বঙ্গবন্ধু আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন

আজাদী ডেস্ক | মঙ্গলবার , ১৪ মার্চ, ২০২৩ at ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ

একাত্তরের এদিন স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কার্যক্রম আরো জোরদার হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্দোলন পরিচালনার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি ৩৫টি নতুন নির্দেশ জারি করেন। নিজ বাসভবনে ন্যাপ নেতা আবদুল ওয়ালী খানের সাথে বৈঠক করেন বঙ্গবন্ধু। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, যতদিন অধিকার আদায় হবে না, ততদিন বাঙালির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। জাতীয় লীগ নেতা আতাউর রহমান খান আবারো বঙ্গবন্ধুর প্রতি অস্থায়ী সরকার গঠনের আহ্বান জানান। এদিন দেশের প্রয়োজনে অস্ত্রধারণ করার ঘোষণা দেন ঝিনাইদহের কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা।

জাতীয় পরিষদ অধিবেশনে যোগদানের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ৪ দফা পূর্বশর্ত মেনে নেয়ার দাবিতে রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্রশ্রমিকপেশাজীবী সংগঠন এবং যুব মহিলা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে সভাসমাবেশ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। সকালে বঙ্গবন্ধু ও খান আবদুল ওয়ালী খান বৈঠকে মিলিত হন। বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে রুদ্ধদ্বার কক্ষে প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপী এই আলোচনাকালে জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি দলের উপনেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম কামরুজ্জামানসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত চিলেন। বৈঠক শেষে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বঙ্গবন্ধু বলেন, স্বাধীন দেশে স্বাধীন নাগরিক হিসেবে জীবনযাপনের জন্যই আমাদের সংগ্রাম।

বঙ্গবন্ধু রাতে এক বিবৃতিতে অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে নতুন নির্দেশ ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর দীর্ঘ বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে নির্মূল করা যাবে না। আমরা অজেয়, কারণ আমরা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত। বঙ্গবন্ধুর অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে সংবাদপত্র প্রেস কর্মচারী ফেডারেশনের উদ্যোগে সকালে বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে সমাবেশ শেষে মিছিলসহ বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়ে তাঁর হাতে একটি আবেদনপত্র দেয়া হয়। তাতে নেতারা যে কোনো নির্দেশ পালনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে অবিলম্বে একটি জাতীয় সরকার গঠন ও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ঘোষণার জন্য বঙ্গবন্ধুর প্রতি অনুরোধ জানান। করাচীতে নিশাত পার্কে পিপলস পার্টির উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। জনসভায় পিপিপির চেয়ারম্যান ভুট্টো পাকিস্তানের দুই অংশের দুই সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব দেন। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে তার সঙ্গে সংলাপ শুরু করার জন্য বঙ্গবন্ধুর প্রতি আহ্বান জানান। বাংলাদেশের জন্য খাদ্যশস্যবাহী ‘মন্টেসেলো ভিক্টরি’ নামের আর একটি জাহাজের গতিপথ পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে করাচী নিয়ে যাওয়া হয়। ‘ওসান এন্ডুরাস’ নামের সমরাস্ত্রবাহী আর একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের ১০নং জেটিতে নোঙর করে বন্দর শ্রমিকদের অসহযোগিতার কারণে ৯ মার্চ ১৬নং জেটিতে সমরাস্ত্রবাহী অপর জাহাজ ‘সোয়াত’এর সমরাস্ত্র খালাসের চেষ্টা করে কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়।

প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি দলের নেতা ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এক বিবৃতিতে ১১ মার্চ খাদ্যবাহী জাহাজ ‘ভিটেজ হরাইজন’ এর গতিপথ চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবর্তে করাচী বন্দরে পরিবর্তনের ঘটনা সম্পর্কে অবিলম্বে তদন্ত অনুষ্ঠানের দাবি জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরমজানে অফিস ৯টা-সাড়ে ৩টা
পরবর্তী নিবন্ধদুই মাসে কাটা হলো চারশ লাইটারেজ জাহাজ