ঈদকে কেন্দ্র করে নগরীর বিভিন্ন ব্যস্ততম মোড়ের ফুটপাতে বিভিন্ন ধরণের পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ভাসমান হকাররা। সন্ধ্যা হলে এখানে ভিড় বাড়তে থাকে। মূলত নিম্নবিত্তশ্রেণীর লোকজন ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করেন। যদিও অভিজাত বিপণী থেকে রাস্তার ফুটপাত সবখানে এখন চলছে ঈদের জমজমাট বেচাবিক্রি। এছাড়া ফুটপাতের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ ভ্যানগাড়িতেও চলছে ঈদের কেনাকাটা।
গতকাল সরেজমিনে নগরীর আগ্রাবাদ, নিউ মার্কেট, লালদীঘির পাড়, আন্দরকিল্লা মোড় ও জিইসি মোড়ের ফুটপাত ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সী নারী–পুরুষ ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করছেন। কেবল নিম্নবিত্ত মানুষ নয়, নিম্ন মধ্যবিত্তের অনেকেও ফুটপাতের বিভিন্ন পণ্য খুটিয়ে দেখছেন। নিউমার্কেট মোড়ের বিক্রেতা ইলিয়াছ উদ্দিন বলেন, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেছি। এখন পর্যন্ত বেশ ভালো বেচাবিক্রি হচ্ছে। এখানে গত ৫ বছর ধরে ব্যবসা করছি। মাঝখানে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা হকার উচ্ছেদের আন্দোলন করলেও কিছুটা অনিশ্চয়তায় পড়ে যাই। তারপরেও ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করছি। এখন পর্যন্ত বেচাবিক্রি বেশ ভালো চলছে। নিউমার্কেট মোড়ের ফুটপাতে কথা হয় দিনমজুর আসিফ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, বউ–বাচ্চার জন্য কিছু পোশাক কিনতে এসেছি। নিজের জন্য কিছু কিনব না চিন্তা করেছি। নিজের জন্য না নিলেও পরিবারের ছোটদের জন্যই কাপড় কিনতে এসেছি।
নগরীর জিইসি মোড়ের ফুটপাতে তিন চাকার ভ্যান গাড়িতে শার্ট, প্যান্ট, লুঙ্গি ও শিশুদের ফ্রক বিক্রি করছেন ইমরান হোসেন। বেচাবিক্রির অবস্থা কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুপুরের পর থেকে মূলত বেচাবিক্রি শুরু হয়। সন্ধ্যার পর বিক্রির পরিমাণ বাড়ে। এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ বিক্রি হচ্ছে তাতে আমি সন্তুষ্ট। লালদীঘি পাড় এলাকায় কথা হয় একটি গার্মেন্টস কর্মী হোসনে আরা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা গরীব মানুষ। চাইলে তো মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটা করতে পারি না। ফুটপাতের দোকানে কম দামে সুন্দর সুন্দর পণ্য পাওয়া যায়। তাই প্রতি বছর ঈদের আগে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করতে ফুটপাতে আসি।
আগ্রাবাদ এলাকায় সিরাজুল ইসলাম নামের একজন বিক্রেতা বলেন, ফুটপাতের ব্যবসাতেও এখন আগের চেয়ে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। খরচের সাথে আয়ের তেমন সামঞ্জস্য নেই। দোকান ভাড়া কাদের দিতে হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাড়া অবশ্য নির্দিষ্ট না। পুলিশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা ভাড়ার টাকা নিয়ে থাকেন। এখন যেহেতু ঈদের মৌসুম তাই ভাড়াও বেশি গুনতে হবে।