ফেব্রুয়ারির ভোটে কোথাও দ্বিমত দেখছে না বিএনপি

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ১৮ জুন, ২০২৫ at ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের যে আভাস দিয়েছেন, তা নিয়ে কোথাও দ্বিমত নেই বলে মনে করছে বিএনপি। ঢাকায় গতকাল মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমার মনে হয়, রমজানের আগে নির্বাচনের ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য আছে; সবারই মতামত এটা। এ জায়গা নিয়ে দ্বিমত কোথাও আছে বলে আমরা মনে করি না। কারণ, বিভিন্ন কারণে আমরা এ জায়গায়টায় এসেছি এবং জাতি এখানে ঐকমত্য পোষণ করছে। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।

শুক্রবার লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে ইউনূস ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দেওয়ার আভাস দেন। ইউনূস ও তারেকের এই যৌথ বিবৃতি নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)

এমন প্রেক্ষাপটে আমীর খসরু বলছেন, আপনারা নিশ্চয়ই আমার চেয়ে ভালো জানেন, জাতি কিন্তু আনন্দিত এ রকম একটি সিদ্ধান্ত আসার পর। সবার মধ্যে একটা স্বস্তি ফিরে এসেছে এবং এ জায়গাটায় আমি কোনো অসুবিধা দেখছি না। আর নির্বাচনের দিনক্ষণ যেটা, সেটা তো আর সরকার বলতে পারবে না; আমরাও বলতে পারব না। সেটা নির্বাচন কমিশন থেকে আসবে। আমরা সেটার অপেক্ষা করব।

যৌথ ঘোষণা নিয়ে জামায়াতের আপত্তির বিষয়ে জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, অন্য কোনো দলের মতামতের বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। সবার মতামত দেওয়ার অধিকার থাকতে হবে, কথা বলার অধিকার থাকতে হবে।

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ ব্রিফিং হয়। সেখানে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদও ছিলেন। লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, লন্ডন বৈঠকের পর জাতি কিন্তু অত্যন্ত আনন্দিত। সবার মধ্যে একটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। এই জায়গাটার মধ্যে কোনো অসুবিধা আমি দেখছি না। আর দিনক্ষণ যেটা, সেটা তো নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করবে। সেটা তো আর সরকার বলতে পারবে না, আমরাও বলতে পারব না। নির্বাচনের তারিখ নির্বাচন কমিশন থেকে আসবে এবং আমরা সেটার জন্য অপেক্ষা করব। নিশ্চয়ই আগামী দিনে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে একটা দিনক্ষণ ঘোষণা করা হবে। এটার জন্য একটু আমাদেরও ধৈর্য থাকতে হবে।

তিনি বলেন, একদম অস্থিরতার মধ্যে সারাক্ষণ থাকলে তো হবে না। একটু তো ধৈর্য ধরতে হবে। একটু সহনশীল হতে হবে। আমাদের মধ্যে আস্থারও একটা ব্যাপার আছে। আমরা যদি একেবারে আস্থাহীন হয়ে যাই, একদম অস্থিরতার মধ্যে থাকলে তো সমস্যা। এটা কোনো জাতির জন্য কাম্য না। আমরা সঠিক পথে যাব, জাতি অবশ্যই একটা গণতান্ত্রিক পথে চলছে। আমরা সেটা সমাধান করতে পারব। একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরে আসবে, অতটুকু আস্থা আমাদের সবাইকে রাখতে হবে।

সরকারের তরফ থেকে নির্বাচন কমিশনকে কোনো বার্তা দেওয়া যায় কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নিশ্চয়ই। এটা নিয়ে সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কথা হবে। এটা তো খুবই স্বাভাবিক। এটা তো রুটিন ব্যাপার। সুতরাং আমরা সবাই একটু ধৈর্য ধরে সময় দেই। লন্ডনে যে বৈঠক হয়েছে, এটা আমার মনে হয় জাতির জন্য একটা বড় ধরনের ইতিবাচক ঘটনা ঘটেছে। আমরা ওইটাকে সেভাবেই দেখি। এর মধ্যে কোনো ধরনের প্রশ্নবিদ্ধ করে আমাদের ভবিষ্যৎ, সামনে চলার পথ বিঘ্নিত করা ঠিক হবে না। আমি তো মনে করি খুবই সুষ্ঠু একটা বিবেচনাপ্রসূত আলোপআলোচনা, কথাবার্তা, সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা একটু ধৈর্য সহকারে এগুতে থাকি। সবকিছুর সমাধান আগামী দিনে হবে এবং সময়মতো দেশে নির্বাচন হবে। দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। জনগণের যে ভোটাধিকার, মানবাধিকার, তার মালিকানা ফিরে পাওয়া, যার জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করেছি আমরা, সময়মতো হয়ে যাবে। দেশ সেদিকেই যাচ্ছে সেটা আমরা বিশ্বাস করি।

ডিএসসিসির মেয়র পদে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ পড়ানো নিয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের এই সদস্য বলেন, আইনগতভাবে কোর্টের রায় হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও আসছে। সুতরাং সবাই অপেক্ষায় আছে। আমরা দেখি সরকার কী সিদ্ধান্ত দেয়। একটু অপেক্ষা করি, একটু ধৈর্য ধরি। নিশ্চিতভাবে সরকার আইনের শাসনে বিশ্বাস করে। আমরা সবাই বিশ্বাস করি। সুতরাং আমরা একটু ধৈর্য ধরি।

আগামী দিনে বিএনপি বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে একটা বড় পরিবর্তন আনতে চায় উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, জাতীয় স্বার্থে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকা, জাতীয় স্বার্থের জায়গায় ঐকমত্যের ওপর জোর দিচ্ছে বিএনপি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটিসিবির ট্রাকসেল বন্ধ, বিপাকে সাধারণ মানুষ
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব কারাগারে