আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অতিরিক্ত সচিব হিসাবে কর্মজীবন শেষ হওয়া পাঁচজন আমলাকে এবার সচিব পদমর্যাদায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসনে। এই কর্মকর্তাদের অনেকেই বিসিএস একাদশ ব্যাচে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেছিলেন। কেউ কেউ ছিলেন বিএনপি সরকারের আস্থাভাজন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গতকাল শনিবার এক আদেশে জানিয়েছে, এই পাঁচ কর্মকর্তাকে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। খবর বিডিনিউজের।
পাঁচজনের মধ্যে মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন ২০০১ সালের বিএনপি–জামায়াত জোট সরকারের সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, বিআরটিএর চেয়ারম্যান ও বিমানের এমডি ছিলেন। তার আগে নব্বইয়ের দশকে তিনি ছিলেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস। ২০০৯ সালে অতিরিক্ত সচিব থাকা অবস্থায় তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছিল তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার। এবার তাকে চাকরিতে ফিরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
একই দিন আরেক আদেশে জ্যেষ্ঠ সচিব মোকাব্বির হোসেনকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে, যাকে চার দিন আগে জননিরাপত্তা বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। চুক্তিতে নতুন করে নিয়োগ পাওয়া পাঁচজনের মধ্যে শেখ আব্দুর রশিদ কর্মজীবনের শেষ পর্যায়ে অতিরিক্ত সচিব হিসাবে পাঁচ বছর বিভাগীয় মামলায় আটকা পড়েছিলেন। পরে পিআরএলে যাওয়ার সময় হলে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন। এবার আব্দুর রশিদকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব করা হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব নাসিমুল গনি ছিলেন বিএনপি নেতা স্পিকার জমির উদ্দিন সরকারের পিএস। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। নতুন নিয়োগে তিনি রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের জন বিভাগের সচিব হয়েছেন। বিগত বিএনপি–জামায়াত জোট সরকারের সময়ে এম এ আকমল হোসেন আজাদ কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর থেকে তিনি ছিলেন ওএসডি। ওই অবস্থায় তাকে অবসরে যেতে হয়। এবার তাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব করে। ফিরিয়ে আনা হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব এহছানুল হককেও। দীর্ঘদিন পদোন্নতি বঞ্চিত থেকে অবসরে যাওয়া এই কর্মকর্তা এবার সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এই দপ্তরের দায়িত্বে থাকা এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী এক সময় বিএনপি–জামায়াতের আস্থাভাজন ছিলেন। পরে অবশ্য তিনি আওয়ামী লীগ সরকারেরও আস্থা অর্জন করেন। অবসরের পর তাকে চুক্তিতে ওই পদে রেখে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। ক্ষমতার পালাবদলে ইতোমধ্যে তার চাকরি গেছে।