স্বপ্ন ছিল সাগর থেকে মাছ আহরণ করে বাজারে বিক্রি করবেন। হবেন স্বাবলম্বী। পরিবার—পরিজন নিয়ে থাকবেন সুখে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর আলোর মুখ দেখলো না।
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে টেকনাফের ৬ জন জেলে ১৩ দিন যাবত নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁরা বেচে আছেন কিনা তা নিয়েও সন্দিহান রয়েছে পরিবারে। এ নিয়ে নিখোঁজ জেলেদের পরিবারের চলছে শোকের মাতম।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন—টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড পুরানপাড়ার নাছির আহমদের ছেলে হাবিব উল্লাহ (৫০), অলি আহমদের ছৈয়দ আলম (৩৮), মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে মো. সোহেল (৩০), আব্দুস সালামের ছেলে সলিমুল্লাহ (৪২), ছৈয়দ উল্লাহের ছেলে মোহাম্মদুর রহমান (২৮) ও মীর আহমদের ছেলে আলী হোছন (৩৫)।
নিখোঁজ জেলে সলিম উল্লাহর ছোট ভাই হামিদ উল্লাহ বলেন, ‘স্থানীয় আবু সিদ্দিকের ছেলে হেলাল উদ্দিনের মালিকানাধীন ট্রলার নিয়ে গত ৩ নভেম্বর সাগরে মাছ ধরে যায় আমার ভাইসহ ৬ জেলে। স্বাভাবিকভাকে বেশি মাছ পাওয়ার আশায় তারা ৪ থেকে ৫ দিনের রসদ নিয়ে যায়। কিন্তু ১৩ দিন পার হলেও তাদের কোন হদিস নেই। বন্ধ রয়েছে সবার মোবাইল।
এ নিয়ে পরিবারের সবাই দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন। সাগরে তাদের ট্রলারের ইঞ্জিন নষ্ট হয়েছে, এমন তথ্য জানিয়েছে ফিরে আসা শামলাপুর ঘাটের একটি ট্রলারের লোকজন।’
ট্রলার মালিক মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমার মালিকানাধীন নৌকার ৬ জেলে নিখোঁজের ঘটনায় টেকনাফ থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তারা সবাই খেটে খাওয়া মানুষ। তাদের পরিবারের সদস্যরা চিন্তায় রয়েছে। আল্লাহ যেন তাদের অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে আনে এই মুহূর্তে সেই দোয়াই করছি।’
জেলে সলিমুল্লাহর পিতা আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমার ছেলে সলিমুল্লাহ মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। তারা বেঁচে আছে কিনা মারা গেছে কোন অবস্থায় আছে তার কোন সঠিক তথ্য পাচ্ছি না। তাদের উদ্ধারের জন্য কোস্ট গার্ড ও উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেছি। সব জায়গায় খোঁজ খবর নেওয়ার পরও এ পর্যন্ত কোন তথ্য পাওয়া মিলেনি।’
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘বাহারছড়া পুরান পাড়ার ৬ জেলে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজের ঘটনাটি তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে জানার পর আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ খবর নিয়েছি। এখনও খোঁজ অব্যাহত রয়েছে। তবে বিশাল সাগরে তারা কোথায় আছে সেটার সঠিক স্থান সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যাচ্ছেনা।’