প্রাকৃতিক দুর্যোগ, শুল্ক কর্মকর্তাসহ বন্দর ব্যবহারকারী একাধিক সংগঠনের কর্মবিরতি ও গো স্লো, পরিবহন ধর্মঘটসহ নানা প্রতিকূলতার পরও বছর শেষ হওয়ার আগেই কন্টেনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড গড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বেড়েছে বন্দরে জাহাজ আসার সংখ্যাও। চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমদানি–রপ্তানি মিলিয়ে কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩৩ লাখ ৬৩ হাজার ৫৭৭ টিইইউএস। যা চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ২০২৪ সালে কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছিল ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ৬২৭ টিইইউএস।
চলতি বছর শেষ হওয়ার চারদিন আগেই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আগের বছরের চেয়ে ৮৭ হাজার ৯৫০ টিইইউএস কন্টেনার বেশি হ্যান্ডলিং করেছে। বছর শেষ হতে কয়েকদিন বাকি রয়েছে। বছর শেষে কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ আরও বাড়বে বলেও বন্দর সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরে ২০২৩ সালে ৩০ লাখ ৫০ হাজার ৭৯৩ টিইইউএস, ২০২২ সালে ৩১ লাখ ৪২ হাজার ৫০৪ টিইইউএস, ২০২১ সালে ৩২ লাখ ১৪ হাজার ৫৪৮ টিইইউএস এবং ২০২০ সালে ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৭ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল।
অন্যদিকে গত ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত খোলা পণ্য (কার্গো) হ্যান্ডলিং হয়েছে ১৩ কোটি ৬৩ লাখ ২৬ হাজার ৮৬ টন। আগের বছরে কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছিল ১২ কোটি ৩৯ লাখ ৮৩ হাজার ১৪ টন। অর্থ্যাৎ, বছরের আরো কয়েকদিন বাকি থাকলেও বন্দরে গত বছরের তুলনায় ১ কোটি ২৩ লাখ ৪৩ হাজার ৭২ ক টন বেশি পণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছে।
বন্দর সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে ১২ কোটি ২ লাখ ৩০ হাজার ২৯৩ টন, ২০২২ সালে ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৬৫ হাজার ৬৮২ টন, ২০২১ সালে ১১ কোটি ৬৬ লাখ ১৯ হাজার ১৫৮ টন এবং ২০২০ সালে ১০ কোটি ৩২ লাখ ৯ হাজার ৭২৪ টন খোলা পণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছিল। চট্টগ্রাম বন্দরে গত ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জাহাজ হ্যান্ডলিং করা হয়েছে ৪৩৯৬টি, ২০২৪ সালে বন্দরে মোট জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছিল ৩৮৫৭টি। বছর শেষ না হলেও গত বছরের তুলনায় এবার জাহাজ হ্যান্ডলিং বেড়েছে ৫৩৯টি। ২০২৩ সালে বন্দরে জাহাজের সংখ্যা ছিল ৪১০৩, ২০২২ সালে ৪৩৬১টি, ২০২১ সালে ৪২০৯টি এবং ২০২০ সালে ৩৭২৮টি।
বন্দর কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছর বিভিন্ন সময়ে দাবি আদায়ের জন্য এনবিআর কর্মকর্তাদের আন্দোলন ও কর্মবিরতি, পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের কয়েক দফা ধর্মঘটে আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছিল। এর পরও বন্দরের ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন এবং কর্মকর্তা–কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রম, বন্দর ব্যবহারকারীদের সহযোগিতার কারণে এ অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে। তারা বলেন, চলতি বছর শেষ হতে আরো কয়েকদিন বাকি রয়েছে। তার আগেই জাহাজ, কন্টেনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। এটি বন্দরের সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী, ব্যবহারকারীদের দক্ষতা এবং আন্তরিকতার ফলেই সম্ভব হয়েছে। একইসাথে বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগও এক্ষেত্রে বড় ধরণের ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে বলেও তারা জানান।












