ফুটবলের ভুবনে লিওনেল মেসি ও আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার পথচলা শুরু বার্সেলোনার আঙিনায়। কাতালান ক্লাবটির একাডেমিতে বেড়ে উঠে লম্বা একটা সময় তারা খেলেছেন একসঙ্গে। ছড়িয়েছেন আলো, জিতেছেন অসংখ্য শিরোপা। ফুটবল থেকে সাবেক সেই সতীর্থের বিদায়বেলায় আর্জেন্টাইন মহাতারকার মনে পড়ছে পুরোনো অনেক স্মৃতি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোমবার এক ভিডিও বার্তায় ২২ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ারের ইতি টেনে দেন ৪০ বছর বয়সী ইনিয়েস্তা। এরপরই ইনস্টাগ্রামে স্প্যানিশ তারকা মিডফিল্ডারের সঙ্গে একটি ছবি দিয়ে সামনের পথচলার জন্য শুভকামনা জানান মেসি।
১২ বছর বয়সে ১৯৯৬ সালে বার্সেলোনার একাডেমিতে যোগ দেন ইনিয়েস্তা। ২০০২ সালে স্প্যানিশ ক্লাবটির মূল দলে অভিষেক হয় তার। আর মেসি লা মাসিয়াতে যোগ দেন ১৩ বছর বয়সে, ২০০০ সালে। চার বছর পর সুযোগ পান মূল দলে। বার্সেলোনায় এক যুগের বেশি সময় ধরে সতীর্থ ছিলেন মেসি ও ইনিয়েস্তা। এই সময়ে দু’হাত ভরে সাফল্য পেয়েছে স্প্যানিশ ক্লাবটি। এক দশকের মধ্যে চারবার তারা জেতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। সঙ্গে সাতটি লা লিগাসহ ঘরে তোলে আরও অনেক শিরোপা। আর এসব সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল আক্রমণের তারকা মেসি ও মাঝমাঠের নায়কদের একজন ইনিয়েস্তা। ২০১৮ সালে প্রিয় ঠিকানা বার্সেলোনা ছেড়ে জাপানের ক্লাব ভিসেল কোবেতে পাড়ি জমান ইনিয়েস্তা। গত বছরের অগাস্টে এক বছরের চুক্তিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্লাব এমিরেটসে যোগ দেন তিনি। ২০২৫ সাল পর্যন্ত দলটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ ছিল তার। তবে শেষের ডাক শুনতে পেয়ে ক্যারিয়ার আর দীর্ঘায়িত করলেন না তিনি। ২০২১ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে ফরাসি ক্লাব পিএসজিতে যোগ দেন মেসি। এখন তিনি খেলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে। সামাজিক মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ইনিয়েস্তাকে নিয়ে মেসি তুলে ধরলেন তার অনুভূতি। ‘জাদুকরী সতীর্থদের একজন এবং আমি যাদের সঙ্গে খেলতে সবচেয়ে বেশি উপভোগ করতাম, তাদের একজন। বল তোমাকে মিস করবে, সঙ্গে আমরাও। তোমাকে শুভকামনা, তুমি অসাধারণ।’ বার্সেলোনা মূল দলের হয়ে মোট ৬৭৪ ম্যাচ খেলেন ইনিয়েস্তা। ৪টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ৯টি লা লিগা, ৬টি কোপা দেল রেসহ ৩২টি শিরোপা জেতেন তিনি। তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সাফল্য স্পেনের হয়ে ২০১০ সালে বিশ্বকাপ জয়। সেবার ফাইনালে তার একমাত্র গোলেই নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে প্রথমবার বিশ্ব জয়ের মুকুট ঘরে তোলেন স্প্যানিশরা। জাতীয় দলের ২০০৮ ও ২০১২ সালে টানা দুটি ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয়েও তার ছিল বড় অবদান।