চট্টগ্রামে দ্বিতীয়বারের মত চালু হলো ‘সিএমপি-বিদ্যানন্দ ফিল্ড হাসপাতালের’ কার্যক্রম। গতকাল মঙ্গলবার নগরীর পাহাড়তলি সাগরিকা রোডে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুতল ভবনে ৭০ শয্যার এই হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন বলেন, বিদ্যানন্দ মানবতার সেবায় অনুকরণীয় দায়িত্ব পালন করছে এবং করোনার সংকট মোকাবেলায় স্থাপিত ফিল্ড হাসপাতাল একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। খবর বিডিনিউজের।
দরিদ্র মানুষ যেন এই হাসপাতালে বিনামূল্যে সেবা পায় সেজন্য প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিল্ডিংটি বিদ্যানন্দকে দেওয়া হয়েছে। এমন উত্তম কাজে চট্টগ্রামবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে, যেন দুস্থ করোনা রোগী সহজে চিকিৎসা সেবা পায়।
প্রধান অতিথি চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, এ হাসপাতালের পাশে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ থাকবে। সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে এই হাসপাতালের অগ্রযাত্রায়। গত বছরের জুলাই মাসে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় পতেঙ্গায় ১০০ শয্যার সিএমপি-বিদ্যানন্দ ফিল্ড হাসপাতাল যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু অর্থসংকট ও স্থানাভাবে গত বছরের অক্টোবরে হাসপাতালটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন নতুন হাসপাতাল চালুর জন্য ভবন দিতে সম্মত হয় প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর গত বছরের ২০ নভেম্বর ওই ভবনে ৫০ শয্যার ‘বিদ্যানন্দ মা ও শিশু হাসপাতাল’ যাত্রা শুরু করে। এখন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ায় সেই হাসপাতালটিই আবার কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য ফিল্ড হাসপাতালে রূপান্তর করা হলো। মা ও শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম নগরীর বিভিন্ন স্থানে ক্যাম্প পরিচালনার মাধ্যমে চালু থাকবে বলে জানান হাসপাতালের সমন্বয়ক জামাল উদ্দিন।
মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্বাগত বক্তব্যে এই হাসপাতালেই আইসোলেশনে থাকা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাশ বলেন, যতদিন করোনার আক্রমণ থাকবে ততদিন এই হাসপাতাল চলবে। সবাইকে এই হাসপাতালে রোগী পাঠানোর অনুরোধ জানাই। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক শিপ্রা দাশ বলেন, একজন করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতার বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা হাসপাতালটি সাজিয়েছি। চিকিৎসা নিতে এক টাকাও গুণতে হবে না।
সিএমপি-বিদ্যানন্দ ফিল্ড হাসপাতালের সমন্বয়ক জামাল উদ্দিন জানান, জনগণের টাকায় পরিচালিত এই হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপোর্টসহ থাকছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ১০ জন চিকিৎসক, আটজন নার্স ও ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক। পাশাপাশি সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স সেবা, অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর ও হাই ফ্লো নেইজল ক্যানুলা আছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ একেএম তফজল হক, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন) মো. শামসুল আলম, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথন ও ডিসি (হেড কোয়ার্টার) আমির জাফর।