ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদী পদ্ধতি : ইতিহাস ও সময়ের প্রেক্ষিতে

কানাই দাশ | সোমবার , ৪ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:৩৩ পূর্বাহ্ণ

৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফ্যাসিবাদ ও সংস্কার এ দুটি শব্দ এত বেশি উচ্চারিত হচ্ছে যে, এ নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন। আইয়ুবইয়াহিয়া, জিয়াএরশাদের সামরিক শাসন বিরোধী দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে ঐ শাসকদের কেউ ফ্যাসিস্ট বলতে শোনা যায়নি এবং সঠিক ভাবে সে সময়ের আন্দোলনকারী দলগুলো তাদের আন্দোলন ও অর্জনকে স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলন ও বিজয় বলে চিহ্নিত করেছে। ঐ সব শাসকরা মূলত ফ্যাসিবাদী পদ্ধতিতে দেশ শাসন করেছে। ১৯৯১ সাল থেকে বলতে গেলে দুই বৃহৎ দলের নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্র পালাক্রমে ফ্যাসিবাদী পদ্ধতিতেই দেশ চালিয়েছে। কাজেই ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদী পদ্ধতি তথা ব্যবস্থা ও পদ্ধতির পার্থক্যটা বুঝতে হবে অবশ্যই। অতি সংক্ষেপে বলা যায় ফ্যাসিবাদ মানে হত্যা, ধ্বংস, বিভীষিকা, ফ্যাসিবাদ মানে মুনাফার যূপকাষ্ঠে মানবতার বলিদান। আর সংস্কার হলো পুরোনো ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার কৌশল মাত্র। সংস্কার করে কোন ব্যবস্থা বদল করা যায় না। এক্ষেত্রে সংস্কার প্রচলিত লুটেরা রাজনৈতিক অর্থনীতিকে স্থায়ী করার চেষ্টা মাত্র।

ফ্যাসি শব্দটি মূলত একটি ইতালীয় শব্দ যার অর্থ হল সর্বাত্মকবাদ, বা সহিংস সর্বাত্মক তৎপরতা। ১৯১৫ সালে মুসোলিনি ইতালিতে প্রথম এ শব্দটি ব্যবহার করেন ও ’২১ থেকে ’৪৪ পর্যন্ত তিনি ইতালিতে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৩৩ সালে হিটলার জার্মানিতে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেন। ফ্যাসিবাদ মূলত সংকটাপন্ন পুঁজিবাদের হিংস্রতম রূপ। পুঁজিবাদের অসম বিকাশের অনিবার্য পরিণতির ফলে এর উদ্ভব ঘটে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ জয়ী ইঙ্গো ফরাসি ঔপনিবেশিক শক্তির ইচ্ছায় পরাজিত জার্মানির উপর চাপিয়ে দেয়া ভার্সাই চুক্তির অবমাননাকর শর্ত জার্মানিতে তীব্র ক্ষোভ ও জাত্যাভিমানী জনমত তৈরি করে, একে পুঁজি করে ক্ষমতায় আসে জার্মান পুঁজিবাদের উগ্র ও আগ্রাসী অংশের প্রতিনিধি হিটলার। ইতোপূর্বে ইতালিতেও ঠিক একই কায়দার মুসোলিনি প্রাচীন রোম সাম্র্যজ্যের গৌরব পুনঃপ্রতিষ্ঠার তীব্র জাতীয়তাবাদী আবেগ তৈরি করে ক্ষমতা দখল করে। জার্মানি সফরে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া বিশ্ব কমিউনিস্ট আন্দোলনের নেতা জর্জি দিমিত্রভ হিটলারের আদালতে দাঁড়িয়ে ১৯৩৫ সালে ফ্যাসিবাদের চরিত্র ও স্বরূপ ব্যাখ্যা করে যে ঐতিহাসিক জবানবন্দী দেন তাই বিশ্বব্যাপী গৃহীত ফ্যাসিবাদের তাত্ত্বিক ভিত্তি হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে। তাঁর মতে ফ্যাসিবাদ হল চরম জাতিদাম্ভিক, সাম্রাজ্যবাদী লগ্নীপুঁজির সবচেয়ে প্রকাশ্য সন্ত্রাসবাদী একনায়কত্ব। তিনি স্পষ্টতই বলেন ফ্যাসিবাদ হল লগ্নি পুঁজিরই এক আগ্রাসী শক্তি। এ হল শ্রমিকশ্রেণি, কৃষক ও বুদ্ধিজীবীদের বিপ্লবী অংশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী প্রতিহিংসার সংগঠন, ফ্যাসিবাদ হল জাতি ও ধর্ম বিদ্বেষের নগ্নতম রূপ যা অপরাপর জাতি ও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পাশবিক ঘৃণার প্ররোচনা দেয়।

বিংশ শতাব্দীর পুঁজিবাদের সংকট থেকেই ফ্যাসিবাদের উৎপত্তি, বিকাশ ও পরিণতি। এই শতকের ’২০ এর দশকে মুসোলিনীর হাতে এর বিকাশ এবং ’৩০ এর দশকে হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানিতে ফ্যাসিবাদের সবচেয়ে আগ্রাসী আর্বিভাব। এর জাতিগত বিদ্বেষের প্রকাশ আমরা দেখি ইতালির আফ্রিকা অভিযান ও আবিসিনিয়া দখল, হিটলারের পুরো ইউরোপ দখল ও জাপানের চীন দখল ও এশিয়া অভিযান। এটা ছিল ফ্যাসিবাদী অক্ষ শক্তির পুরো পৃথিবী দখলের পরিকল্পনা ও ভয়ংকর যুদ্ধাভিযান। পুরো ইউরোপ দখল করে ১৯৪১ সালে ২২ জুন গভীর রাতে হিটলার সোভিয়েত রাশিয়া আক্রমণ করে। পৃথিবীর প্রথম সমাজতান্ত্রিক দেশ সোভিয়েত রাশিয়া বলতে গেলে একাই অকল্পনীয় ত্যাগ, ধ্বংস ও মৃত্যুর বিনিময়ে ফ্যাসিবাদী জার্মান যুদ্ধ যন্ত্রকে স্তব্ধ করে দেয়। পরাজিত হিটলার আত্মহত্যা করে। ১৯৪৫ সালে মে মাসে ফ্যাসিবাদ পরাজিত হয়। এটাই ফ্যাসিবাদের উৎপত্তি ও ধ্বংসের ইতিহাস। এতে দুর্বল হয়ে পড়ে বিশ্ব পুঁজিবাদ। অতি দ্রুত ভেঙে পড়ে ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা। এতে করে সেদিন ইউরোপ ও বিশ্ব পরিসরে ফ্যাসিবাদের বিলুপ্তি ঘটে পরবর্তীতে কিন্তু পুনরাবির্ভাব হয় ফ্যাসিবাদী শাসন পদ্ধতি।

পুঁজিবাদ এর পর কিছুদিন উদার গণতন্ত্র ও কেইনসীয় মিশ্র অর্থনীতির পথে হাঁটে ও দ্রুত এগুতে থাকে অর্থনৈতিক বিকাশের পথে। কিন্তু ১৯৭০ এর দশকের মাঝামাঝি বিশ্বপুঁজিবাদ তার বিকাশের নিয়মেই আবার তীব্র সংকটে পড়ে যা ংঃধমভষধঃরড়হ নামে খ্যাত। স্থবিরতা ও মূল্যস্ফিতির কবলে পড়ে বিশ্ব পুঁজিবাদ। এই সংকট থেকে মুক্তির জন্য ফ্রেডরিক হায়েক ও ফ্রিডম্যান নামে দুই মার্কিন অর্থনীতিবিদের সুপারিশে ও বিশ্ব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় নয়া উদারবাদী বা লুটেরা অর্থনীতির নবতর প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক অর্থনীতির পর্বে প্রবেশ করে বিশ্ব পুঁজিবাদ। ১৯৯০ সালে সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের বিপর্যয় ও ব্যর্থতা এই লুটেরা পুঁজির ধারা ও দূর্বৃত্তায়িত রাজনৈতিক অর্থনীতিকে বেগবান ও বিশ্বব্যাপী সাময়িক ভাবে গ্রহণযোগ্য করে তুলে।

অনুন্নত সদ্য স্বাধীন দেশগুলোকে তথাকথিত ‘ওয়াশিংটন সম্মতি’র’ আলোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ মিলে হত্যা, ক্যু, অর্থসাহায্য বন্ধের চাপ সহ নানা উপায়ে রেজিম চেঞ্জের মাধ্যমে এই নয়া উদারবাদী বা লুটেরা মুক্তবাজার অর্থনীতি অনুসরণ করতে বাধ্য করা হয়। সে সব দেশের অর্থনীতির সরকারি মালিকানায় থাকা আর্থিক ব্যবস্থা তথা ব্যাংক, বীমা, কলকারখানা কাঠামোগত সংস্কারের নামে স্রেফ নাম মাত্র মূল্যে কিছু প্রভাবশালী লুটেরা ব্যবসায়ীর হাতে ছেড়ে দেয়া হয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ সব কিছু প্রাইভেটাইজেশনে নিয়ে আসা হয়। সুলভে এই বিপুল সরকারি সম্পত্তি পেয়ে যাওয়া মুনাফালোভীরা রাতারাতি হয়ে উঠে শতকোটি টাকার মালিক। পরে তারাই পরিণত হয় স্ব স্ব দেশের শক্তিশালী ফিনান্স অলিগার্কে। তারা নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আর্থিক খাত, প্রচার মাধ্যম সহ পুরো দেশ ও ক্রমে দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতা। ১৯৮০’র দশকে এরশাদের সামরিক স্বৈরশাসনামলে আমাদের দেশে এই ফিন্যান্স অলিগার্কের দ্রুত বিকাশ ঘটে। এই দুর্বৃত্তায়িত রাজনৈতিক অর্থনীতির অনুষঙ্গ হিসাবে আমাদের মত অনুন্নত দেশগুলোর জনমানসে অদৃষ্টবাদিতা, পারলৌকিকতা ও ধর্মান্ধতার রাজনীতির দ্রুত বিস্তার ঘটে। মার্কিনী সুপারিশে চালু এই নয়া উদারবাদী লুটেরা অর্থনীতির শাসন আমাদের মত দেশে চালাতে গেলে গণ অসন্তোষের মুখে অবশ্যই শাসকদল ও গোষ্ঠীকে ফ্যাসিবাদী পদ্ধতি তথা গণতন্ত্রহীনতা, নির্বাচনী প্রহসন, জবরদস্তি, মত প্রকাশের ও মিডিয়ার স্বাধীনতা খর্ব করতেই হবে। চালু করতে হবে ধর্মীয় সংখ্যাগুরুবাদের একদর্শী মতান্ধতার ফ্যাসিবাদী পদ্ধতি। গত ৪০ বছর ধরে এটাই করা হয়েছে ধারাবাহিকভাবে। হাসিনা সরকারের আমলে ১৫ বছর এই দুর্বত্তায়িত প্রক্রিয়া প্রবলতর হয়েছে। বিগত সরকারের পতনের পরে এই আর্থ রাজনৈতিক ব্যবস্থা বদলের কথা না বলে শুধুমাত্র এই ব্যবস্থার সৃষ্ট জঞ্জাল নিয়ে মাতামাতি চলছে। এরি ধারাবাহিকতায় পাকবাহিনী ও তাদের এদেশীয় সহযোগীদের নজিরবিহীন গণহত্যা, চরম মানবতাবিরোধী অপরাধের ইতিহাসকে মুছে দেবার, মহান মুক্তিযুদ্ধকে লঘু ও গুরুত্বহীন করার দুর্বৃত্তায়িত অপচেষ্টা গত ৫৪ বছর ধরে নানা মাত্রায় অব্যাহতভাবে চলেছে এবং হাসিনা সরকারের পতন পরবর্তী সময়ে তা পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রশক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় যে করা হচ্ছে তা স্পষ্ট। যৌথ নেত্বত্ব নয় মুক্তিযুদ্ধ এককভাবে একটি পারিবারিক অবদানের ফসল, দল হিসাবে আওয়ামী লীগ ও এর সরকারের এই মিথ্যা বয়ান মুক্তিযুদ্ধের ক্ষতি করেছে সব চেয়ে বেশি। এটাই আজ মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের ’৭১ কে আড়াল করার সুযোগ করে দিয়েছে।

মুক্তবাজার অর্থনীতিই আজকের গণতন্ত্রহীনতা, লুটেরাতন্ত্র, ক্লেপ্টোক্র্যাসি বা চোরতন্ত্রের জন্ম দিয়েছে, তৈরি করেছে স্বৈরশাসনের দানব। কেউ কিন্তু ঐ ব্যবস্থা বদলের কথা বলছে না। ফ্যাসিবাদের উৎপত্তি, এর বিশ্বজনীন প্রেক্ষিত নিয়ে আলোচনা নেই। সংস্কার সংস্কার করে এক বছর কাটল। কিন্তু কিছু মৌলিক ও অতি প্রয়োজনীয় সংস্কার মূলক কাজ যেমন বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের পৃথকীকরণ, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার স্বশাসন নিশ্চিত, বাক, ব্যক্তি ও সংবাদ মাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা, নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনকালীন সময়ে পূর্ণ ক্ষমতায়ন, নির্বাচনকে অর্থ, পেশী ও সাম্প্রদায়িক প্রচারণামুক্ত করার ব্যবস্থা সুশাসনের জন্য, ফ্যাসিবাদী পদ্ধতি প্রতিরোধে স্বীকৃত এসব পদক্ষেপ কার্যকর করার সরকারি ঘোষণা (ঢ়ৎড়পষধসধঃরড়হ) দিয়ে দেশকে নির্বাচনের পথে তথা গণতন্ত্রহীনতার কবল থেকে বের করে আনার ব্যবস্থা করা যেত। কেননা এই সব বিষয় কোন দল গোপনে অপছন্দ করলেও প্রকাশ্যে দ্বিমত করতে পারত না। অবাধ নির্বাচন, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শাসন, একটি স্থায়ী পদ্ধতি হিসাবে গড়ে তোলার এই সুস্থ বন্দোবস্ত ছাড়া যারা ‘নয়া বন্দোবস্তের’ কথা বলছেন তারা মূলত মধ্যপন্থার নামে ’৪৭ ও ’৭১কে একই নিক্তিতে বিচার করে, ’৭২ এর লক্ষ মানুষের রক্তে ভেজা সংবিধান বাতিল করে ধর্ম ভিত্তিক জাতিরাষ্ট্রের বন্দোবস্ত কায়েম করার কথা যে বলছেন তা তো স্পষ্ট। বিরাজমান অস্থিরতার মধ্যে দীর্ঘ এক বছর পরেও মবোক্র্যাসি বা মব সহিংসতাকে সরকারি মুখপাত্র জনরোষ বলছেন, নারী, সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ, যত্রতত্র ধর্ম অবমাননার নামে মন্দির ও মাজার ভাঙার শত শত ঘটনার একটির বিরুদ্ধেও দৃষ্টান্ত মূলক ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। লালন ও বাউলরা কি ফ্যাসিবাদী দোসর? ময়মনসিংহ শহরের শশী লজের শতাব্দীর প্রাচীন ভেনাসের মূর্তি কি মুজিববাদের প্রতীক? গোষ্ঠী বিশেষের এসব অপতৎপরতার জন্যই নিশ্চয় বৈষম্য বিরোধী গণজাগরণ সংগঠিত হয়নি। মূলত এখন সংখ্যাগরিষ্টবাদী জবরদস্তির ফ্যাসিবাদী তাণ্ডব চলছে। দুর্বৃত্তায়িত রাজনৈতিক অর্থনীতির উৎস আড়াল করে, এর প্রগতিবিরোধী চরিত্র স্পষ্ট না করে, আমাদের দেশের বিশেষ পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদী জাতিদম্ভ যা ধর্মীয় জাতীয়তাবাদ রূপে বিবেচিত তা অব্যাহত রেখে, মিডিয়ার নিয়ন্ত্রিত স্বাধীনতা দিয়ে, ঐতিহাসিক ভাবে রাজনৈতিক ও আদর্শিক মতভেদে বিভক্ত দলগুলোকে সাংবিধানিক সংস্কারের নামে পরোক্ষভাবে জোর করে ঐক্যমতে নিয়ে আসার নামে কালক্ষেপণ করে মূল লক্ষ্য নির্বাচনী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কাজ প্রলম্বিত করার মাধ্যমে অরাজক পরিস্থিতি তৈরী করে একটি মহল নবতর এক স্বৈরশাসনের পথে, পূর্বের মত ফ্যাসিবাদী পদ্ধতির শাসনের ধারায় দেশকে নিয়ে যেতে চাইছেন। এক অদৃষ্টপূর্ব সংকট আজ তাড়া করছে সুস্থ ও স্বাভাবিক জনজীবনকে।

ফ্যাসিবাদী পদ্ধতিতে দীর্ঘদিন ধরে দেশ শাসনের ফলে সৃষ্ট এই সংকটের ধারা থেকে গণতন্ত্রহীনতা, সাম্প্রদায়িক বৈষম্য ও শাসকগোষ্ঠীর সাম্রাজ্যবাদী আনুগত্যের ধারা থেকে দেশকে মুক্ত করার এমনকি ন্যূনতম স্থায়ী বুর্জোয়া গণতন্ত্রের জবাবদিহি মূলক ধারায় দেশকে নিয়ে যাবার ঐতিহাসিক কর্তব্য সম্পাদনের দায়িত্ব দক্ষিণ পন্থার বিপরীতে এক দিকে মধ্য ও বামপন্থী বৃহত্তর গণতান্ত্রিক জোট, দল ও মুক্তবুদ্ধি চর্চায় বিশ্বাসী ব্যক্তিদের যেমন আজ নিতে হবে তেমনি অন্যদিকে বামপন্থীদের মেহনতী মানুষের শ্রেণি সংগ্রাম জোরদার করার বহুল উচ্চারিত প্রতিজ্ঞা বাস্তবে প্রতিপালন করা ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশ্রুত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ পুনরুদ্ধার করা কখনো সম্ভব হবে না।

লেখক: প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমানুষের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব সরকারের
পরবর্তী নিবন্ধআনোয়ারায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হিরু গ্রেপ্তার