প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুননির্বাচিত হওয়ার দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ফ্রান্সের জাতীয় আইনসভার নিয়ন্ত্রণ হারালেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। পার্লামেন্ট নির্বাচনে তার ক্ষমতাসীন জোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। রোববারের জাতীয় নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটে ক্ষমতাসীন জোটের বিপর্যয়ে ফ্রান্সে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরির শঙ্কা দেখা দিয়েছে, তবে ম্যাক্রোঁ অন্যান্য দলের সঙ্গে জোট গঠনে সক্ষম হলে পরিস্থিতি এড়াতে পারবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
নির্বাচনে অপেক্ষাকৃত ভালো ফলাফলে পার্লামেন্টে নিজেদের অবস্থান শক্ত করেছে বাম দলীয় জোট এবং কট্টর ডানপন্থি দল। বিবিসি জানিয়েছে, নির্বাচনের আগে ম্যাক্রোঁ তাকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন, কিন্তু নির্বাচনে তার মধ্যপন্থি জোট আসামব্ল বহু আসন হারিয়েছে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেও জাতীয় আইনসভার ৫৭৭টি আসনের মধ্যে আসামব্ল ২৪৫টি আসনে জয় পেয়ে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে, কিন্তু নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে তাদের ২৮৯টি আসন পেতে হতো।কট্টর বামপন্থি নেতা জ্যঁ-লুক মিলশ্যঁ কমিউনিস্ট ও পরিবেশবাদী গ্রিন্সসহ মূলধারার বামপন্থি দলগুলোর জোট নিউফ গঠন করে বড় ধরনের সাফল্য পেয়েছেন। জাতীয় পরিষদের ১৩১টি আসনে জয় পেয়ে নিউফ প্রধান বিরোধীদল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। জোটের বাইরে থাকা অন্যান্য বাম দল আরও ২২টি আসন জিতেছে। ফলে বৃহত্তর বাম জোটের মোট আসন দাঁড়িয়েছে ১৫৩টি আর তাতে তারাই জাতীয় পরিষদে বৃহত্তম বিরোধীদলীয় শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
মারিন লু পেনের কট্টর ডানপন্থি ন্যাশনাল র্যালি পার্টি নতুন আটটি আসনে জয় পাওয়ায় তাদের আসন সংখ্যা ৮৯ হয়েছে। উন্নতিতে তারাও খোশ মেজাজে আছে। নির্বাচনের ফলাফল আসার পর লু পেন বলেছেন, ইমানুয়েল মাক্রোঁর অ্যাডভেঞ্চার শেষ। রিপাবলিকান-ইউডিআই ৬৪ আসন এবং অন্যান্যরা ২৬টি আসন পেয়েছে।
সমপ্রতি নিয়োগ পাওয়া ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন নির্বাচনের ফলাফলকে নজিরবিহীন বলে আখ্যা দিয়েছেন। নির্বাচনে ফলাফল বিপর্যয়ের পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের এলিজে প্রাসাদ থেকে দীর্ঘ বৈঠক শেষে নিজ বাসভবনে ফেরার পর তিনি বলেছেন, আধুনিক ফ্রান্স কখনোই এরকম জাতীয় পরিষদ দেখেনি।