দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ভাষণ ও বক্তব্যগুলো স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচি এবং প্রশিক্ষণক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই রুল জারি করে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, শিক্ষা সচিব, আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যানসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলেছে আদালত। সেই সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বঙ্গবন্ধুর এসব ভাষণ–বক্তৃতা (অডিও–ভিডিওসহ) আগামী এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান এবং রাজউকের আইনজীবী ইমাম হাছান এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ৪ জুন এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির তারিখ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। তিনি বলেন, দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান–তদন্তের সময় দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তারা যাতে বঙ্গবন্ধুর দুর্নীতিবিরোধী ভাষণ–বক্তৃতার চেতনা মাথায় রেখে অনুসন্ধান–তদন্ত করেন, সেটি সংস্থাটির চেয়ারম্যানকে নিশ্চিত করতে বলেছে হাই কোর্ট।
দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে হার্ডলাইনে যেতে হবে : বাংলানিউজ জানায়, দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে হার্ডলাইনে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন হাই কোর্ট। এশিয়ার দেশগুলোতে দুর্নীতি নিয়ে নমনীয়তা আছে–এক নোবেল বিজয়ীর বক্তব্যকে উল্লেখ করে গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাই কোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেছেন।
আদালত বলেন, এক নোবেল বিজয়ী বলেছেন এশিয়ার দেশগুলোতে দুর্নীতির বিষয়ে নমনীয়তা আছে। কিন্তু দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে হার্ডলাইনে যেতে হবে। কঠোর হতে হবে। কেবল আইন–বিধি বা রায়–আদেশ দিয়ে দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে না উল্লেখ করে আদালত বলেন, আগে নিজেদের আইন–বিধি মানতে হবে। যারা সার্ভিসে (চাকরি) ঢুকছেন তারা কী নিয়ে ঢুকছেন আর কী নিয়ে বের হচ্ছেন তার স্বচ্ছতা থাকতে হবে। সবার জবাবদিহিতা থাকতে হবে।
আদালত বলেন, সবাই মিলে ধরতে না পারলে দুর্নীতি বন্ধ হবে না। সরকার, সংবাদ মাধ্যম, বিচার বিভাগসহ সব অংশীজনকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। একা বিচার বিভাগ বা সরকারের পক্ষে দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে না। দেশকে ভালোবাসলে আইনের শাসন মানতে হবে। দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতিতে থাকতে হবে; যেটি প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন।