ফেব্রুয়ারিতে ভোট : সরকারকে সাধুবাদ তারেকের

গণতন্ত্রের পক্ষের দলগুলোর মধ্যে যেন মুখ দেখাদেখি বন্ধ না হয়, এ কারণে সবার ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন

| বৃহস্পতিবার , ৭ আগস্ট, ২০২৫ at ৬:২১ পূর্বাহ্ণ

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের পাশাপাশি আগামী ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল বুধবার দলের এক সমাবেশে তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার মঙ্গলবার জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করেছে। জনগণের অভিপ্রায় বাস্তবায়নের দাবিতে জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা করা হয়েছে। জনগণের অধিকার বাস্তবায়নের এসব উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। মানুষের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার যাত্রায় বর্তমানে আমরা ইতিহাসের যে সন্ধিক্ষণ পার করছি, তাতে পৌঁছাতে জনগণকে দেড় দশকের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। ফ্যাসিবাদের দীর্ঘ সময়ে এ আন্দোলনে আমরা আমাদের হাজারো সহকর্মীকে হারিয়েছি, আমাদের অনেক সন্তানস্বজনের বুকের তাজা রক্ত দেখতে হয়েছে।

নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিকাল সাড়ে ৩টায় শুরু হয় এ সংক্ষিপ্ত সমাবেশ। সেখানে তারেক রহমানের বক্তব্যের পর বিকাল সাড়ে ৪টায় শুরু হয় বিজয় শোভাযাত্রা। জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এ শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয়। এতে আশপাশের জেলার নেতাকর্মীরাও যোগ দেন। ফলে ফকিরাপুল থেকে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত সড়কটি লোকজনে ভরে ওঠে। বিজয় মিছিলটি পল্টন মোড় থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব, কদম ফোয়ারা, মৎস্যভবন মোড় ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সড়ক হয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়। এদিন ঢাকা ছাড়াও সব বিভাগীয় শহরে একযোগে বিজয় শোভাযাত্রা করে বিএনপি। খবর বিডিনিউজের।

গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় জাতীয় স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তারেক রহমান বলেন, প্রিয় রাজনৈতিক দলের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মতভেদ থাকবে। কিন্তু সেই ভিন্ন মত নিরসনে আলোচনা হবে। গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেন মুখ দেখাদেখি বন্ধ না হয়, সেই লক্ষ্যে জাতীয় স্বার্থে আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। কারণ আমি বিশ্বাস করি, ধর্ম, দর্শন কিংবা মত যার যার, রাষ্ট্র আমাদের সবার। তারেক রহমান বলেন, জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে বিএনপি কী ধরনের রাষ্ট্র, সরকার এবং রাজনীতি করবে, সে বিষয়ে ইতোমধ্যে ৩১ দফার একটি রূপরেখা জনগণের সামনে আমরা তুলে ধরেছি। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করে সংস্কার প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে। দেশ ও জনগণের কল্যাণে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য বিএনপি জনগণের সমর্থন এবং সহযোগিতা চায়।

তারেক রহমান বলেন, পতিত পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের আমলে দেশে অন্ধকারের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছিল। আমি বলব আজকের এ যাত্রা হলো অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আলোর পথের যাত্রা। তবে এ যাত্রা কিন্তু খুব সহজ নয়। বর্তমানে দেশের জনগণের সামনে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক অপার সম্ভাবনা এবং সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমরা যদি এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশের জনগণের রাজনৈতিক শক্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি, জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আর কেউ ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ পাবে না।

তারেক রহমান বলেন, আমি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, যিনি যে রাজনৈতিক দলের সদস্যই হন না কেন, আমাদের অবশ্যই সবার কথা মনে রাখা দরকার। দেশে যদি গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন না থাকে, তাহলে আমরা কেউই নিরাপদ নই। একমাত্র গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনই আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারে।

দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস ও সালাহউদ্দিন আহমদ। সমাবেশে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, শাহজাদা মিয়া, লুৎফুজ্জামান বাবর, খায়রুল কবির খোকন ও হাবিব উন নবী খান সোহেল উপস্থিতি ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘কিন্তু’ থাকলেও জুলাই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানাচ্ছে এনসিপি
পরবর্তী নিবন্ধআমরা নির্বাচনের ট্রেনে চড়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি