নগরীর চর চাক্তাইয়ের ফিশারিঘাটে ভোরের আলো ফোটার আগেই আসতে শুরু করেন মাছ ব্যবসায়ীরা। ফিশারিঘাটে সাধারণত নগরী ও আশপাশের জেলা–উপজেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন। ভোর থেকে বিকিকিনি শুরু হয়ে চলে সকাল ৯টা পর্যন্ত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সামুদ্রিক ও মিঠা পানির মাছের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ব্যবসায় মন্দাভাব চলছে জানান ব্যবসায়ীরা। এছাড়া বর্তমানে গত ১৩ অক্টোবর থেকে আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা চলছে। বর্তমানে বাজারে এখন যেসব মাছ পাওয়া যায়, প্রায় সবই কোল্ড স্টোরেজের হিমায়িত মাছ।
ফিশারিঘাটের আড়তদাররা বলছেন, ফিশারিঘাট মূলত জমজমাট থাকে ইলিশের মৌসুমে। তবে অন্যান্য বছরগুলোতে ইলিশের মৌসুম ছাড়াও সাগরে কোরাল, লাক্কা, রূপচাঁদা ও লইট্টা মাছ পাওয়া যেত। বর্তমানে বলা যায়, সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ তলানিতে এসে ঠেকেছে। ফলে যারা সামুদ্রিক মাছের ব্যবসা করেন, তারা খুব কষ্টে আছেন। দোকান ভাড়া ও কর্মচারীদের বেতন দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া দেশের দক্ষিণ অঞ্চল থেকে চিংড়িসহ মিঠা পানির রুই, কাতলা, মৃগেলসহ অন্যান্য মাছ আসাও কমে গেছে। তাই মাছের দামও বাড়তি। এছাড়া পরিবহন ভাড়াও বেড়েছে। অপরদিকে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আওয়ামীপন্থী ব্যবসায়ীরা বাজার ছেড়ে চলে যান। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ফিশারিঘাটের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতেন সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী মৎসজীবী লীগ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আমিনুল হক বাবুল সরকার। সরকার পতনেরপর থেকে তিনি বাজারে আসা ছেড়ে দিয়েছেন। তার পরিবর্তে সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতি সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও উপদেষ্টা নুর হোসেন স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সাথে যোগসাজশ করে নদীর ঘাট ও বাজার পরিচালনা করছেন
জানা গেছে, নগরীর ফিশারিঘাটের ১০৩টি গদি (আড়ত) আছে। সেখানে দুই শতাধিক ব্যবসায়ী এবং পাঁচ হাজার কর্মচারী আছে। বর্তমান ব্যবসা বাণিজ্য মন্দা। তাই অনেকে কর্মচারীদের বেতন দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন।
সেলিম উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ফিশারিঘাটে সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি মিঠা পানির মাছের সরবরাহও তলানিতে ঠেকেছে। চট্টগ্রামে মিঠা পানির মাছ বিশেষ করে রুই, কাতলা, মৃগেল ও চিংড়ির মতো মাছ আসে সাতক্ষীরা থেকে। তবে সম্প্রতি মাছের সরবরাহ একেবারে কমে গেছে। যা আসছে দামও বেশি। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে কিছু পরিমাণ মাছ আসে, সেগুলো একদম নগন্য।