বঙ্গোপসাগরে ফিশিং বোট ডুবির ৮ দিন পরও সন্ধান মেলেনি ৪ জেলের

বাঁশখালী প্রতিনিধি | রবিবার , ১১ অক্টোবর, ২০২০ at ৮:৪১ অপরাহ্ণ

বঙ্গোপসাগরের বাঁশখালী-কুতুবদিয়া চ্যানেলের অদূরে কর্ডজাল ফিশিং ট্রলারের ধাক্কায় বাঁশখালীর ফিশিং বোট ডুবির ঘটনায় বিভিন্ন সময়ে ২৭ জন জেলে ও মাঝিমাল্লা ফিরে এলেও এখনো ৪ জেলের কোনোরকম হদিস মেলেনি।
অপরদিকে এ ফিশিং বোটের আরো কয়েকজন অন্য ফিশিং বোটে রয়েছে। তারা ১৪ অক্টোবর সাগরে মাছ ধরা বন্ধ হলে তখন ফিরবে আর সেই প্রতীক্ষায় আছে তাদের পরিবার।
তবে তলিয়ে যাওয়া ফিশিং ট্রলারের যৌথ মালিক মো. ছগীর কোম্পানি এবং মো. আজিজ কোম্পানি নিজেরাও অসুস্থ হওয়ার কারণে অপেক্ষার প্রহর গুনছে নিখোঁজ জেলে ও মাঝিমাল্লাদের পরিবার।
এদিকে শীলকূপের মৃত নাছু মিয়ার পুত্র নিখোঁজ কবির আহমদের স্ত্রী রোকসানা আক্তার স্বামীকে ফিরে পাওয়ার জন্য প্রশাসন সহ বিভিন্ন স্থানে আবেদন-নিবেদন করলেও দীর্ঘ সময়ে তার কোনো সন্ধান না পাওয়ায় তার পরিবারে চলছে অন্যরকম এক শোকের মাতম।
জানা যায়, গত ৩ অক্টোবর বাঁশখালীর চাম্বল বাংলা বাজার ঘাট থেকে মো. ছগীর কোম্পানি এবং মো. আজিজ কোম্পানির যৌথ মালিকানাধীন ফিশিং বোট শানে মদিনা বঙ্গোপসাগরের অদূরে মাছ ধরতে গেলে ৪ অক্টোবর সকালে কর্ডজাল (ফিশিং)-এর ধাক্কায় এটি তলিয়ে যায়।
এরপর থেকে এ ফিশিং বোট থেকে বিভিন্ন সময়ে ২৭ জন জেলে বাংলা বাজার ঘাট হয়ে কূলে ফিরে আসে।
আরো কয়জন জেলে অন্য ফিশিং বোটে উঠাতে তারা ১৪ অক্টোবর সাগরে মাছ ধরা বন্ধ হলে তখন ফিরবে সেই প্রতীক্ষায় আছে।
তবে শীলকূপ এলাকার কবির আহমদ সহ ২ জন, সরলের ভাদালিয়া এলাকার ১ জন এবং চট্টগ্রামের কাট্টলি এলাকার ১ জন সহ ৪ জেলের কোনো সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি বলে বোট মালিক সমিতি ও নিখোঁজের পরিবার সূত্রে জানা যায়।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় নিখোঁজ জেলে পরিবারগুলো মো. ছগীর কোম্পানি এবং মো. আজিজ কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করলে তারা আগামী ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন।
তাছাড়া তাদের একমাত্র সম্পদটি হারিয়ে তারা এখন অনেকটা পাগলপ্রায় হয়ে গেছেন বলে জানান কয়েকজন জেলে। আবার অনেকে মুখ খুলে কিছ বলারও সাহস পাচ্ছে না পরে কোনোরকম সহযোগিতা না পায় এ ভয়ে।
পশ্চিম চাম্বল বোট মালিক সমিতির সভাপতি হেফাজেতুল ইসলাম বলেন, “আগামী ১৪ অক্টোবর সব ফিশিং বোট যখন কূলে ফিরে আসবে তখন নিশ্চিত হওয়া যাবে কারা মারা গেছে তা। তাই সেই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।” আর শীলকূপের কবিরের পরিবারকে ধর্মীয় কার্যাদি করার জন্য কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুদের হাতে ও ফিশিং বোট ডুবির ঘটনায় প্রতি বছর বাঁশখালীর জেলেদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও কয়দিন সরব থাকার পর আর কোনো খবর থাকে না। ৩১ জেলে, ১৪ জেলে ১১ জেলে হত্যার মতো ঘটনায় বাঁশখালীর জেলেদের মৃত্যুর পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসলেও আবারো নীরব হয়ে যায়।
ফলে বঙ্গোপসাগর ভিত্তিক জলদস্যুদের তাণ্ডবে বার বার প্রাণ হারায় এ এলাকার জেলেরা। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। একটি ফিশিং ট্রলারের ধাক্কায় বাঁশখালীর ফিশিং বোটটি তলিয়ে যাওয়ার দীর্ঘ সময় পরও তার সন্ধান পাননি সংশ্লিষ্টরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাতকানিয়ায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধরাঙামা‌টিতে গলায় ফাঁস দিয়ে বৃদ্ধের আত্মহত্যা