বান্দরবানের লামা উপজেলায় পাহাড়ি ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ১৬টি বসতঘর আগুনে পুড়ে গেছে। পাড়ার লোকজন তংগোঝিরি পাড়া গীর্জায় প্রার্থনায় গেলে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা আগুন লাগিয়ে তাদের ঘর পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ করছে পাড়াবাসী।
স্থানীয়রা জানায়, লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের নতুন তংগোঝিরি পাড়ায় এসপি বাগান এলাকায় ত্রিপুরা সমপ্রদায়ের ১৮ পরিবার বসবাস করত দীর্ঘদিন ধরে। পাড়াটির নাম দেয়া হয়েছিল তংগোঝিরি নতুন পাড়া। বড়দিনের উৎসব উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার রাতে পাড়ার সকলেই পার্শ্ববর্তী তংগোঝিরি পাড়া গীর্জায় প্রার্থনায় যায়। এ সময় পাড়ায় কেউ না থাকার সুযোগে দুর্বৃত্তরা পাড়ার বসতঘরগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেয়ায় পাড়ার ১৬টি বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অভিযোগ করে তংগোঝিরি নতুন পাড়ার প্রধান (কার্বারী) পাইসাপ্রু ত্রিপুরা জানান, তাদের ভোগ–দখলীয় জমিগুলো কথিত এসপির লোকজন দখল করে তাদের বিতাড়িত করেছিল। দখলীয় জমির নাম দিয়েছিল এসপির বাগান। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুথানের পর ওই এসপির লোকজন এলাকা থেকে চলে গেলে সেখানে ১৮টি ত্রিপুরা পরিবার বসবাস শুরু করে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বড়দিন উপলক্ষ্যে পার্শ্ববর্তী পাড়ার গীর্জায় সকলে প্রার্থনা করতে গেলে পাড়ায় লোকজনের অনুপস্থিতিতে আগুন লাগিয়ে দি়লে ১৬টি বসতঘর পুড়ে যায়।
সরই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস বলেন, তংগঝিড়ি এলাকায় নতুন তংগোঝিরি পাড়াটি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। গতরাতে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে ১৬টি ঘর পুড়ে গেছে বলে শুনেছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর বিস্তারিত বলা যাবে।
লামা উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রুপায়ন দেব জানান, নতুন তংগোঝিরি পড়ার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন তিনি। সেখানে হিংসাত্মকভাবে ১৬টি ঘর পুড়ে দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদেরকে অভিযোগ দেওয়ার জন্য পরামর্শও দেয়া হয়েছে। আপাতত সতেরটি পরিবারের জন্য কম্বল, খাদ্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. এনামুল হক ভুঁইয়া জানান, সরই ইউনিয়নের দুর্গম তংগোঝিরি এলাকায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। গত ৫ আগসোটর পর ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও বেদখল সংক্রান্ত ঘটনা রয়েছে। যথাযথ তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।