ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এর ১৬ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ একটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছে আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশন–দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ‘মুজিববর্ষ’ পালন, শেখ মুজিবের ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণে অর্থ অপচয় ও ক্ষতিসাধনের অভিযোগ খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন–দুদক। খবর বিডিনিউজের।
জানা যায়, দুদকের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম এনসিসি ব্যাংকে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছোট বোন শেখ রেহানা তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবের অর্থ অন্যত্র হস্তান্তর বা স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন। সে কারণে সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের এই হিসাবটি অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন মনে করছে দুদক। বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন শেখ হাসিনা।
‘মুজিববর্ষ’ পালনে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বিপুল অর্থ ব্যয় : শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ‘মুজিববর্ষ’ পালন, শেখ মুজিবের ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণে অর্থ অপচয় ও ক্ষতিসাধনের অভিযোগ খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন–দুদক। গতকাল দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, সাত সদস্যের একটি কমিটি এই অনুসন্ধান করছে। গত জানুয়ারি মাসে এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। দুদকের অনুসন্ধান দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম। দলে আরও রয়েছেন সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, মুবাশ্বিরা আতিয়া তমা, এস এম রাশেদুল হাসান, এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর, মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এবং মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
অনুসন্ধান দলকে সংশ্লিষ্ট আইন, বিধিমালা ও কমিশনের জারি করা সার্কুলার অনুসরণ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অনুসন্ধানের সময় কোনো ব্যাংক হিসাব জব্দ বা সম্পত্তি ক্রোকের প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট শাখাকে জানানোর নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ১০ পৃষ্ঠার কাগজপত্র অনুসন্ধান দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের লক্ষ্যে ঘোষিত মুজিববর্ষে কী ধরনের কাজ হয়েছে, কত টাকা অপচয় হয়েছে, সে বিষয়ে ডকুমেন্টেশন করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল উপদেষ্টা পরিষদ।
শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ সময়কে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছিল। তবে কোভিড মহামারীর কারণে মুজিববর্ষের সময়কাল বাড়ানো হয়েছিল।