বজ্রপাতে দেশে প্রতিবছর সাড়ে তিনশর মতো প্রাণহানি ঘটে বলে জানিয়েছেন আন্তঃসরকার প্রতিষ্ঠান রাইমস’র (রিজিওনাল ইন্টিগ্রেটেড মাল্টি হ্যাজার্ড আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম) আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ খান মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে বছরে গড়ে ৩.৩৬ মিলিয়ন বজ্রপাত হয়। এর ফলে প্রায় সাড়ে তিনশ মানুষের মৃত্যু হয়। বজ্রপাতের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হলো সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও সিলেট। বাংলাদেশে সাধারণত এপ্রিল–মে মাসে বজ্রপাতের ঝুঁকি বেশি থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বজ্রপাতের হার ১০ শতাংশ বেড়েছে। সামনে আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বজ্রপাত নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে শনিবার বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। রাইমস এবং বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এ সেমিনার আয়োজন করে। খবর বিডিনিউজের।
অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচিকে (সিপিপি) পূর্ণাঙ্গ একটা অধিদপ্তর করার কাজ চলছে। শুধু ঘূর্ণিঝড়ের জন্য না, সব দুর্যোগের জন্য যে অধিদপ্তর হবে– সেটা হবে সিপিপি। এর কাজ হবে সারাদেশে সচেতনতা থেকে শুরু করে সবকিছুর জন্য স্থানীয় ভলেন্টিয়ারকে যুক্ত করা। শুধু একটা বিষয়ে জন্য না, সমস্ত বিষয়ের জন্য তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও থাকবে।
বজ্রপাতের সময় নিরাপদ থাকতে অনুষ্ঠানে কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হয়– ১. আকাশে কালো মেঘ দেখা গেলে বা বজ্রপাতের শব্দ শোনা গেলে ঘরের ভেতরে থাকতে হবে। ২. বাইরে কাজ করা অবস্থায় আশ্রয়ের জায়গা না পেলে নিচু হয়ে হাত–পা গুটিয়ে বসতে হবে। মাটিতে শুয়ে পড়া যাবে না। ৩. জলাশয়ে থাকলে নৌকার ছইয়ের নিচে অবস্থান করতে হবে। ৪. নৌকায় ছই না থাকলে পাটাতনে যতটা সম্ভব কম স্পর্শ রেখে অবস্থান নিতে হবে। ৫. মাছ ধরা বন্ধ রাখতে হবে। ৬. জলাশয় থেকে দূরে থাকতে হবে। ৭. গাছের নিচে, কোনো উঁচু স্থানে অবস্থান নেওয়া যাবে না। ৮. ছেঁড়া বিদ্যুতের তার থেকে দূরে থাকতে হবে।
বজ্রপাতের সময় যেসব স্থান নিরাপদ নয়– ১. উন্মুক্ত স্থানে টানানো তাঁবু ২. চারদিকে খোলা চালাযুক্ত স্থান ৩. খোলা ও ধাতু নির্মিত যাত্রী ছাউনি ৪. ছাতা ব্যবহারও নিরাপদ নয়।
বজ্রপাতের একাধিক শব্দের মধ্যে সবশেষ যে শব্দটি শোনা যাবে, সেই সময় থেকে অন্তত ৩০ মিনিট ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয় সেমিনারে।