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন পূর্ব বাংলার রাজনীতি’। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাসের পাঠক ও শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য তা এখনো গুরুত্বপূর্ণ।
বাম রাজনীতিতে বিশুদ্ধবাদিতার তত্ত্বতালাশের একটি বিশ্বজনীন বিভ্রান্তির ধারা সবসময় ছিল। যে লেনিন প্লেখানভকে রাশিয়ার প্রথম মার্কসবাদী বলে অভিহিত করেছেন সেই প্লেখানভই লেনিনকে বাম ও বিপ্লব বিরোধী বলে রুশ বিপ্লব পর্যন্ত লেনিনের বিরোধিতা করলেন। ১৯০৫ সালের গণতান্ত্রিক বিপ্লব ও ১৯১৭ সালের রুশ নভেম্বর বিপ্লব উভয় ক্ষেত্রে প্লেখানভ লেনিনের ভূমিকার সমালোচনা করেন বরং নিজে মেনশেভিকদের নিয়ে জারের প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগদানকে সমর্থন করে চরম প্রতিক্রিয়াশীলতার পরিচয় দেন। ঠিক তেমনি আমাদের দেশের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম ঘটনা মহান মুক্তিযুদ্ধকে ‘দুই কুকুরের লড়াই’ বলে যারা অ্যাখ্যায়িত করার চরম প্রতিক্রিয়াশীলতার প্রমাণ দিয়ে কার্যত হানাদার পাকবাহিনীর গণহত্যাকে সমর্থন করে সেই পার্টির তথা তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী লেনিনবাদী) বা সংক্ষেপে ‘ইপিসিএমএল’, এর নেতা হিসাবে তাঁরই সহকর্মী তিন নেতা হক – সুখেন্দু – তোয়াহার সাথেই ’৭১ এর মাঝামাঝি পর্যন্ত তিনি যুক্ত ছিলেন। পরে বেরিয়ে এসে পৃথক ভাবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নিজে ৪০ পৃষ্ঠার দলিল তৈরি করতেই কিন্তু ডিসেম্বর এসে যায়। অথচ তখন তাঁর বয়স ৪০ বছর, তাঁর সমবয়সী অনেকেই তখন যুদ্ধে। এ দিক থেকে বিচার করলে দেখা যায় তিনি মুক্তিযুদ্ধ পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন না কিন্তু আবার বঙ্গবন্ধুকে আত্মসমপর্ণকারী নেতা বলেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন আওয়ামী লীগের মতো সিপিবিও ’৭১ এ ভারতে পালিয়ে যায়। অথচ প্রবাসী সরকার ও আওয়ামী লীগের বিরাট একটি প্রভাবশালী অংশের বিরোধিতার মুখে ন্যাপ–সিপিবি–ছাত্রইউনিয়ন সেদিন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সহায়তায় আলাদা কমান্ডে বিশেষ গেরিলা বাহিনি গঠন করে। সেদিন পাকিস্তান বাহিনীর নজিরবিহীন গণহত্যার মুখে নিরস্ত্র কোটি মানুষের ভারতে আশ্রয় নেবার বিকল্প যেমন ছিল না তেমনি প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে, নিরস্ত্র রাজনৈতিক নেতাদের ভবিষ্যত মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য ভারতে যাবার কোন বিকল্প ছিল না। মওলানা ভাসানীও ভারতে পালিয়ে বেঁচেছিলেন কিনা উমর সাহেব তা কখনো বলেছেন বলে বলতে শুনিনি। অনেক বছর আগে তাঁর দুটো বই ‘যুদ্ধপূর্ব বাংলাদেশ’ ও ‘যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ’ পড়ে আমার সেদিনের অর্বাচীন বোধে এ ধারণা জন্মেছিল যে সে সময় কোন মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ব্যক্তিও এ ধরনের লেখা লিখতে দ্বিধা করবে।
আমার মনে হয় মর্ম বস্তুগত দিক থেকে মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে তাঁর লেখাকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমভাগ সনিষ্ঠ তথ্য ও গবেষণা নির্ভর, পরবর্তী অংশ বিভ্রান্ত রাজনৈতিক বয়ানে কণ্টকাকীর্ণ। তিনি ‘ইপিসিএমএল’ ছেড়ে ’৭১ এ বেরিয়ে আসেন এবং নানা পথ ঘুরে শেষ পর্যন্ত গণমুক্তি কাউন্সিল নামে যে দল প্রতিষ্ঠা করেন তা আমার মনে হয় সাধারণ মানুষ দূরে থাক রাজনীতি সচেতন খুব কম মানুষ সে দলের নাম শুনেছে। যেহেতু তিনি শিক্ষকতার পেশা ছেড়ে রাজনীতিতে এসেছেন এবং শেষ পর্যন্ত রাজনীতিতেই সক্রিয় ছিলেন তাই তাঁকে অবশ্যই রাজনৈতিক ভাবেই বিচার করতে হবে। আমার ক্ষুদ্র বিবেচনায় তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বিশেষ করে বাম রাজনীতিতে ‘বিশুদ্ধবাদী’ বিভ্রান্তির একজন মূর্ত প্রতীক। ‘ইপিসিএমএল’ এ যোগদান করাই হল সেই বিভ্রান্তির মূল উৎস এবং তিনি তা সচেতন ভাবেই করেছেন। তিনি এক সাক্ষাতকারে বলেছেন মণি সিং দেখা করে তাঁর পার্টিতে তাঁকে যোগ দিতে বলেছেন। খোকা রায়কে তাঁর সাম্প্রদায়িক মনে হয়েছে। একমাত্র সুখেন্দু দস্তিদারকে তাঁর ভাল লেগেছে। (প্রথম আলো ৯ সেপ্টেম্বর’২৫)। অথচ ইতিহাস হল ১৯৬৬ সালে মতভিন্নতার কারণে কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে মাত্র দু’জন সুখেন্দু দস্তিদার ও মোহাম্মদ তোয়াহা কেন্দ্রীয় কমিটির নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সিদ্ধান্ত না মেনে, পার্টি শৃংখলা না মেনে এবং তৎকালীন পার্টি সম্পাদক কমরেড মণি সিং এর ব্যক্তিগত অনুরোধ উপেক্ষা করে বেরিয়ে আসেন যা এ দেশের বাম আন্দোলনকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং ইতিহাস সাক্ষী, এ কারণে মুক্তিযুদ্ধে বামদের নেতৃত্ব হাতছাড়া হয়ে পড়ে। অথচ পার্টির এ ভাঙ্গনের কারণেই তাঁর অতি অপছন্দের ‘শেখ মুজিবের’ নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী শক্তি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বে চলে আসে এবং শ্রেণিগত সীমাবদ্ধতা ও অবস্থানের কারণে সে শক্তি স্বাভাবিক ভাবে নানা ভুল করে। তিনি শুধু সেই ভুলের সমালোচনা করেছেন কিন্তু নিজেদের অমার্জনীয় ভুল এক বারের জন্যও স্বীকার করেননি। কিন্তু সেই ক্ষতির রেশ ধরে বামদের দৃশ্যমান দুর্বলতা, বিভক্তি, সম্মিলিত শ্রেণি সংগ্রামের অনুপস্থিতিতে ৫৪ বছরের দীর্ঘ ডানপন্থী শাসনের জেরে আজ সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিস্ট শক্তি দেশের রাজনীতিতে প্রথম সারিতে এসে গেছে। এ শক্তির উত্থানের বিষয়ে গত এক বছরে কমরেড উমর শেষ পর্যন্ত নিশ্চুপ ছিলেন। এই সামগ্রিক অবস্থার জন্য তাঁর প্রথম দল ‘ইপিসিএমএল’সহ সব বাম শক্তি কম–বেশি দায়ী নয় কি? নিজ মতের বিশুদ্ধতাকে সঠিক মনে হলেও সাময়িকভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভুল সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার লেনিনের রাজনৈতিক জীবনের অনেক উদাহরণ থেকে কোন শিক্ষা না নিয়ে চলার কারণে লেনিন পরবর্তী সোভিয়েত রাশিয়ার সংকটের উৎস স্তালিনীয় জবরদস্তির পার্টি লাইনকেই উমর সাহেব আজীবন চর্চা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের মত আমাদের দেশে রাজনীতিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে কিছু আছে বলে তিনি মনে করেন না। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও শাসনামলের সদর্থক কিছুই তিনি খুঁজে পাননি। ’৭৫ পরবর্তী সামরিক শাসন আর জবরদস্তির কথা তিনি কম বলেছেন বস্তুত এতে খুব দোষের কিছুই তিনি দেখেননি। তাঁর মত পণ্ডিতের পুরো রাজনৈতিক জীবনটাই আমার কাছে এক ধরনের পড়সবফু রহ বৎৎড়ৎং বা ভ্রান্তি বিলাস বলে মনে হয়েছে। দুর্নিবার সেই ভ্রান্তি বিলাসে আকৃষ্ট হয়েছেন অনেকেই। যে সিপিবিকে তিনি কোনদিন কমিউনিস্ট পার্টিই মনে করেন নি সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের বিপর্যয়ের পরে সেই পার্টির কিছু প্রবীণ নেতাও সম্প্রতি তাঁর ভ্রান্তি বিলাসে আকৃষ্ট হয়ে মুক্তিযুদ্ধের বামপন্থী বয়ান তৈরি করতে চাইছেন যেন গত ৫০ বছরে সিপিবির মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোন বক্তব্য ছিল না। এদের অনেকের সাম্প্রতিক রোল মডেল হলেন জনাব উমর। এদের অনেকে একসময় গুণকীর্তন করলেও এখন বঙ্গবন্ধুর শাসনামলকে উমরের মতই ব্যর্থতায় পরিপূর্ণ বলে মনে করেন। দেশের প্রবীন মেধাবী অর্থনীতিবিদ, প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য রেহমান সোবহানের আত্মজীবনী ‘রিকালেকশনস ইন ট্রানকুইলিটির’ দ্বিতীয় খণ্ড ‘ডন টু ডার্কনেস’ পড়লেই বুঝা যাবে ’৭২এ কি কঠিন আর্থিক সংকটে দেশ ছিল। তিনি লিখছেন দেশের কোষাগার তখন শূন্য, পুরো দেশের অবকাঠামো তখন বিধ্বস্ত, কোটি কোটি মানুষ গৃহহীন, চট্টগ্রাম বন্দর সম্পূর্ণ অচল, বিদেশী বা মার্কিন কোন সাহায্য ছিল না, সেদিন রাশিয়া ও ভারত খাদ্য সাহায্য ও নগদ টাকা প্রদান করে, রাশিয়া নৌবাহিনি পাঠিয়ে বন্দর চালু করে সদ্য স্বাধীন দেশকে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে। আওয়ামী লীগের ছিছঁড়ে চোরেরা অনেক অপকর্ম করেছে বটে কিন্তু বিগত ১৫ বছরের মত রাষ্ট্রীয় লুটপাট তখন হয়নি। ব্যক্তি মুজিবের দুর্নীতি নিয়ে সেদিন কেউ প্রশ্ন তুলেনি এমনকি ’৭৫ সালের তাঁকে হত্যার পর ৩২ নম্বরকে আজকের দিনের উচ্চ মধ্যবিত্তের বাসভবনের চাইতেও হতশ্রী ও দীন মনে হয়েছে। তাঁর নামে কোন ব্যাংক একাউন্ট পাওয়া যায়নি। এসব কিছুই উমর সাহেবের নজরে আসেনি, এসেছে রক্ষী বাহিনীর অত্যাচার ও রাজনৈতিক নির্যাতন ও দুঃশাসনের কথা। তিনি বঙ্গবন্ধুর যে মৌলিক ভুল কাজটি কোনদিন উল্লেখ করেন নি, তা হল তিনি আত্মম্ভরী অবস্থান থেকে মোস্তাকের মত পরিচিত মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী মার্কিন এজেন্টকে আশ্রয় দিয়েছেন, স্বজন বেষ্টিত ছিলেন, সর্বোপরি তাজউদ্দিনের মত নির্লোভ, প্রাজ্ঞ সৎ ও নিবেদিত রাজনীতিবিদকে তিনি দলও সরকার থেকে বের করে দিয়ে জীবনের চরম ভুলটি করেছেন যা এক রকম নৈতিক অপরাধও বটে। উমর সাহেব বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দিনের দৃষ্টিভঙ্গী ও আচরণের, জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তার পার্থক্য দেখেন নি, শুধু দেখেছেন দু’জনেই আওয়ামী লীগের লোক। অতএব ‘দুর্জনের সহবাস পরিত্যাজ্য’।
পরিশেষে দেশের বৌদ্ধিক পরিমণ্ডলের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, গবেষক, মানব মুক্তি সংগ্রামের একজন লড়াকু রাজনীতিবীদ, চিরদিন প্রতিষ্ঠান বিরোধী বদরুদ্দীন উমরের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর মৃত্যুতে অবশ্যই বাম চিন্তাজগতে এক অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। মাঝে মধ্যে আমার মনে হয় শিক্ষকতার পেশায় থাকলে তিনি বোধ হয় সমাজ ও দেশের জন্য আরো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারতেন। প্রতিকারহীন শক্তের অপরাধ, ক্ষুধার্ত শিশুর অসহ্য কান্না দেখে রবীন্দ্রনাথের মনে সেই বিখ্যাত প্রশ্নের উদয় হয়েছে – ‘যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু / নিভাইছে তব আলো / তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ / তুমি কি বেসেছ ভালো’। স্রষ্টাকে এ প্রশ্ন করেও রবীন্দ্রনাথের ঈশ্বর প্রীতি অটুট ছিল। উমর বলছেন ঠিক এই কারণে তিনি নিরীশ্বরবাদী হন। দেশ টিভির ‘বেলা অবেলা’ অনুষ্ঠানের সাক্ষাৎকারে জীবনের প্রায় ৯০ বছর বয়সে তাঁর স্পষ্টবাদী চরিত্রের বৈশিষ্ট্য রূপে অবলীলায় তিনি তা প্রকাশ করছেন। নিজের বিশ্বাসে আজীবন স্থিতু থেকেছেন কিন্তু সেই বিশ্বাসকে বস্তুবাদী হিসাবে দ্বান্দ্বিক নিয়মে পরিবর্তনশীল ও চলিষ্ণু ভাবেননি বলে মনে হয়। তবুও আমাদের দেশের বস্তুবাদী বৌদ্ধিক ভাবনার পরিমণ্ডলের মহত্তম এই পণ্ডিতের প্রয়াণ এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি করল।
লেখক: কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক, অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক।