আমরাই পারি ফুলদানিকে ডাস্টবিন বানাতে আবার আমরাই পারি ডাস্টবিনকে ফুলদানি বানাতে
গত ১৮ জুন নগরীর আউটার স্টেডিয়ামে নির্মিত মুক্তমঞ্চের একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলাম।
ছবিটার উপরের অংশ আলোকিত, সুন্দর। নিচের অংশ ময়লায় পরিপূর্ণ। ছবিটি তোলার সময় গা শির শির করছিল।
প্রতিদিন জায়গাটাতে আড্ডা হয়। বৃষ্টির কারণে জায়গাটি তখন ফাঁকা ছিল। সেই ফাঁকাই ময়লা আবর্জনাকে উন্মোচিত করেছে। যারা সেখানে আড্ডা দেয় তাদের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া। এত সুন্দর স্থাপনা করা হয়েছে বলেই তারা বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নিবিড় বন্ধনে কাটাতে পারে কিন্তু তারা চা-কফি আর ফাস্ট ফুড খেতে খেতে সেখানে আবর্জনার পাহাড় গড়তে থাকে।
নিজের আশেপাশের পরিবেশ যে সুন্দর রাখতে হয়। সেটা রাখলে যে নিজের জন্যই মঙ্গল সেটা তারা বুঝে না। জানি না এই সচেতনতা কবে আসবে।
আমরাই পারি ফুলদানিকে ডাস্টবিন বানাতে আবার আমরাই পারি ডাস্টবিনকে ফুলদানি বানাতে।
আমার ছবিটি দেখার পর আমার প্রিয় ছাত্র হাছান মোহাম্মদ শাকিল মন্তব্য লিখেছিল। শাকিলের মতো সবাই ভাবলে আমরা একটি অনন্য সুন্দর বাংলাদেশ পেতাম।
আমরা নিজেরা ঠিক না হলে সরকারের পক্ষে কোনো ভালো কাজ করে সেটা রক্ষা করা সম্ভব নয়।
১৯ জুন সকালে গিয়ে জায়গাটির আরও ছবি তুললাম।
শাকিল তার মন্তব্যে যা লিখেছে তা এখানে হুবহু তুলে ধরলাম।
“আমরা ছবিটির দিকে ভালো করে লক্ষ্য করি। যদি ময়লাগুলো নির্দিষ্ট জায়গায় থাকত ছবিটি দেখতে আরো বহুগুণ বেশি সুন্দর লাগত কিন্তু আফসোস, ছবিটি আমরা বহুগুণ বেশি সুন্দর দেখতে পারিনি। আমাদের দায়িত্ববোধ, মানসম্পন্ন রুচিবোধ না থাকার কারণে।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস এখানে যারা আড্ডা দেন তারা সবাই শিক্ষিত, উচ্চ শিক্ষিত কিন্তু আফসোস, আমাদের এই শিক্ষা শুধু বই, খাতা, কলমের গণ্ডিতে আবদ্ধ। আমাদের শিক্ষা এখনো আমাদের দায়িত্ববোধ সম্পন্ন করতে পারেনি। আমরা যদি আমাদের দায়িত্ববোধ জাগ্রত করতে না পারি তবে আমরা সুন্দর বাংলাদেশ কখনও পাবো না।
প্রায় সময় একটা উদাহরণ শুনতে পাই। আমাদের দেশ কখন ইউরোপের দেশগুলোর বা মধ্যপ্রাচ্যের উন্নত দেশগুলোর মতো এতো সুন্দর, পরিষ্কার, ময়লাবিহীন হবে কিন্তু আমরা কি কখনও ঐসব দেশের মানুষের মতো হওয়ার কথা চিন্তা করেছি। ঐসব দেশের নাগরিকদের মতো দায়িত্বশীল, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কথা ভেবেছিলাম, না আমরা শুধু ভেবেছি ঐসব দেশের মতো হবে আমাদের দেশ কিন্তু আফসোস, আমরা ভাবিনি আমরা ঐসব দেশের মানুষের মতো দায়িত্বশীল, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবো।
আমরা যেদিন নিজের দায়িত্ব ভেবে ময়লাগুলো নির্দিষ্ট জায়গায় রাখব তখন থেকে আমরা বহুগুণ বেশি সুন্দর বাংলাদেশ দেখতে পারব। আমাদের সবাইকে নিজের জায়গা থেকে দায়িত্বশীল হতে হবে। নিজেকে আগে পরিবর্তন করতে হবে, তারপর অন্যকে পরিবর্তন করতে হবে, আমরা চাইলে আমরা সব করতে পারি।
আমরা ফেসবুকে কত কিছু ভাইরাল করি। কখনও তো নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলার বিষয়টি ভাইরাল করতে পারিনি। একবার আমরা সবাই একসাথে একটা পোস্ট করি।”