বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি শুরু হয়

আজাদী ডেস্ক | বৃহস্পতিবার , ৯ মার্চ, ২০২৩ at ৪:৪৪ পূর্বাহ্ণ

সারা দেশ ছিল মিছিলে মিছিলে উত্তাল। দেশের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ তখন চূড়ান্ত মুহূর্তের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। তাঁর ঘোষিত আন্দোলনের কর্মসূচি অনুযায়ী সচিবালয়সহ সারা দেশে সব সরকারি ও আধাসরকারি অফিস, হাই কোর্ট ও জেলা আদালতসহ সবখানে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। বঙ্গবন্ধু যেসব সরকারি অফিস খুলে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন, শুধু সেসব অফিস চালু থাকে। আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ন্যাপ প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মধ্যে সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় এদিন। ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে বিশাল জনসভায় বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন ভাসানী। বিকেলে পল্টন ময়দানের ওই জনসভায় তুমুল করতালির মধ্যে তিনি বলেন, ইয়াহিয়া সাহেব, অনেক হয়েছে, আর নয়। তিক্ততা বাড়িয়ে লাভ নেই। তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার নিয়মে পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা মেনে নাও। ভাসানী সেদিন বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশমত আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে কোনো কিছু না করা হলে আমি মুজিবের সঙ্গে মিলে ১৯৫২ সালের মতো তুমুল আন্দোলন শুরু করব।

বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই তখন পুরো পূর্ব পাকিস্তান পরিচালিত হচ্ছিল। তার নির্দেশ মেনেই ঢাকা হাই কোর্টের কোনো বিচারক ‘বাংলার কসাই’ আখ্যা পাওয়া লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানকে গভর্নর হিসাবে শপথ পড়াতে অস্বীকার করেন। এর আগে ৬ মার্চ গভীর রাতে ইসলামাবাদ টিক্কা খানকে ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক শাসক নিয়োগ করে। এ নিয়োগ ৭ মার্চ থেকে কার্যকর করা হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়। ওই দিন তিনি ঢাকায় আসেন। ৯ মার্চ তার গভর্নর হিসেবে কার্যভার গ্রহণের কথা ছিল। সেদিন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের পূর্ব পাকিস্তান সফরের ঘোষণা আসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের জরুরি সভায় ছাত্রলীগ ও ডাকসুর নেতৃত্বে গঠিত ‘স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ’ এর ছাত্রসভায় গৃহীত ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। ছাত্রলীগ শেখ মুজিবের প্রতি অবিলম্বে জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিদ্দিক বাজারে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০
পরবর্তী নিবন্ধনগরে মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণ