ফুটবলার সৃষ্টির কাজটা সম্মিলিতভাবে করতে চান শাহজাহান-স্বপন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

| শুক্রবার , ২৮ জুন, ২০২৪ at ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম হোক বা সারা দেশে, খেলোয়াড় সংকটের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হয় পাইপলাইনে খেলোয়াড় না থাকা বা পর্যাপ্ত খেলোয়াড় সৃষ্টি করতে না পারা। আর এই পাইপলাইনে খেলোয়াড় সৃষ্টির কাজটা সবচাইতে কঠিন। ফুটবলেও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে কঠিন হলেও সম্মিলিত চেষ্টা থাকলে ফুটবলার সৃষ্টি করাটা সম্ভব মনে করেন সিজেকেএস ফুটবল ডেভেলপম্যান্ট কমিটির চেয়ারম্যান মশিউল আলম স্বপন। সাবেক এই ফুটবলার কদিন আগে ঘোষিত সিজেকেএস সাব কমিটিতে ফুটবল ডেভেলপম্যান্ট কমিটিতে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন। আর ফুটবল কমিটিতে সম্পাদক হিসেবে আছেন মোহাম্মদ শাহজাহান। দুজনই সাবেক ফুটবলার এবং ফুটবলের জন্য একেবারে অন্তপ্রান মানুষ। ফুটবলই যেন তাদের ধ্যান জ্ঞান। ফুটবলের জন্য কিছু করতে পারাতেই যেন শান্তি খুজে পান দুজন। তাই অনেকের মতে জেলা ক্রীড়া সংস্থা ফুটবলে দারুন একটি জুটি গঠিত হয়েছে এই দুজনের সম্মিলনে। আর দুজন মিলে ফুটবলার সৃষ্টির কঠিন কাজটা করতে চান সবাইকে সাথে করে। যদিও চট্টগ্রামের প্রেক্ষাপটে কাজটা বেশ কঠিন।

আগের মেয়াদে ফুটবল সম্পাদক থাকাকালে মোহাম্মদ শাহজাহান ক্ষুদে ফুটবলারদের নিয়ে একটি ক্যাম্প পরিচালনা করেছিলেন। যদিও সেটি পূর্ণতা পায়নি। তিনি তার লক্ষ্যের কথা বরাবরই বলেছেন সেটা হচ্ছে একটি দীর্ঘ মেয়াদী ক্যাম্পের মাধ্যমে ফুটবলার সৃষ্টির চেষ্টা করা। যারা কেবলই খেলবে। তাদের মনে অণ্য কোন চিন্তা থাকবে না। একই কথার প্রতিধ্বনী করলেন মশিউল আলম স্বপনও। তবে তার ধারনাটা আরো প্রসারিত। তিনি চান একেবারে বাচ্চা বয়স থেকে ফুটবলারদের মাঠে নামাতে। বিশেষ করে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের নিয়ে কাজ শুরু করতে চান তিনি। যাদের প্রশিক্ষনের পাশাপাশি খেলানো হবে ম্যাচ এবং আয়োজন করা হবে টুর্নামেন্ট। কথায় রয়েছে যে হবে সে নয় বছরেই হবে। তাই শুরুটা করতে হবে সেই কচি বয়স থেকেই। ফুটবলের নতুন আইন অনুযায়ী জেলার ফুটবল পরিচালনার দায়িত্ব জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের। তারপরও চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা নিজেদের মত করে ফুটবলার সৃষ্টির প্রয়াসে ফুটবল কমিটি গঠন করে কাজ করে যাচ্ছে। এবারে আরো একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে । যার নাম ফুটবল ডেভেলপম্যান্ট কমিটি। এই কমিটির মাধ্যমে মুলত ফুটবলার সৃষ্টির কাজটা পরিচালিত হবে। আর এই কমিটির সাথে একাত্ন হয়ে কাজ করবে ফুটবল কমিটি। মূলত দু’কমিটি মিলে তৈরি করবে পরিকল্পনা।

মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন আমি চাই অন্তত ৫০ জন ছেলেকে নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে তাদের অনুশীলন করাতে। তাদের সবকিছু আমরা বহন করব। তারা কেবল খেলবে। এরপর তাদের খেলিয়ে খেলিয়ে বড় করা হবে। এভাবে চললে অবশ্যই খেলোয়াড় বেরিয়ে আসবে। তবে কোনভাবেই তাদের মাঝপথে ছেড়ে দেওয়া যাবেনা। পরিচর্যা করে তাদেরকে গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি বয়স ভিত্তিক নানা টুর্নামেন্ট আয়োজন করে ফুটবলের পাইপলাইন সমৃদ্ধ করতে হবে। মশিউল আলম স্বপন অবশ্য স্কুল ফুটবলটাকে গুরুত্ব দিতে চান। কারণ স্কুল থেকে অতীতে অনেক ফুটবলার উঠে এসেছে। তাই পরিকল্পনা করে স্কুল ফুটবলটা চালু করতে পারলে সেখান থেকেও ফুটবলার বেরিয়ে আসবে। তবে সহসা ফল খুজলে সেটা হবে বোকামি। সময় নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে এগুতে হবে। আমাদের দেশে বয়স ভিত্তিক ফুটবল নিয়ে সবচাইতে বেশি দুর্নীতি হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। কারন এসব খেলায় বয়স লুকানোর একটা প্রবনতা চলে আসছেন দীর্ঘ দিন ধরে। ফলে যে উদ্দেশ্যে এই বয়স ভিত্তিক ফুটবলের আয়োজন করা হয় সেটা সফল হয়না। শাহজাহান এবং স্বপন দুজনেই চান এই বয়স ভিত্তিক ফুটবলে স্বচ্ছতা আনতে। সঠিক বয়স নির্ধারনের মাধ্যমে খেলোয়াড় বাছাই করতে। এ জন্য যেখান থেকে যার যার সহযোগিতা প্রয়োজন সেখান থেকে সহযোগিতা নিতে চান তারা। কারণ শুরুতেই ভুল পথে পরিচালিত হলে খেলোয়াড় বের করে আনা কঠিন বলে মনে করেন দুজন। চট্টগ্রামেই একমাত্র ব্যতিক্রম যেখানে জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থা একসাথে কাজ করে। তাই এ দুজনের কাজে জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সাথে কোন ধরনের সংঘাত হওয়ার কোন সম্ভাবনা দেখেন না। তারা বলেণ যে যার যার অবস্থান থেকে ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করলে অবশ্যই সুফল আসবে। তব সব কথার শেষ কথা হচ্ছে যত পরিকল্পনাই করা হোকনা কেন সে সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাই অর্থ। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থায় এখন যতেষ্ট অর্থ রয়েছে। তাই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অর্থের যোগানটা দিতে হবে সর্বাগ্রে। পাশাপাশি মাঠ সংকটটা একটি বড় সমস্যা। তবে আশার কথা হচ্ছে আউটার স্টেডিয়ামটা সংষ্কার হওয়ায় বাচ্চাদের ফুটবলের জন্য এই মাঠটি ব্যবহার করতে পারলে সুফল পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন তারা। তবে সততা এবং আন্তরিকতা নিয়ে দুজনই কাজ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এক্ষেত্রে চান সবার উদার সহযোগিতা। জেলা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন উপ পুলিশ কমিশনার দক্ষিণ মোস্তাফিজুর রহমান। সহ সভাপতি আছেন ছয় জন। তারা হলেন জহির আহমেদ চৌধুরী, প্রদীপ কুমপার ভট্টচার্য, শাহাদাত হোসেন, লোকমান হাকিম মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মাহমুদুর রহমান মাহবুব এবং নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনজন যুগ্ম সম্পাদক হলেন আখতারুজ্জামান, সালাউদ্দিন জাহেদ এবং জসিম আহমেদ। এছাড়া সদস্য হিসেবে আছেন এস এম শহীদুল ইসলাম, মনসুরুল আলম চৌধুরী, সজিব বিকাশ বড়ুয়া টুটুল, সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, জসিম উদ্দিন, জাহেদ হোসেন, ইয়াসির আরাফাত চৌধুরী পাবলু, হাসান মুরাদ, আবু বক্কর সিদ্দিক, আলি হাসান রাজু, জসিমুল হুদা, শহীদুল ইসলাম এবং শাহজাহান সামি। অপরদিকে ফুটবল ডেভেলপম্যান্ট কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে মশিউল আলম স্বপনকে। যুগ্ম আহবায়ক সুলতান মাহমুদ খান শাহীন এবং ওসমান গনি রানা। সদস্য সচিব ডা. সৈয়দ সাইফুল ইসলাম। সদস্যরা হলেন মোহাম্মদ শাহজাহান, জাফর ইকবাল, মোহাম্মদ জাফর, আসাদুজ্জামান খান, হারুন অর রশিদ, মোশারফ হোসেন লিটন, আবু সরওয়ার চৌধুরী এবং সাবেক জাতীয় ফুটবলার এবং অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম মামুন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহেরেও রাশিদ বললেন তাদের কেবলই শুরু
পরবর্তী নিবন্ধসেমিফাইনালের উইকেট নিয়ে ক্ষোভ আফগান কোচের